গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় নিজের দেশেই চাপের মুখে পড়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। একদিকে ইসরায়েলের জগণের দাবি, সরকার যেন বাইডেনের প্রস্তাব মেনে নেয়, অন্যদিকে এ দাবি মানলে সরকার পতনের হুমকি দিয়েছেন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের ডানপন্থী নেতারা।
শনিবার (১ জুন) বাইডেনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে নেতানিয়াহু বলেন, নিজেদের দীর্ঘমেয়াদী শর্তগুলো পূরণ হওয়ার আগেই ইসরায়েল স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে রাজি হবে- এমন ভাবার কোনো সুযোগ নেই।
প্রধানমন্ত্রীর এমন বিবৃতির পর শনিবার রাতেই হামাসের হাতে জিম্মিদের পরিবারগুলোর নেতৃত্বে ইসরায়েলের রাস্তায় বিশাল একটি বিক্ষোভ মিছিল নামে। বিক্ষোভে তারা সরকারকে বাইডেনের দাবি মেনে নিয়ে জিম্মিদের অবিলম্বে মুক্ত করার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: রাফায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় ৩৭ ফিলিস্তিনি নিহত
হামাস ও ইসরায়েল দুই পক্ষকেই চাপ দিয়ে যুদ্ধবিরতির আলোচনায় মধ্যস্থতাকারী যুক্তরাষ্ট্র, মিশর ও কাতার বলেছে, প্রস্তাবিত চুক্তিটি ‘স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও সংকট অবসানের জন্য একটি রোডম্যাপ প্রণয়ন করে।’ এটি ইসরায়েলি জিম্মি ও গাজার বাসিন্দা উভয় পক্ষকেই দুর্ভোগ থেকে রেহাই দেবে।
তবে সরকারের প্রাথমিক সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়ে তা পরিবর্তন না করতে রীতিমতো হুমকি দিয়েছেন ইসরায়েল সরকারের কট্টর ডানপন্থী অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মটরিচ ও জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-জিভিয়ার। তারা বলেছেন, বাইডেনের ওই দাবি মেনে নিলে জোট সরকার ভেঙে দেওয়া হবে।
এই পরিস্থিতিতে নির্বাচনের আগে উভয়সংকটে পড়েছেন নেতানিয়াহু। (গাজা) যুদ্ধের ব্যাপারে নেতানিয়াহুর সিদ্ধান্ত পরিবর্তন ভোটের আগে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তার ব্যর্থতা হিসেবে উপস্থাপিত হতে পারে। আর তিনি যদি ভোটে হেরে প্রধানমন্ত্রীর পদচ্যূত হন, তাহলে দুর্নীতের অভিযোগে এ বিষয়ে দীর্ঘমেয়াদী বিচারের সম্মুখীন হতে পারেন।
শনিবার বাইডেনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহু বলেন, ‘যুদ্ধের অবসানের জন্য ইসরায়েলের শর্তগুলোতে পরিবর্তন আসেনি। হামাসের সামরিক ও শাসন ক্ষমতা ধ্বংস করা, সকল জিম্মির মুক্তি এবং গাজা ইসরায়েলের জন্য আর যাতে হুমকি না হয়ে ওঠে, তা নিশ্চিত করার আগ পর্যন্ত যুদ্ধ চলবে।’
আরও পড়ুন: আমাদের কিছুই নেই: হামলায় খাদ্যের সন্ধানে থাকা ফিলিস্তিনিরা
তিনি বলেন, স্থায়ী যুদ্ধবিরতির আগে এই শর্তগুলো পূরণে জোর দেয়া অব্যাহত রাখবে ইসরায়েল। শর্তগুলো পূরণ হওয়ার আগেই ইসরায়েল স্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে রাজি হবে- এমন ভাবার কোনো সুযোগ নেই।
এর আগে, শুক্রবার ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তির বিনিময়ে গাজায় তিন ধাপের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব উপস্থাপন করেন বাইডেন। এ প্রস্তাবে প্রাথমিকভাবে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে গাজার সশস্ত্র শাসক গোষ্ঠী হামাস।