তিনি বলেন, ‘বহিষ্কার করা হতে পারে এটা জেনেই দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে আমি শপথ নিয়েছি। বহিষ্কার করলেও আমি দলের সাথেই থাকব।’
শপথ নেয়ার পর সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে বিএনপির সংসদ সদস্য বলেন, তিনি সংসদে গিয়ে খালেদা জিয়ার কারামুক্তির দাবি উত্থাপন করবেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি ও এর জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ভরাডুবির মধ্যেও ধানের শীষ প্রতীকে ঠাকুরগাঁও-৩ আসন থেকে নির্বাচিত হন জাহিদ।
বিএনপি ও গণফোরামসহ আরও কয়েকটি দল জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়। নির্বাচনে বিএনপি ছয়টি এবং গণফোরাম দুটি আসনে বিজয়ী হয়।
তবে ‘ব্যাপক ভোট ডাকাতির’ অভিযোগ এনে জোট নির্বাচনের ফল বর্জন করে নতুন নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে।
এর আগে গণফোরাম থেকে নির্বাচিত দুই সংসদ সদস্য সুলতান মোহাম্মাদ মনসুর (মৌলভীবাজার-২) এবং মোকাব্বির খান (সিলেট-২) যথাক্রমে ৭ মার্চ ও ২ এপ্রিল শপথ নেন।
জাহিদ বলেন, তিনি তার নির্বাচনী এলাকার জনগণ, যারা তাকে নির্বাচিত করেছেন, তাদের আশা ও প্রত্যাশা পূরণ করতে দলের সিদ্ধান্তকে ভঙ্গ করেছেন। ‘আমি দীর্ঘদিন অপেক্ষা করেছি। কিন্তু শপথ নিতে আমার এলাকার জনগণ আমার ওপর চাপ প্রয়োগ করে।’
তিনি বলেন, প্রায় ১৫ দিন ধরে তিনি রাজধানীতে অবস্থান করছেন এবং এলাকার জনগণ তাকে শপথ নিয়ে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
জাহিদ বলেন, বিএনপির টিকিটে এ আসন থেকে এর আগে তিনবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তিনি। কিন্তু স্বাধীনতার পর থেকেই আওয়ামী লীগের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত আসনটিতে একবারও জিততে পারেননি। ‘প্রথমবারের মতো বিএনপি এ আসনে বিজয়ী হয়েছে।’
শপথ নেয়ার বিষয়ে তিনি বিএনপি নেতাদের সাথে আলোচনা করেছিলেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তিনি যোগাযোগ করেছেন এবং কয়েকদিন আগে তাদের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। কিন্তু শপথ নিতে তাদের সম্মতি পাননি। ‘দল শপথ না নেয়ার সিদ্ধান্তে এখনো অটল।’
বিএনপি বহিষ্কার করলে কী করবেন এমন প্রশ্নে জাহিদ বলেন, দল যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে। ‘আমি দলের জন্য নিবেদিত কর্মী। আমি ছাত্রাবস্থা থেকেই গত ৩৮ বছর ধরে দলের সাথে জড়িত। সুতরাং আমি দলের সাথেই থাকব। কী সিদ্ধান্ত নেয়া হলো তাতে কিছু যায় আসে না।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সংসদে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার কারামুক্তির বিষয়ে তিনি যথাযথ ভূমিকা রাখতে চান। ‘আমার নেত্রী (খালেদা) বয়স্ক, বর্তমান বয়স ৭৩। গণতন্ত্রের স্বার্থে তাকে মুক্তি দিতে আমি সংসদকে অনুরোধ করব। এমপি হিসেবে এটা আমার প্রথম অঙ্গীকার।’
এ সময় দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হাজার হাজার ‘মিথ্যা’ মামলা প্রত্যাহার করতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান বিএনপির এ নেতা।
জাহিদের শপথ গ্রহণের মধ্যদিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদের ৩০০ সদস্যের মধ্যে ২৯৫ জন শপথ নিলেন। বর্তমান সংসদের সদস্য থাকতে চাইলে আগামী ২৯ এপ্রিলের মধ্যে বিএনপির বাকি পাঁচ সংসদ সদস্যকে অবশ্যই শপথ নিতে হবে।