জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আগামী কয়েক দশকে এশিয়ার লাখ লাখ মানুষ বাস্তুহারা হয়ে পড়বে। এর ফলে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত নিমজ্জিত হয়ে যাওয়া শহরগুলোর মধ্যে ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা অন্যতম। খুব দ্রুতই জলবায়ু পরিবর্তন শহরটির বিভিন্ন অংশকে বসবাসের অযোগ্য করে তুলছে। জাভা সাগরের পানির উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে আশঙ্কা করা হচ্ছে, আগামী এক দশকে শহরটির আনুমানিক এক-তৃতীয়াংশ নিমজ্জিত হয়ে যাবে।
ইন্দোনেশিয়া সরকার রাজধানী এক হাজার ২৪০ মাইল (২০০০ কিলোমিটার) উত্তর-পূর্বের বোর্নিও দ্বীপে সরানোর পরিকল্পনা করছে। এজন্য কমপক্ষে ১৫ লাখ বেসামরিক কর্মচারীকে দ্বীপটিতে স্থানান্তর করা হচ্ছে।
এটি একটি বিশাল উদ্যোগ, তবে এটি মূলত ইন্দোনেশিয়ার জনগণের গণআন্দোলনের ফল। আগামী দিনগুলোতে এশিয়ার অন্যান্য দেশেও এ ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সোমবার প্রকাশিত জাতিসংঘের একটি আন্তঃসরকারি প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জ রিপোর্ট অনুসারে, সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, খরা, অধিক তাপমাত্রা এবং অন্যান্য জলবায়ু বিপর্যয়ের কারণে আগামী ৩০ বছরে ১৪৩ মিলিয়ন মানুষ বাস্তুহারা হয়ে পড়বে।
এশিয়ায় বিভিন্ন দেশের সরকারকে ইতোমধ্যে এটি সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের প্রতি তিনজনের মধ্যে একজন অভিবাসী এশিয়া থেকে এসেছে। চরম আবহাওয়া, ঝড় ও বন্যার কারণে বাস্তুচ্যুত হওয়ার সংখ্যার দিক থেকে এশিয়ার অবস্থান সবার ওপরে। একে একে গ্রামগুলি খালি হয়ে যাওয়া ও জাকার্তার মতো মেগাসিটিগুলি ঝুঁকির মধ্যে থাকায় বিজ্ঞানীরা অভিবাসন বৃদ্ধির ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় ৪০ মিলিয়ন মানুষ আগামী ৩০ বছরের মধ্যে পানির অভাব, ফসল বিনষ্ট, ঝড়বৃষ্টি এবং অন্যান্য বিপর্যয়ের কারণে স্থানান্তরে বাধ্য হতে পারে।
স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞানী ক্রিস ফিল্ড বলেছেন, ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা বৃদ্ধি উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, পৃথিবীতে বর্তমানে অল্প কিছু স্থান রয়েছে যেগুলো বসবাসের জন্য অধিক উষ্ণ। তবে এশিয়ায় এরকম স্থানের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে, ভবিষ্যতে এর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এর পরিণতি ও প্রভাব সম্পর্কে আমাদের কঠোরভাবে ভাবতে হবে।