চলতি মাসের সংসদীয় নির্বাচনে ভরাডুবি নিয়ে দলের মধ্যে ক্রমবর্ধমান ক্ষোভের মধ্যেই দলের বর্তমান প্রধান ও মহাসচিবকে তাদের পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ। একই সঙ্গে তিনি নিজেকে দলের চেয়ারম্যান হিসেবে ঘোষণা করেছেন।
তিনি জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী মামুনুর রশীদকে দলের মহাসচিব নিযুক্ত করেন।
সম্প্রতি দল থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন বা স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন দলের এমন নেতাদের সঙ্গে গুলশানে নিজ বাসভবনে মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত নেন রওশন।
আরও পড়ুন: থাইল্যান্ড থেকে দেশে ফিরেছেন রওশন এরশাদ
এতে বলা হয়, 'দলের গঠনতন্ত্রের ২০-১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী চলমান সংকট উত্তরণের লক্ষ্যে আমি দলের নেতা-কর্মীদের অনুরোধে জিএম কাদেরকে চেয়ারম্যান পদ থেকে এবং মুজিবুল হক চুন্নুকে যথাক্রমে সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দিচ্ছি।’
দলের প্রতিষ্ঠাতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্ত্রী ও জিএম কাদেরের ভাবি রওশন জানান, দলের নেতা-কর্মী ও অনুসারীদের অনুরোধে তিনি চেয়ারম্যানের দায়িত্বও নিয়েছেন।
তিনি বলেন, কাজী মামুনুর রশীদ দলের পরবর্তী কাউন্সিল অধিবেশন পর্যন্ত জাতীয় পার্টির মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন এবং দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।
রওশন এরশাদ বলেন, জিএম কাদের ও মুজিবুল হক দলের মারাত্মক ক্ষতি করেছেন। তবে দলের আর যেন কোনো ক্ষতি না হয়, সে কারণেই তিনি এই পদক্ষেপ নিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, যেসব নেতাকে বহিষ্কার ও পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে তাদের পুনর্বহাল করা হবে এবং সঠিক সময়ে দলের জাতীয় কাউন্সিলের আয়োজন করা হবে।
আরও পড়ুন: জাতীয় পার্টির নেতাদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান রওশন এরশাদের
তবে এক সংবাদ সম্মেলনে চুন্নু বলেন, রওশনের এই ভিত্তিহীন পদক্ষেপ নিয়ে তারা অন্তত বিরক্ত, কারণ এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনো এখতিয়ার তার নেই।
তিনি বলেন, 'আমাদের দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এই পার্টির চেয়ারম্যান হওয়া বা কাউকে কোনো পদ থেকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা তার নেই।’
চুন্নু বলেন, রওশন এর আগে তিনবার জিএম কাদেরকে বহিষ্কারের ঘোষণা দিয়েছিলেন এবং পরে তার ঘোষণা প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, ‘তাই আমরা বিষয়টি বিবেচনায় নিচ্ছি না। এর কোনো ভিত্তি নেই। সংবিধানে তার (রওশন) সেই ক্ষমতা নেই।’