করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে দেশব্যাপী সাতদিনের লকডাউনের খবরে রাজধানীর বাজারগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আগামী সোমবার থেকে সারা দেশে এক সপ্তাহের জন্য লকডাউন ঘোষণা করতে যাচ্ছে সরকার।
শনিবার ক্ষমতসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের তার সরকারি বাসভবনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
তবে এক ভিডিও বার্তায় জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, দুই-তিন দিনের মধ্যেই দেশব্যাপী সাত দিনের লকডাউন শুরু হবে।
তিনি বলেন, ‘জরুরি সেবা দেয়া প্রতিষ্ঠান ছাড়া সব ধরনের সরকারি বেসরকারি-প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিল্পকারখানা খোলা থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘লকডাউনের মধ্যে শিল্পকারখানা খোলা থাকবে, সেখানে একাধিক শিফট করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শ্রমিকরা যাতে কাজ করেন তা নিশ্চিত করতে হবে।’
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী- মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু বেড়েছে। তবে কমেছে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা।
শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৫৮ জন। এ নিয়ে মোট মারা গেলেন ৯ হাজার ২১৩ জন।
এছাড়া ২৪ ঘণ্টায় আরও ৫ হাজার ৬৮৩ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছয় লাখ ৩০ হাজার ২৭৭ জনে পৌঁছেছে।
ক্রেতারা বলেছেন, তারা লকডাউন এবং রমজান মাসে খাদ্য সংকটের কথা মাথায় রেখে বাড়তি পণ্য কিনছেন।
বনশ্রী এলাকার বাসিন্দা কবীর হোসেন ইউএনবিকে বলেন, ‘করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ফের লকডাউন শুরু হচ্ছে। বাজারে প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম আরও বাড়তে পারে। এজন্য আমি আজ বিভিন্ন ধরনের পণ্য কিনেছি।’
তিনি জানান, এক দিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি সবজির দাম ৫-১০ টাকা, মোটা চাল এবং ভোজ্যতেল এক থেকে ২ টাকা বেড়েছে।
‘আজ আমি পাঁচ লিটার বোতলজাত সয়াবিন কিনলাম ৬৫০ টাকায়। এ ছাড়া পটল, ঢেঁড়স এবং বেগুন কেজি প্রতি ৬০ টাকা দামে কিনেছি, যা ৫-১০ টাকা বেড়েছে,’ বলেন তিনি।
কবীর সরকারি সংস্থাগুলোকে যথাযথভাবে বাজার মনিটরিংয়ের অনুরোধ জানান, যাতে সরকার প্রদত্ত তালিকার বাইরে ব্যবসায়ীরা পণ্য বিক্রি করতে না পারে।
বিক্রেতারা জানান, চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সবজি, চাল এবং ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে।
মেরাদিয়া কাঁচাবাজারের দোকানদার সৈকত আলী জানান, লকডাউন ঘোষণার পর শনিবার গ্রাহকদের ভিড় বেড়েছে।
তিনি বলেন, ‘আজ আমরা প্রতি কেজি মোটা চাল ৪৫-৫০ টাকায় এবং চিকন চাল ৫৮-৬৫ টাকায় বিক্রি করছি। এছাড়া খোলা সয়াবিন ১১০ টাকায় এবং পাম তেল ১১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছি। সরবরাহ কম থাকার কারণে দাম কিছুটা বেড়েছে।’
রাষ্ট্র পরিচালিত সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, মোটা চালের দাম এক সপ্তাহের ব্যবধানে ২.২০ শতাংশ এবং পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিনের দাম ০.৭৯ শতাংশ বেড়েছে।
এদিকে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ১০ টাকা করে কমেছে। যা আগের সপ্তাহে ১৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। তবে আগের মাসে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১২০-১৩০ টাকা কেজি দরে।