আওয়ামী লীগ ও দলের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠন মঙ্গলবার ‘গ্রেনেড হামলা দিবস’ হিসেবে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। পাশাপাশি ১৪ দলীয় জোটের সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনগুলোও ভয়াল দিনটি স্মরণে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় আওয়ামী লীগের তৎকালীন মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন প্রাণ হারান।
অল্পের জন্য বেঁচে যান বতর্মান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। তবে গ্রেনেডের প্রচণ্ড শব্দে তার শ্রবণশক্তি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ হামলায় তিন শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হন।
গ্রেনেড হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুটি মামলা করা হয়। বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের অধীনে একটি এবং হত্যার জন্য আরেকটি মামলা।
সব প্রক্রিয়া শেষে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর গ্রেনেড হামলার দুই মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালাত।
এছাড়া, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং বাকি ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়।
বাবর ও সালাম ছাড়াও মৃত্যুদণ্ড পাওয়া অন্য আসামিরা হলেন- তৎকালীন ডিজিএফআইয়ের পরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, তৎকালীন এনএসআই মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম, মোহাম্মদ হানিফ, মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, শেখ আবদুস সালাম, আবদুল মাজেদ, মাওলানা শওকত ওসমান, মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান, মাওলানা আবু তাহের, মাওলানা আবু সাঈদ, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, আবুল কালাম আজাদ, মঈনুদ্দিন শেখ ওরফে আবু জানদাল, উজ্জ্বল ওরফে রতন, হোসাইন আহমেদ তানিম, শেখ আবদুস সালাম ও আবদুল মালেক।
তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে।
তারেক রহমানসহ বাকি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- শাহদাত উল্লাহ ওরফে জুয়েল, মাওলানা আবদুর রউফ, সাব্বির আহমদ, তারিক হাসান সুমন, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, আবু বকর, আরিফুল ইসলাম, মহিবুল মোত্তাকিন, আনিসুল মোরসালিন, মোহাম্মদ খলিল, জাহাঙ্গীর আলম বদর, ইকবাল, লিটন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব আবুল হারিছ চৌধুরী, শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই ও রাতুল আহম্মেদ।
তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা ও অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
আদালত সাবেক আইজিপি আশরাফুল হুদা, খোদা বক্স চৌধুরী ও শহিদুল হক, লে. কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, লে. কর্নেল (অব.) সাইফুল ইসলাম জোয়ারদার, মেজর জেনারেল (অব.) এটিএম আমিন, সাবেক ডিআইজি খান সাঈদ হাসান, সাবেক পুলিশ সুপার ওবায়দুর রহমান খান ও রুহুল আমিন এবং এএসপি আবদুর রশীদ ও মুন্সি আতিকুর রহমানকে দুই বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছে।
তাদেরও ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা ও অনাদায়ে আরো ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
অভিযুক্তদের মধ্যে তারেক রহমান, মোরসালিন, মহিবুল, খলিল, জাহাঙ্গীর, ইকবাল, লিটন, হারিছ চৌধুরী, কায়কোবাদ, শফিকুর, আবদুল হাই, রাতুল, সাইফুল ইসলাম, এটিএম আমিন ও সাঈদ হাসান পালাতক রয়েছেন।
মামলার অভিযোগপত্রে নাম থাকা জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নান ও শহিদুল আলম ওরফে বিপুলের অন্য মামলায় ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হওয়ায় তাদের মামলা থেকে বাদ দেয়া হয়।