রোগবালাইমুক্ত, ভালো দাম এবং বাজারে ব্যাপক চাহিদার কারণে কৃষকরা ব্রকলি চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
ব্রকলি শীতকালীন সুস্বাদু সবজি। শুধু পুষ্টিগুণই নয়, পুষ্টিবিদদের মতে ডায়াবেটিস, ক্যানসার ও হার্টের রোগ প্রতিরোধে এবং উচ্চরক্তচাপ ও কোলেস্টরেল কমাতে ব্রকলি বেশ কার্যকরী সবজি।
উপজেলার রোহিতা, মশ্মিমনগর, ঝাঁপা ও চালুয়াহাটি ইউনিয়নের অনেক কৃষক এখন ব্রকলি চাষ করছেন। তারা বেশ সফলতাও পেয়েছেন।
ইউএনবির সাথে আলাপকালে তারা জানান, এক বিঘা জমিতে ব্রকলি চাষ করতে তাদের ১৫ হাজার টাকা খরচ হয় এবং প্রতি বিঘা থেকে ৩৫ হাজার টাকা লাভ করছেন তারা।
তারা জানান, শীতের এই সবজির চাহিদা অন্যান্য সবজির তুলনায় বেশি যে কারণে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও দেশের অন্যান্য অঞ্চলে এখান থেকে সরবরাহ করা হয়।
বিষমুক্ত লাভজনক সবজি উৎপাদন ও বিপণন নিয়ে কাজ করা ‘সফল’ নামে একটি বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে ২০১৬ সালে উপজেলার রোহিতা ইউনিয়নের পলাশী গ্রামে প্রথম ব্রকলির চাষ শুরু হয়।
স্থানীয় প্রদীপ বিশ্বাসসহ কয়েকজন চাষিকে প্রযুক্তি জ্ঞানসহ সার্বিক সহযোগিতা দেয় প্রতিষ্ঠানটি। প্রথম বছরে সফলতা আসে প্রদীপের।
এরপর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় তা ছড়িয়ে পড়ে। প্রদীপের দেখাদেখি ওই গ্রামের রতন বিশ্বাস, শ্রীনিবাস, স্বপন মণ্ডল, মিজানুর রহমান, আব্দুর রাজ্জাকসহ ১৬ কৃষক প্রায় ৯ বিঘা জমিতে ব্রকলি চাষ করেছেন। এদের মধ্যে মিজানুর রহমান চাষ করেছেন দুই বিঘা জমিতে।
কৃষক প্রদীপ বিশ্বাস বলেন, ‘আমি ব্রকলির চারা উৎপাদন করে স্থানীয় কৃষকদের সরবরাহ করি। পলাশী গ্রামের সব কৃষক ব্রকলি চাষে ভার্মি কম্পোস্ট (কেঁচো সার) ব্যবহার করেন। এই সবজিতে কোনো বিষ প্রয়োগের প্রয়োজন হয় না।’
গত বছর প্রথমদিকে ৭০-৮০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে ব্রকলি। এই মৌসুমে অধিক চাষ হওয়ায় শুরুতে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
সফল সংস্থার স্থানীয় ফিল্ড অর্গানাইজার আল-আমিন হোসেন বলেন, প্রথমদিকে সার্বিক সহযোগিতা দিয়ে পলাশী গ্রামের কয়েক কৃষককে ব্রকলি চাষে উদ্বুদ্ধ করা হয়। গত বছর ৫-১০ কাঠা করে কৃষকরা ব্রকলি চাষ করেছেন। এবার পলাশীসহ আশপাশের গ্রামের ১৬ কৃষক ৯ বিঘা জমিতে ব্রকলি লাগিয়েছেন।
মণিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হীরক কুমার সরকার বলেন, ব্রকলি অত্যন্ত সুস্বাদু সবজি। মানুষের দেহের উচ্চ রক্তচাপ ও কোলেস্টরেল কমাতে এবং বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক হিসেবে এই সবজি খুব কার্যকর। শীত মৌসুমে এক জমিতে এটি দুইবার চাষ করা যায় বলে তিনি জানান।