এলাকাবাসীর অভিযোগ, নির্বাচনের সময় জনপ্রতিনিধিরা বার বার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসলেও সেতু নির্মাণে কোনো উদ্যোগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
সরেজমিনে দেখা যায়, পশ্চিম কলাকোপা গ্রামে দিনামাঝির খেয়া নামক স্থানে ভুলুয়া নদীর ওপর একটি সেতুর অভাবে মানুষজন ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করছেন। প্রায় ২০০ ফুট দৈর্ঘ্যের সাঁকোটি উঁচু-নিচু অবস্থায় আছে। চলার সময় সেটি দুলতে থাকে।
স্থানীয় ভুক্তভোগী আলী আরশাদ, আব্দুল গণী, আব্দুল মতিন ও মুশাররাফ হোসেন মুশুর জানান যে বাদামতলি, বটতলি, জুগিগো সমাজ, চরকাদিরা ও চরবাদাম ইউনিয়নের ২০ হাজার লোকের যাতায়াত এ সাঁকো দিয়ে। প্রায় ৩০ বছর ধরে ভুলুয়া নদীর ওপর সেতু নেই। নদীটির ওপর নির্মিত বাঁশের সাঁকো দিয়ে গ্রামের মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।
তারা বলেন, নির্বাচন এলেই এলাকার জনপ্রতিনিধিরা এখানে সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু ভোটে পাস করার পর আর প্রতিশ্রুতির কথা মনে থাকে না।
এলাকাবাসী জানান, প্রায় ৩০ বছর ধরে স্থানীয়দের চাঁদায় নির্মিত বাঁশের সাঁকো দিয়ে নদী পারাপার হন পথচারীরা। স্থানীয় বাসিন্দাদের বটতলি, বাদামতলি, জুগিগো সমাজ, ভুলুয়া বাজার, কেরামতিয়া বাজার, জমিদারহাট, আলেকজান্ডার, রামগতি থানা, পার্শ্ববর্তী ফজুমিয়ারহাট ও হাজিরহাটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতের একমাত্র পথ এ সাঁকো।
সাঁকোটির পাশেই হাজীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চরজগবন্দু সফিগঞ্জ দাখিল মাদরাসা। এখানে পড়া শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি প্রতি সাপ্তাহের হাটবাজারে আসা যাওয়া করা এলাকাবাসী দুর্ভোগের শিকার হন। বিভিন্ন ধরনের কৃষি পণ্য যেমন ধান, গম ও সবজি নিয়ে কৃষকরা সাঁকো পার হতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়েন। যান চলাচলের ব্যবস্থা না থাকায় অসুস্থ রোগীকে জেলা শহরে নিয়ে আসতেও দুর্ভোগের শিকার হতে হয়।
স্থানীয় ভুক্তভোগী রহিমা খাতুন (৬০) বলেন, ‘আমি কোনো সময় এ সাঁকো দিয়ে হেঁটে যেতে পারি নাই। ভয়ে সব সময় বসে বসে পার হই। এক দিন সাঁকো থেকে নিচে পড়ে গিয়েছিলাম।’
শিক্ষার্থী শফিকুল ইসলাম ও মিজানুর রহমান বলেন, ‘সাঁকো পার হয়ে স্কুলে যেতে হয়। অনেক সময় আসা যাওয়ার সময় পানিতে পড়ে যাই।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুস শহীদ বলেন, ‘এ নদীর ওপর একটি সেতু খুব জরুরি। বিষয়টি নিয়ে অনেকবার সংশ্লিষ্টদের নিকট ধরনা দিয়েও কোনো লাভ হয়নি।’
চরবাদাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাখাওয়াত হোসেন জসিম বলেন, ‘ওই স্থানে সেতু না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সেতু নির্মাণের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে (এলজিইডি) আবেদন করা হয়েছে। আশা করি দ্রুতই এর একটা ফল পাওয়া যাবে।’
রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আব্দুল মোমিন বলেন, ‘বিষয়টির ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে সেতু নির্মাণের জন্য প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’