ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে আতঙ্কের মাঝে বিশ্বব্যাপী একদিনে আরও সাড়ে ছয় লাখের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। একই সময়ে মৃত্যু হয়েছে সাড়ে আট হাজারের বেশি মানুষের।
বুধবার সকাল ১০টার দিকে যুক্তরাষ্ট্রের জনস্ হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় বিশ্বে ছয় লাখ ৮৬ হাজার ২৬৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে মোট সংক্রমণের সংখ্যা ২৬ কোটি ৭০ লাখ ৮৭ হাজার ২৫৯ জনে দাঁড়িয়েছে। একই সময়ে ভাইরাসে মারা গেছেন আট হাজার ৪২৪ জন। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা ৫২ লাখ ৭০ হাজার ৫৫৮ জনে দাঁড়িয়েছে।
করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ আমেরিকায় এখন পর্যন্ত মোট শনাক্তের সংখ্যা চার কোটি ৯৩ লাখ ৮০ হাজার ৭৯১ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন সাত লাখ ৯১ হাজার ৫১৪ জন।
দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ছয় লাখ ১৬ হাজার ১৮ জনে। দেশটিতে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে দুই কোটি ২১ লাখ ৫৭ হাজার ৭২৬ জন। মৃত্যুর দিক দিয়ে দেশটির অবস্থান দ্বিতীয়।
বাংলাদেশের প্রতিবেশি দেশ ভারতে মোট তিন কোটি ৪৬ লাখ ৪৮ হাজার ৩৮৩ জনের সংক্রমণ চিহ্নিত হয়েছে। একই সময়ে মৃত্যু সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে চার লাখ ৭৩ হাজার ৭৫৭ জনে।
আরও পড়ুন: করোনা: জনস্বাস্থ্য ও পুষ্টির ওপর প্রভাব মোকাবিলায় শেখ হাসিনার ৫ প্রস্তাব
বাংলাদেশ পরিস্থিতি
মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, দেশে মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময় শনাক্ত হয়েছে আরও ২৯১ জন। এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ হাজার ১০ জনে। মোট শনাক্তের সংখ্যা ১৫ লাখ ৭৮ হাজার ১১ জনে পৌঁছেছে।
এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ২০ হাজার ১৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। শনাক্তের হার এক দশমিক ৪৫ শতাংশ। মোট পরীক্ষায় এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৪ দশমিক ৩২ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মোট মৃত্যুর হার এক দশমিক ৭৮ শতাংশ।
এদিকে ২৪ ঘণ্টায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন আরও ৩০৮ জন। এ নিয়ে দেশে মোট সুস্থ ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ৪২ হাজার ৯০৮ জনে। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ।
আরও পড়ুন: পরের মহামারি আরও খারাপ হতে পারে: সারাহ গিলবার্ট
জনস্বাস্থ্য ও পুষ্টির ওপর প্রভাব মোকাবিলায় শেখ হাসিনার ৫ প্রস্তাব
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনাভাইরাসের ফলে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ এবং জনস্বাস্থ্য ও পুষ্টির ওপর এর প্রভাব মোকাবিলায় সম্মিলিতভাবে জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার ওপর জোর দিয়েছেন।
মঙ্গলবার জাপানের নিউট্রিশন ফর গ্রোথ সামিটে এক ভার্চুয়াল ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, চলমান করোনা মহামারি আমাদের পুষ্টি কার্যক্রমগুলোতে একটি জোর ধাক্কা দিয়েছে। এই মুহূর্তে করোনার ফলে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ এবং ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা প্রয়োজন।
ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার জন্য স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিত করতে শেখ হাসিনা বিশ্বের সামনে পাঁচটি প্রস্তাব রাখেন।
আরও পড়ুন: ডেল্টার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ওমিক্রন প্রতিরোধ করতে হবে: ডব্লিউএইচও
প্রধানমন্ত্রী তার প্রথম প্রস্তাবে বলেছেন, করোনাভাইরাস মহামারির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
তার দ্বিতীয় প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী উচ্চ ফলনশীল পুষ্টিকর খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য গবেষণায় সহযোগিতা বাড়ানোর আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী তার তৃতীয় প্রস্তাবে দুর্যোগের সময় সুরক্ষিত ও নিরাপদ থাকার জন্য আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পর্যায়ে খাদ্য ব্যাংক গড়ে তোলার কথা বলেছেন।
তার চতুর্থ প্রস্তাবে শেখ হাসিনা খাদ্যে পুষ্টি উপাদান বৃদ্ধির জন্য সর্বোত্তম অনুশীলন এবং দক্ষতা বিনিময়ের গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
পরিশেষে তিনি উন্নয়নশীল বিশ্বে খাদ্য উৎপাদনকে বাধাগ্রস্তকারী জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট চরম পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে, প্রতিশ্রুতিবদ্ধ জলবায়ু অভিযোজন তহবিল বিতরণ করতে উন্নত দেশগুলোকে আহ্বান জানান।