অর্থ মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও এফবিসিসিআই সভাপতির কাছে দেয়া এক চিঠিতে এ দাবি জানান বাংলাদেশ লোকাল কার্টন ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএলসিএমএ) সভাপতি এমএ বাসার পাটওয়ারী।
একই দাবি জানিয়েছে আরও পাঁচ সংগঠন- বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতি, দ্য বাংলাদেশ পেপার মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ পেপার ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ পাঠ্যপুস্তক মুদ্রক ও বিপণন সমিতি এবং চট্টগ্রাম কাগজ ও সেলোফিন ব্যবসায়ী গ্রুপ।
বিএলসিএমএ জানায়, দেশের স্থানীয় কার্টন উৎপাদন শিল্পের আওতাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প এবং শ্রমঘন প্রতিষ্ঠান। এ শিল্পে প্রায় ২০ লাখ মানুষ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এ রকম একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্পের জন্য বরাবরই সরকার কর্তৃক প্রণীত আইনগুলো বৈরী অবস্থা সৃষ্টি করে আসছে। অবশ্য ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের প্রতি সরকারের যথেষ্ট গুরুত্ব আছে।
সংগঠনটির মতে, দেশে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত প্যাকেজিং কাঁচামাল আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন না হওয়ায় তাদের পেপার অ্যান্ড পেপার বোর্ড, লাইনার ও মিডিয়াম পেপার আমদানি করতে হয় এবং এ জন্য শুল্ক দিতে হয়, যা তাদের বাজারে প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে পণ্য উৎপাদন বাধাগ্রস্ত করছে। পক্ষান্তরে তাদের বন্ডেড সুবিধা না থাকলেও প্রতিযোগিতামূলক বাজারে আন্তর্জাতিক মানের কাগজ ব্যবহার করে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত রপ্তানি পণ্যের কার্টন ও মোড়ক উৎপাদন করতে হয়। তাই প্যাকেজিং কাঁচামালের ওপরে আমদানি শুল্ক প্লাস্টিক প্যাকেজিংয়ের মতো ৫ শতাংশ করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে সংগঠনটি। এছাড়া দেশীয় পেপার মিলে উৎপাদিত প্যাকেজিংয়ের কাঁচামাল অর্থাৎ প্যাকেজিং পেপারে ভ্যাট ১৫ শতাংশ করার সুপারিশ করেছে বিএলসিএমএ। এর ফলে বাণিজ্যিক আমদানি কয়েকগুণ বাড়ার পাশাপাশি সরকারের হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া প্যাকেজিংয়ের শুল্ক ৫ শতাংশ আরোপিত হলে বন্ড সুবিধার অপব্যবহার অনেকাংশে হ্রাস পাবে।
আরও পড়ুন: গ্রামীণ অর্থনৈতিক খাতে আরও বেশি বরাদ্দ চায় বিসিআই
বিএলসিএমএয়ের দ্বিতীয় দাবি হলো- যেহেতু তারা ১৫ শতাংশ বা আদর্শ হারে ভ্যাট দেন তাই তাদের উৎপাদনে ব্যবহৃত কাঁচামালের ওপর ভ্যাট ১৫ শতাংশ হওয়াই বাঞ্চনীয়। কাঁচামাল হিসেবে আমদানিকৃত ও বাজার হতে সংগৃহীত ওয়েস্ট পেপারের ওপর ভ্যাট আরোপ করে রেয়াতি সুবিধা দিয়ে ৫ থেকে ৭.৫ শতাংশের পরিবর্তে প্যাকেজিং পেপারে ভ্যাট ১৫ শতাংশ করার অনুরোধ জানায় সংগঠনটি।
তাদের অভিযোগ, প্রতিষ্ঠানের নিট আয় হতে অনেক বেশি পরিমাণ টাকা উৎসে আয়কর হিসেবে কাটা যায়। প্রতিযোগিতামূলক বাজারে তাদের নিট আয় ৪-৫ শতাংশের বেশি নয়। এ ক্ষেত্রে ২-৫ শতাংশ উৎসে আয়কর কর্তন তাদের জন্য গ্রহণযোগ্য নয়। যেসব প্রতিষ্ঠান বাণিজ্যিক আমদানি করে তারা ৫ শতাংশ অগ্রীম আয়কর দেয়। তাই উৎসে আয়কর কর্তন তাদের জন্য ডাবল ট্যাক্সেশন হয়ে যায়। সংগঠনটি উৎসে আয়কর কর্তন বাতিল করার বিশেষ অনুরোধ জানিয়েছে।
বিএলসিএমএ জানায়, কমবেশি ৭০টি কাগজকল স্থানীয় প্যাকেজিং শিল্পের প্যাকেজিং পেপার উৎপাদন ও সরবরাহ করছে। এর মধ্যে ৭-৮টি কাগজকল ভ্যাট দিয়ে কাগজ বিক্রি করে আসছে। বাকি প্রায় ৮০ শতাংশ কাগজকল ভ্যাট ফাঁকি দিচ্ছে। তা বন্ধের জোর সুপারিশ জানিয়েছে সংগঠনটি।