কুয়েতের শাসক আমির শেখ নওয়াফ আল আহমদ আল সাবাহ (৮৬) মারা গেছেন।
শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) কুয়েতের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে তার মৃত্যুর সংবাদ ঘোষণা করা হয়েছে।
মৃত্যুর খবর জানিয়ে তার আমিরি আদালতের মন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল সাবাহ একটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতি পাঠ করেন।
এতে বলা হয়, ‘খুব শোক ও দুঃখের সঙ্গে আমরা কুয়েতের জনগণ, আরব ও ইসলামিক দেশগুলো এবং বিশ্বের বন্ধুত্বপূর্ণ জনগণকে জানাচ্ছি, আজ মহামান্য আমির শেখ নওয়াফ আল আহমদ আল জাবের আল সাবাহ আল্লাহর কাছে চলে গেছেন। তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছি।’
তবে কর্তৃপক্ষ মৃত্যুর কোনো কারণ জানায়নি।
শেখ নওয়াফের সৎ ভাই শেখ মেশাল আল আহমাদ আল জাবের (৮৩) এখন বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক যুবরাজ।
তিনি কুয়েতের শাসক হিসেবে দায়িত্ব নিবেন।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ২২ পুলিশ সদস্য নিহত, আহত ৩২
নভেম্বরের শেষ দিকে শেখ নওয়াফকে অজ্ঞাত অসুস্থতার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
তখন থেকেই ক্ষুদ্র তেল সমৃদ্ধ দেশটির জনগণ তার সুস্থতার সংবাদের অপেক্ষায় ছিল।
রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের তথ্যমতে, তিনি ২০২১ সালের মার্চ মাসে শারিরীক পরীক্ষার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন।
২০২০ সালে তার পূর্বসূরি প্রয়াত শেখ সাবাহ আল আহমদ আল সাবাহের মৃত্যুর পরে আমির হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন শেখ নওয়াফ।
কূটনীতি ও শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য পরিচিত শেখ সাবাহের মৃত্যুতে সমগ্র অঞ্চল শোক পালন করছে।
শেখ নওয়াফ এর আগে কুয়েতের স্বরাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
২০২১ সালে শেখ নওয়াফ একটি সাধারণ ক্ষমা ডিক্রি জারি করে প্রায় অর্ধশতাধিক কুয়েতি ভিন্নমতাবলম্বীর শাস্তি ক্ষমা এবং হ্রাস করে একটি বড় সরকারি অচলাবস্থাকে প্রশমিত করেন।
রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনের লক্ষ্যে তিনি তার অসুস্থতার ঠিক আগে আরেকটি নির্দেশ জারি করেছিলেন।
যার ফলে তার শাসনামলে কুয়েতে তিনটি পৃথক সংসদীয় নির্বাচন হয়েছে।
আরও পড়ুন: ফিলিপাইনে যাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে নিহত ২৯
কুয়েতকে উপসাগরীয় মুক্ত সংসদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যা তুলনামূলকভাবে ভিন্নমতের অনুমতি দেয়।
এছাড়া, তার শাসনকালে কাতার, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের রাষ্ট্রগুলো দোহাকে বয়কটের কয়েক বছর পর সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করেছে, আঞ্চলিক উত্তেজনা কমেছে এবং শেখ নওয়াফ অভ্যন্তরীণ সঙ্কট সমাধানে মনোযোগ দিয়েছে।
কুয়েতে প্রায় ৪ দশমিক ২ মিলিয়ন মানুষের বসবাস, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির চেয়ে সামান্য ছোট এবং বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম তেলের মজুদ রয়েছে এখানে।
১৯৯১ সালের উপসাগরীয় যুদ্ধের পর থেকেই কুয়েত কট্টর মার্কিন মিত্রদেশ।
কুয়েতে প্রায় ১৩ হাজার ৫০০ জন আমেরিকান সৈন্য রয়েছে। সেইসঙ্গে দেশটিতে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সেনাবাহিনীর ফরোয়ার্ড সদর দপ্তর।