যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে ৯/১১ -এর ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ২১ বছরপূর্তিতে নিহতদের স্মরণে ও স্বেচ্ছাসেবীদের অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে নীরবতা পালন করেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকেরা।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর বিমান ছিনতাই করে নিউইয়র্কের বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রে (টুইন টাওয়ার) হামলা করেছিল আল-কায়েদার সন্ত্রাসীরা। এ হামলায় হতাহতদের স্বজনের ও শুভাকাঙক্ষীরা রবিবার পেনিনসিলভানিয়ার পেন্টাগন মাঠে এই আয়োজন করে।
দেশের অন্যান্য স্থানেও দিনটি স্মরণে মোববাতি প্রজ্বলন, ধর্মীয় আচার ও স্মৃতিচারণ করা হয়। দেশপ্রেম দিবস, জাতীয় সেবা ও স্মরণ দিবস হিসেবে অন্য আমরিকানরা স্বেচ্ছাসেবী এই কর্মসূচিতে যোগ দেবে।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র সফরে সফরসঙ্গী দলে থাকছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
গত বছর ভয়াবহ এ হামলার ২০তম বার্ষিকী পালন করা হয়। ভয়াবহ সেই হামলায় কমপক্ষে তিন হাজার মানুষ প্রাণ হারান। এই ঘটনা বিশ্বব্যাপী ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে’ মার্কিন যুদ্ধকে উদ্বুদ্ধ করেছিল এবং দেশটি তার জাতীয় নিরাপত্তা নীতি পুনরায় নির্ধারণ করে। এই ঘটনায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।কেননা টুইন টাওয়া ছিল আমেরিকানদের জাতীয় গর্ব ও ঐক্যের প্রতীক।
এ হামলার জেরে বছরের পর বছর ধরে মুসলিমদের প্রতি আমেরিকানদের সন্দেহ করার মানসিকতা এবং নিরাপত্তা ও নাগরিক স্বাধীনতার মধ্যে ভারসাম্য নিয়ে বিতর্কের জন্ম হয়। আমেরিকান রাজনীতি ও জীবনাচারের মধ্য দিয়ে আজ অবধি সূক্ষ্ম ও জটিল উপায়ে ৯/১১-এর পরের ঘটনা বিতর্কের সৃষ্টি করছে।
এ হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া কয়েক হাজার মানুষ তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। এছাড়া এ হামলায় প্রিয়জন,বন্ধু ও সহকর্মীদের হারানোদের জীবনে একটি বিরাট প্রভাব ফেলেছে।
টুইন টাওয়ারের উত্তর টাওয়ারের ওপরে অবস্থিত রেস্তোরাঁটি উইন্ডোজ অন দ্য ওয়ার্ল্ডে সেকো সিবির ৭০ জনেরও বেশি সহকর্মী মারা গেছেন। সিবির সেদিন সকালের শিফটে কাজ করার কথা ছিল। সিবি আর কোনদিন রেস্টুরেন্টের চাকরি নেয়নি; কেননা এতে তার অনেক বেদনাদায়ক স্মৃতি মনে পড়বে।
বর্তমানে রক ইউনাইটেডের প্রেসিডেন্ট ও সিইও সিবি বলেছেন, ‘৯/১১ এর প্রত্যেকটি দিন আমাকে মনে করিয়ে দেয় আমি কি হারিয়েছি, যা কখনই আর ফিরে পাবো না।’
রবিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পেন্টাগনে বক্তব্য ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন এবং ফার্স্টলেডি জিল বাইডেন পেনসিলভানিয়ার শ্যাঙ্কসভিলে বক্তব্য দেয়ার কথা আছে। যেখানে বিমানের যাত্রী ও ক্রুরা ককপিটে বাধা দেয়ার চেষ্টার পরে ছিনতাইকারীরা হাইজ্যাক করা বিমানগুলোর একটি নিয়ে ওয়াশিংটনের দিকে রওনা হয়।
ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ও তার স্বামী ডগ এমহফ নিউইয়র্কে ১১ সেপ্টেম্বর জাতীয় স্মৃতিসৌধে উপস্থিত থাকবেন। তবে ঐতিহ্য অনুসারে গ্রাউন্ড জিরো অনুষ্ঠানে কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বক্তৃতা করবেন না। এটি ক্ষতিগ্রস্তদের আত্মীয়দের জন্য মৃতদের নাম উচ্চস্বরে পড়ার স্থান।
আরও পড়ুন:৯/১১-এর সন্ত্রাসী হামলার স্মরণে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসে পতাকা অর্ধনমিত