বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, জনগণের প্রত্যক্ষ প্রতিনিধিদের হাতে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব না দেওয়া পর্যন্ত রাষ্ট্র সংস্কারের উদ্যোগ সফল হবে না।
তিনি বলেন, ‘যারা মনে করেন নির্বাচনের আগে সংস্কার হওয়া উচিত, তাদের বুঝতে হবে যে, এই সংস্কারগুলো সফল হতে জনগণের সঙ্গে সত্যিকার অর্থে সংযুক্ত লোকদের প্রয়োজন। তাদের ছাড়া কোনো সংস্কার সম্ভব হবে না।’
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশে একটি অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে বলেন তিনি।
তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, নির্বাচন পেছানো হলে তা দেশ ও সরকার উভয়ের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রগুলো আরও গভীর হবে।
আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহত ফটো সাংবাদিকদের আর্থিক সহায়তা দিতে 'আমরা বিএনপি পরিবার' এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
আরও পড়ুন: নির্বাচনের নামে প্রতারণা করেছে বিগত সরকার: তারেক রহমান
তারেক বলেন, রাজনীতিবিদরাই দুই বছর আগে সংস্কার প্রস্তাবগুলো জাতির সামনে উপস্থাপন করেছিলেন, অন্য কেউ নয়।
বিএনপি নেতা বলেন, 'দেশে যদি সত্যিকারের সংস্কার করতে হয়, তাহলে প্রকৃত রাজনীতিবিদদের মাধ্যমে তা বাস্তবায়ন করতে হবে।’
তিনি বলেন, কার্যকরভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য রাজনীতিবিদদের অবশ্যই পেশাদার, বুদ্ধিজীবী এবং নাগরিক সমাজের সদস্যদের কাছ থেকে পরামর্শ ও মতামত চাইতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘সেই পরামর্শগুলোর ওপর ভিত্তি করেই আমরা ধীরে ধীরে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব। কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত জনগণের প্রত্যক্ষ প্রতিনিধিদের দেশ পরিচালনার দায়িত্ব না দেওয়া হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো সংস্কারই কোনোভাবেই পুরোপুরি বাস্তবায়িত হবে না।’
তারেক আরও বলেন, জনগণের সঙ্গে যাদের প্রত্যক্ষ সম্পৃক্ততা আছে, তারাই তাদের আকাঙ্ক্ষা বুঝতে পারে ও জনগণের ইচ্ছার আলোকে দেশকে এগিয়ে নিতে পারে।
তিনি বলেন, দেশের মানুষ চায় তাদের মৌলিক অধিকার ও অর্থনৈতিক মুক্তি নিশ্চিত করেই বাংলাদেশ গড়ে উঠুক।
তিনি বলেন, ‘অর্থনৈতিক মুক্তি ও বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার জন্য রাজনৈতিক স্বাধীনতা অপরিহার্য। এ লক্ষ্যে ভোটাধিকার ও ভোট দেওয়ার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।‘
বিএনপির এই নেতা বলেন, জনগণের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করা ছাড়া রাতারাতি দেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রকে রক্ষা করা সম্ভব হবে না।
তিনি স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, তাদের দলসহ অন্যান্য গণতান্ত্রিক ও সমমনোভাবাপন্ন দলগুলো আড়াই বছর আগে দেশকে ঢেলে সাজানোর জন্য ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব পেশ করেছিল।
বিএনপি নেতা ব্যাখ্যা করে বলেন, তারা দেশ পুনর্গঠন এবং এর ধ্বংসপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুনরুদ্ধারের জন্য একটি সঠিক দিকনির্দেশনা ও কৌশলের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করেছেন। ‘এজন্য আমরা ৩১ দফা রাষ্ট্র সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছি।’
তিনি বলেন, ৩১ দফা প্রস্তাবে তারা রাষ্ট্রকে ঢেলে সাজানোর পাশাপাশি দেশের মানুষের দৈনন্দিন সমস্যা সমাধানের পরিকল্পনার রূপরেখাও দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: সংস্কারের নামে বেশি সময়ক্ষেপণ না করার আহ্বান তারেক রহমানের
তারেক রহমান বলেন, জুলাই-আগস্টের গণআন্দোলনে প্রায় ৮০ জন ফটোসাংবাদিক আহত ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
আহত সাংবাদিকদের সাধ্যমতো পাশে থাকার আশ্বাস দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।