হামাসের কাছে জিম্মি চার ইসরায়েলিকে মুক্ত করতে সম্প্রতি গাজার নুসেইরাতে প্রাণঘাতী অভিযান চালায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। শরণার্থী শিবিরে জিম্মিদের আটকে রাখা ও সেখানে হামলা চালানোর অভিযোগে ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ও ইসরায়েলি বাহিনী, দুই পক্ষই যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত হতে পারে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর।
শনিবার (৮ জুন) নুসেইরাতের শরণার্থী শিবিরের একটি ভবনে চার জিম্মিকে আটকে রাখার খবরে ব্যাপক সহিংসতা চালায় ইসরায়েল। তাদের বিমান ও স্থল অভিযানে নারী ও শিশুসহ অন্তত ২৭৪ জন ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে হামাস পরিচালিত ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।
এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের মুখপাত্র জেরেমি লরেন্স।
আরও পড়ুন: পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘর্ষ, হামাস কমান্ডার নিহত
জেনেভায় জাতিসংঘের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় জিম্মিদের আটকে রাখার মাধ্যমে আশপাশের বেসামরিক নাগরিক ও জিম্মিদের ‘বাড়তি ঝুঁকিতে’ ফেলছে ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী (হামাস)।
উভয় পক্ষের এসব কর্মকাণ্ড যুদ্ধাপরাধের শামিল হতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর আট মাসের বেশি সময় ধরে টানা আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরায়েল। বেসামরিক মানুষের মাঝে এমন সামরিক আগ্রাসন ও এতে বিপুল সংখ্যক মানুষের প্রাণহানির বিষয়টি উল্লেখ করে লরেন্স বিষয়টিকে ‘বিপর্যয়কর’ বলে অ্যাখ্যায়িত করেন।
জিম্মি ও তাদের পরিবারগুলো যে ‘অগ্নিপরীক্ষার’ মুখোমুখি হয়েছে, সে বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, চারজন জিম্মি মুক্তি পেয়েছে, এটা নিঃসন্দেহে খুব ভালো খবর। তবে এদের (জিম্মি) ধরে নিয়ে যাওয়া একেবারেই উচিৎ হয়নি। এটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের লঙ্ঘন। যত শিগগির সম্ভব হয়, বাকিদেরও মুক্তি দিতে হবে।
গত আট মাসে ইসরায়েলি হামলায় ৩৬ হাজার ৭৩০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। যুদ্ধের মধ্যে সব সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ায় খাদ্য, ওষুধ এবং অন্যান্য মৌলিক সামগ্রী গাজায় প্রবেশ করতে পারছে না। দীর্ঘদিন ধরে এমন অচলাবস্থা থাকায় উপত্যকায় দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে।
জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, জুলাইয়ের মধ্যে গাজার অন্তত ১০ লাখ মানুষ তীব্র খাবার সংকটের মুখোমুখি হবে।
আরও পড়ুন: ইসরায়েল-হামাসের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব ঝুলে যাওয়ায় আবারও মধ্যপ্রাচ্য সফরে ব্লিঙ্কেন