তৈরি পোশাক শিল্প বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্পখাত উল্লেখ করে শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী লকডাউনের প্রথম পর্যায়ে এ খাতে রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হলেও চলতি বছরে জুলাই থেকে এটি আবার সচল হতে শুরু করেছে। ১ থেকে ২২ আগস্টের মধ্যে বাংলাদেশ ২.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪৫.৮ শতাংশ বেশি।’
শিল্পমন্ত্রী শনিবার বৈশ্বিক উৎপাদন এবং শিল্পায়ন সম্মেলনের অংশ হিসেবে ‘নীতিনির্ধারকদের চ্যালেঞ্জ: মন্দার মধ্য দিয়ে যাত্রা’ শীর্ষক উচ্চপর্যায়ের অধিবেশনে ভার্চ্যুয়ালি আলোচক হিসেবে অংশ নিয়ে এ কথা জানান।
কোভিড-১৯ উত্তরণে উৎপাদনশীল শিল্পখাতে ভ্যালু চেইনের উন্নয়নে বিশ্ব সম্প্রদায়ের করণীয় নির্ধারণের লক্ষ্যে জাতিসংঘ শিল্প উন্নয়ন সংস্থা (ইউনিডো) এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের জ্বালানি ও শিল্প মন্ত্রণালয় যৌথভাবে এ সম্মেলনের আয়োজন করে।
অধিবেশনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সৌদি আরবের শিল্প ও খনিজ সম্পদমন্ত্রী বান্দার বিন ইব্রাহীম আল-খোরায়েফ। রাশিয়ার সলকোবো ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আরকাদি দোভোরোভিচ, ইন্দোনেশিয়ার সমুদ্র সম্পদ ও বিনিয়োগ বিষয়কমন্ত্রী জেনারেল (অব.) লুহুত বিনসার পাণ্ডজায়ান এবং রুয়ান্ডার বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী সোরায়া হাকুজিয়েরেমি আলোচনায় অংশ নেন।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, করোনা মহামারির ফলে বৈশ্বিক সাপ্লাই চেইন ও উৎপাদনশীল শিল্পখাত মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এমএসএমইখাতের সুরক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়োপযোগী সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশ করোনার নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় শুরু থেকেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিল্প উৎপাদন চালু ও নিরবচ্ছিন্ন সাপ্লাই চেইন অব্যাহত রাখার কৌশল গ্রহণ করেছে। এর ফলে দেশীয় উৎপাদনমুখী শিল্পখাত ক্রমেই ঘুরে দাঁড়াচ্ছে।
আগামী ৬ মাসের পর থেকে বাংলাদেশ করোনার ক্ষতি পুষিয়ে ওঠতে সক্ষম হবে বলে সম্প্রতি ইউনিডো পরিচালিত সমীক্ষার সাথে একমত পোষণ করেন তিনি।
প্রতিবছর ২০ লাখ মানুষ বাংলাদেশের কর্মবাজারে প্রবেশ করছে জানিয়ে শিল্পমন্ত্রী বলেন, শিল্প বিপ্লবের ফলে উৎপাদনমুখী শিল্প কারখানায় ডিজিটাল টেকনোলজি ব্যবহারের বিশাল সুযোগ তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশে এ খাতে কয়েকটি পাইলট উদ্যোগ ইতোমধ্যে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে। ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্পখাত শ্রমঘন হওয়ায় বাংলাদেশের মত জনবহুল দেশে ডিজিটাল প্রযুক্তিনির্ভর ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্পখাত করোনা পরবর্তীতে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র্য বিমোচনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
উন্নত ও উন্নয়নশীল নির্বিশেষে বিশ্বের সকল রাষ্ট্রে উৎপাদনমুখী শিল্পখাতের বিকাশে গবেষণা ও উন্নয়ন (আরঅ্যান্ডডি) সহায়তা জোরদার, হাইটেক সার্ভিস সহজলভ্যকরণ এবং অদক্ষ ও আধাদক্ষ জনগোষ্ঠির জন্য উচ্চমানের দক্ষতা সম্পন্ন টাস্কফোর্স গঠনের ওপর গুরুত্ব দেন মন্ত্রী।