রাজধানীতে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতা করা এ দুই নেতাকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করা না হলে সারা দেশে কঠোর কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।
বুলবুল-মামুন নেতৃত্বাধীন মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের একাংশের নেতা-কর্মীরা বিকাল ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। এতে শাহবাগের আশপাশের এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়।
বিক্ষোভকারীরা প্রথমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মানববন্ধন পালন এবং পরে মিছিল নিয়ে শাহবাগ মোড় অবরুদ্ধ করেন।
মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের দেয়া সাত দফা দাবির মধ্যে উল্লেখযোগ্য দাবিগুলো হলো ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মামুনুল হক ও ফয়জুল করীমকে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া, দেশের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও জেলা-উপজেলায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে বাংলাদেশে অবিলম্বে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা।
বিক্ষোভকারীরা শিক্ষার্থীদের ওপর যৌন নিপীড়নের ঘটনা পর্যবেক্ষণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ সেল স্থাপনেরও দাবি জানান।
যারা সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ছড়ায় তাদের এবং শিশু নির্যাতনকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতেরও দাবি জানান তারা।
সমাবেশে দেয়া বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধা মঞ্চের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার জন্য মুফতি ফয়জুল ও মামুনুলকে দেশে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেন।
‘দুজনকে গ্রেপ্তারের জন্য আমরা ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছি। এর মধ্যে তাদের গ্রেপ্তার করা না হলে তাদের নির্মূলে সারা দেশে কঠোর কর্মসূচি পালন করা হবে,’ বলেন বুলবুল।
তাদের প্রতিহত করতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বিশ্ব যখন কুরআন নিয়ে গবেষণা করছে তখন ওই অপরাধীরা শিশু শিক্ষার্থীদের শ্লীলতাহানিতে ব্যস্ত।’
সুপ্রিম কোর্টের সাবেক প্রধান বিচারপতি শাহাবুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘যারা বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় তাদের এ দেশে থাকার কোনো অধিকার নেই।’
তাদের স্বাধীনতাবিরোধী হিসেবে অভিহিত করে তাদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আগামী ১ ডিসেম্বর দেশব্যাপী মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশের নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের নেতারা।
এর আগে, গত ১৩ নভেম্বর এক অনুষ্ঠানে মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম ও আল্লামা মামুনুল হক রাজধানীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতা করেছিলেন।