বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) তিনি মারা যান বলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ইউএনবিকে জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘এটা খুব মর্মাহত করার খবর যে মওদুদ আহমদ আর নেই। তার মৃত্যু সমগ্র জাতির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।’
‘একজন বিশিষ্ট পার্লামেন্টারিয়ান, আইনজীবী, মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক হিসেবে মওদুদ জাতির একজন অভিভাবক ছিলেন। তার মৃত্যুতে দেশের মানুষ একজন প্রকৃত রাজনীতিবিদকে হারিয়েছে,’ বলেন ফখরুল।
মওদুদের ব্যক্তিগত সহকারী মমিনুর রহমান সুজন বলেন, বিএনপি নেতার কিডনিতে মারাত্মক জটিলতা এবং ফুসফুসে অক্সিজেন গ্রহণক্ষমতা কমে গিয়েছিল।
আরও পড়ুন: মওদুদ আহমদের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতির শোক
বিএনপি নেতা মওদুদ হাসপাতালে ভর্তি
গত ৩০ ডিসেম্বর, রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ায় বিএনপি নেতাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃদু স্ট্রোকও হয় তার।
পরে ৭ জানুয়ারি বিএনপির এ নেতার হার্টে স্থায়ী পেসমেকার বসানো হয়। তাকে ১ ফেব্রুয়ারি সিঙ্গাপুর মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে নেয়া হয়।
শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় মওদুদকে গত ৯ মার্চ মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তরিত করা হয়।
তার স্ত্রী হাসনা মওদুদ পল্লী কবি জসিমউদ্দিনের মেয়ে। তার কন্যা সন্তান রয়েছেন। তার দুই ছেলে মারা গিয়েছেন।
১৯৭৮ সালে জিয়াউর রহমান গঠিত বিএনপির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন মওদুদ আহমদ।১৯৮৫ সালে তিনি জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন এবং সামরিক শাসক এইচএম এরশাদের সরকারের প্রধানমন্ত্রী এবং উপ-রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরশাদের সরকারের পতনের পরে মওদুদ ১৯৯৬ সালে আবার বিএনপিতে যোগ দেন এবং ২০০১ সালে খালেদা জিয়ার সরকারের আইনমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি নোয়াখালী-৫ আসন থেকে একাধিকবার এবং বগুড়া-৬ আসন থেকে একবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: মওদুদ সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ভর্তি
মওদুদ আহমদের শারীরিক অবস্থার অবনতি
তার মৃত্যুতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ও আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
এদিকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি আবদুল কাদের সিদ্দিকী এবং গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীও মওদুদ আহমদের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন।