সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে নির্যাতনের প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এমন করে সাংবাদিক নির্যাতনের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয় দেশে বিন্দুমাত্র কোন গণতন্ত্র নেই।
তিনি বলেন, ‘সরকার নিজেরাই পলিসি উদ্ধার করে, তারাই দেশটাকে এভাবে চরম অবস্থার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। রাজনৈতিকভাবে দেশ চালাতে গিয়ে সাংবাদিকদের সাথে এরকম আচরণ করছে সরকার। এটা আশা করা যায় না।'
বুধবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় কালে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, 'একজন নারী সাংবাদিককে মন্ত্রণালয়ের একজন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা কীভাবে নাজেহাল করে? তাদের বদলি করা কোন সমাধান নয়, তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে কারাগারে নেয়া উচিত ছিল। এটা করলে তাও সাংবাদিকরা একটু স্বস্তি পেতো।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক রোজিনার গ্রেপ্তারে জাতিসংঘের উদ্বেগ প্রকাশ
তিনি বলেন, সাংবাদিকরা যাতে করে সত্য ঘটনা প্রকাশ করতে না পারে তার জন্য এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে। যিনি ইতোমধ্যে দেশ-বিদেশে অনুসন্ধানী রিপোর্টের জন্য খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। তিনি সত্যটা বের করে জনগণের সামনে এনেছিলেন। বিশেষ করে করোনা সংক্রান্ত সরকারের যে দুর্নীতি, অধিদপ্তরের যে দুর্নীতি এগুলোকে তিনি জনসম্মুখে নিয়ে এসেছিলেন।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবের কার্যালয়ে যে ঘটনা ঘটেছে সেটি ন্যাক্কারজনক। এটার নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের নেই। ৫ ঘণ্টা আটক করে তাকে পুলিশে দিয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানোর জন্য সরকারকে ধিক্কার জানাচ্ছি। অবিলম্বে তার বিরুদ্ধে সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও সসম্মানে মুক্তির দাবি জানাচ্ছি। একইসাথে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যসচিবের পদত্যাগ দাবি করছি।'
আওয়ামী লীগ সরকার রাজনৈতিক নয়, আমলাতান্ত্রিক সরকার বলেও এ সময় বিএনপি মহাসচিব মন্তব্য করেন।
‘রাজনৈতিক নেতৃত্ব যদি থাকতো, তাহলে সাংবাদিকদের সঙ্গে এমন আচরণ হতো না। এরা (আওয়ামী লীগ) ফ্যাসিস্ট সরকার, তাই তাদের নির্ভর করতে হয় আমলাদের উপর ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপর। যে কারণে অন্যান্য ব্যবস্থাগুলোকওে তারা দলীয়করণ করে ফেলেছে,’ বলেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের অবস্থা এমন পর্যায়ে চলে গেছে যে, অফিসিয়াল সিক্রেসি এ্যাক্ট চালু করা ছাড়া অন্য কোনো পথ নেই তাদের। এ সরকার দমন, নির্যাতন, সাংবাদিক দলন ও মানুষের অধিকার হরণ করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের সাংসদ জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, জেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈমুর রহমান, জেলা আইনজীবী সমিতির নব নির্বাচিত সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল হালিম, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এনতাজুল হক, থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হামিদ, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব হোসেন তুহিনসহ বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।