বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিতব্য দাতা সম্মেলনে যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ পেয়েছে দেশটি।
রোহিঙ্গা শরণার্থী ও আশ্রয়দাতা দেশগুলোর সহায়তার জন্য আগামী ২২ অক্টোবর এ দাতা সম্মেলনের আয়োজন করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য ও জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর)।
ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, ‘আমরা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বাস্তুচ্যুতদের শিগগিরই, নিরাপদ এবং স্থায়ী প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করার বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
তিনি বলেন, এ বিষয়ে তারা বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উভয়দেশের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি সম্প্রতি বলেছেন, রাখাইন রাজ্য থেকে বাস্তুচ্যুতদের বিষয়ে তাদের অবস্থান খুব স্পষ্ট এবং বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উভয়ের প্রতিবেশী দেশের এ ইস্যুতে সর্বোচ্চ অবস্থানে থাকবে ভারত।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের ৬ষ্ঠ যৌথ পরামর্শক কমিশনের (জেসিসি) বৈঠকে বাংলাদেশ আশাবাদ ব্যক্ত করেছিল যে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য হিসেবে রোহিঙ্গা সঙ্কট স্থায়ীভাবে সমাধানে নিরাপদে ও স্থায়ীভাবে শিগগিরই তাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের বিষয়ে আরও অর্থবহ ভূমিকা পালন করবে ভারত।
এক যৌথ সংবাদ বিবৃতিতে জানানো হয়, সম্মেলনটি যৌথ আয়োজকদের পক্ষে এটি পুনরাবৃত্তি করার একটি সুযোগ যে এ সংকটের যেকোনো স্থায়ী সমাধানে অবশ্যই রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং অন্যান্য বাস্তুচ্যুত মানুষদের তাদের নিজ দেশ বা তাদের পছন্দসই জায়গায় স্বেচ্ছায়, নিরাপদে, মর্যাদাপূর্ণ এবং স্থায়ী প্রত্যাবর্তন অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ভার্চুয়াল সম্মেলনে যৌথ আয়োজকরা রোহিঙ্গা শরণার্থী, আশ্রয়দাতা স্থানীয় সম্প্রদায় এবং মিয়ানমারে অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত মানুষদের সহায়তা করার জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল সরবরাহ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাবে।
জাতিসংঘ চলতি বছর বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মানবিক চাহিদা মেটাতে এক বিলিয়ন ডলারেরও বেশি সাহায্যের আবেদন করলেও, এখন পর্যন্ত এর অর্ধেকেরও কম অর্জিত হয়েছে।
এর আগে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব বলেন, রোহিঙ্গা জনগণ ভয়াবহ বর্বরতার মুখোমুখি হয়েছে এবং কল্পনাতীত কলুষিত এক পরিস্থিতির মুখে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছিল।
২০১৭ সাল থেকে রোহিঙ্গাদের মানবিক দুর্দশা নিরসনের জন্য যুক্তরাজ্যও শীর্ষস্থানীয় দাতা হিসেবে ভূমিকা রাখছে।
২০১৮ সালের নভেম্বরে ও ২০১৯ সালের আগস্টে দুই দফায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।
এর আগে ২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর প্রত্যাবাসন চুক্তিতে স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার।
২০১৮ সালের ১৬ জানুয়ারি ‘বাস্তবিক ব্যবস্থা’ সম্পর্কিত এক নথিতে স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ এবং মিয়ানমার, যার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের তাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেয়া হবে বলে মনে করা হয়েছিল।