স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, বর্ষাকালে নদীতে পানি থাকলেও হেমন্তকালে নদীর পানি শুকিয়ে গেলে চলাচল করা যায়। তবে বর্ষাকালে চলাচল করা প্রায় অসম্ভব। যার ফলে চলাচলে দেখা দেয় চরম দুর্ভোগ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সেতু নির্মাণের পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দুই দিকের অ্যাপ্রোচের সামান্য মাটির কাজও করেনি।
জানা যায়, উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়ন অন্তর্গত বাদাঘাট-চানপুর সড়কে শান্তিপুর নদীর ওপর ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০১৭ সালে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের পর সেতুর দুই পাশে মাটি ভরাট করা হয়নি। আবার নির্মিত হয়নি সেতুতে ওঠা নামার সংযোগ সড়কও। তাই নদীর ওপর ঠায় দাঁড়িয়ে রয়েছে সেতুটি। আসছে না কোনো কাজেও।
আরও পড়ুন: ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে ধীরগতি, হতাশ কৃষকেরা
তাহিরপুর উপজেলা এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে এলজিইডি (সুনামগঞ্জ) হিলিপ প্রকল্প ৩২ লক্ষাধিক টাকা নির্মাণ ব্যয়ে সেতুর দরপত্র আহ্বান করে। নির্মাণ কাজের ঠিকাদারি পায় জামালগঞ্জ উপজেলার পারভেজ এন্টারপ্রাইজ।
জানা যায়, উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের বাদাঘাট-চানপুর সড়কটি দিয়ে উপজেলার উত্তর শ্রীপুর, দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়নের ৩০ গ্রামের শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ চলাচল করে। কিন্তু এই সড়কের শান্তিপুর নদীতে সেতুতে উঠার জন্য দু’দিকে অ্যাপ্রোচে মাটি নেই।
সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য ২০১৭ সালে কর্মসংস্থান কর্মসূচি প্রকল্প থেকে উত্তর বড়দল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেন। শান্তিপুর বাজারের উত্তর পাশ হতে সেতু পর্যন্ত সংযোগ সড়ক প্রকল্পে ইউপি সদস্য আবু তাহের মিয়াকে প্রকল্প প্রধান করা হয়। আবু তাহের প্রকল্পে শান্তিপুর বাজার হতে কাজ শুরু করে সেতুর উত্তর পাশে দুই শতাধিক ফুট দূর পর্যন্ত মাটির কাজ করান। অবশিষ্ট সংযোগ সড়কটি অসম্পূর্ণ রেখে দেয়া হয়। ফলে ২০১৮ সালে বর্ষায় সেই মাটিও সরে যায়।
স্থানীয় মাসুক মিয়া জানান, নির্মাণের পর সেতুটি ব্যবহার উপযোগী করতে প্রয়োজনীয় কোনো পদক্ষেপ নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। সর্বসাধারণের জন্য সেতুটি চলাচলের উপযোগী করতে হলে প্রটেকশন ওয়াল দিয়ে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করতে হবে। আর সেতুর সাথে সংযোগ সড়ক হলে এলাকার অনেক বেকার যুবকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হত।
চানপুর গ্রামের বাসিন্দা মজিদ বলেন, ‘সংযোগ সড়কটি স্থাপন করে সেতুটি চলাচলের উপযোগী করা হলে আমরা সহজেই চানপুর-বাদাঘাট সড়ক ব্যবহার করে তাহিরপুর সদরে যাতায়াত করতে পারতাম। জনদুর্ভোগ কমে আসত।’
আরও পড়ুন: খুলনাঞ্চলে হিমায়িত চিংড়ির আন্তর্জাতিক বাজার পরিধি কমছে
পঞ্চগড়সহ উত্তরাঞ্চলের ৫ জেলায় চা উৎপাদন শুরু
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, ‘জনদুর্ভোগ লাঘবে এই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলব।’
তাহিরপুর উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) ইকবাল কবির বলেন, ‘আমি একবারেই নতুন, তাই এই সেতুটির বিষয়ে আমি অবগত নই। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’