বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার ট্রান্সজুগুলার ইন্ট্রাহেপাটিক পোর্টোসিস্টেমিক শান্ট বা টিআইপিএস প্রক্রিয়া সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আপনারা সবাই জানেন, বিদেশ থেকে ৩ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এখানে এসেছেন। গতকাল (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যায় তারা অত্যন্ত সফলভাবে (টিআইপিএস) পদ্ধতিটি সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছে।’
শুক্রবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়া বর্তমানে হাসপাতালের সিসিইউতে (করোনারি কেয়ার ইউনিট) রয়েছেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ডাক্তাররা তার সঙ্গে কথা বলছেন… এখন পর্যন্ত তার অবস্থা অনেক ভালো।’
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার পানি বৃদ্ধি-রক্তক্ষরণ রোধে টিআইপিএস দিয়েছেন মার্কিন চিকিৎসকরা
এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ৩ মার্কিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক খালেদা জিয়ার ওপর বিশেষ টিআইপিএস পদ্ধতি পরিচালনা করেন। এই পদ্ধতিতে পাকস্থলী ও বুকে পানি জমে যাওয়া এবং লিভারে রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে কোনো ধরনের অস্ত্রোপচার ছাড়াই তার লিভারের দুটি রক্তনালীর মধ্যে নতুন সংযোগ সৃষ্টি করা হয়।
জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির স্কুল অব মেডিসিনের হামিদ রব, ক্রিস্টোস জর্জিয়াডেস ও জেমস পি এ হ্যামিল্টন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য ও মেডিকেল পরীক্ষার রিপোর্ট যাচাই-বাছাই করে তার টিআইপিএস প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নেন।
টিআইপিএস এমন এক পদ্ধতি যা পোর্টাল শিরাগুলোকে নিম্ন চাপযুক্ত সংলগ্ন রক্তনালীগুলোর সঙ্গে সংযুক্ত করার জন্য একটি স্টেন্ট (টিউব) সন্নিবেশ করে। এটি পোর্টাল শিরার (পোর্টাল হাইপারটেনশন নামে পরিচিত) উচ্চ রক্তচাপ উপশম করে, যা প্রায়শই লিভার সিরোসিসের সেটিংয়ে ঘটে।
আরও পড়ুন: সমাবেশের ৩ দিন আগেই বিএনপির ১২শ’ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার : রিজভী
বুধবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান ড. হামিদ রব ও ড. জেমস পি এ হ্যামিল্টন। আরেক চিকিৎসক ক্রিস্টোস জর্জিয়াডেস বৃহস্পতিবার রাত ২টার দিকে বিমানবন্দরে পৌঁছান।
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ৯ আগস্ট থেকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন ৭৮ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।
৯ অক্টোবর এভারকেয়ার হাসপাতালে বিএনপি চেয়ারপার্সনের মেডিকেল বোর্ড জানায়, তার পাকস্থলী ও বুকে পানি জমে যাওয়া, অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ এবং লিভার সিরোসিসের কারণে সৃষ্ট সংক্রমণ রোধে যথাযথ চিকিৎসার অভাবে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর জীবন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।