ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে ও নানা আনুষ্ঠানিকতায় খাগড়াছড়িতে ঐতিহ্যবাহী বৌদ্ধ বিহারে দানোত্তম কঠিন চীবর দান হচ্ছে।
শুক্রবার য়ংড বৌদ্ধ বিহারের দায়ক দায়িকাদের আয়োজনে সকাল থেকে শুরু হয়েছে দিনব্যাপী কঠিন চীবর দান উৎসব। এই উপলক্ষে দূর দূরান্ত থেকে পূণ্য সঞ্চয় করার জন্য শতশত পূণ্যার্থীরা বিহারে সমাগম হয়েছে।
কঠিন চীবর দান উপলক্ষে বিহারে বুদ্ধ পূজা, পঞ্চশীল গ্রহণ, সংঘদান, অষ্ট পরিস্কার দান, পানীয়, কল্পতরু দানসহ সকল দানীয় বস্তু দান করা হয়। এসময় ধর্মীয় গুরুরা পুণ্যার্থীদের উদ্দেশে য়ংড বৌদ্ধ বিহারের বিহারাধ্যক্ষ ভদন্ত কেমাসারা থের ধর্ম দেশনা দেন। এসময় জগতের সকল প্রাণীর সুখ শান্তি ও মঙ্গল কামনা করা হয়।
আরও পড়ুন: প্রবারণা পূর্ণিমা: পাহাড়ে সম্প্রীতির কল্প জাহাজ ভাসলো
অনুষ্ঠানে মং সার্কেলের রাজা সাচিংপ্রু চৌধুরী, মারমা সম্প্রদায়ের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান চাইথোই অং মারমা, মারমা ঐক্য পরিষদ নেতা ম্রাসাথোয়াই মারমা, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কল্যাণ মিত্র বড়ুয়াসহ অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় দায়ক দায়িকারা প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, ফুল-ফল, ছোয়াইং (খাবার) বৌদ্ধসহ ভান্তিদেরকে দান করেন। সন্ধ্যায় ভগবান বৌদ্ধের উদ্দেশে আকাশে প্রদীপ (ফানুস) উড়িয়ে দেয়া হবে।
আরও পড়ুন: ফ্রাঙ্কফুর্ট ৭৩তম আন্তর্জাতিক বইমেলা: বাংলাদেশ স্টলের উদ্বোধন
একইভাবে জেলা সদরের ধর্মপুর আর্য্য বন বিহারে দু’দিন ব্যাপী দানোত্তাম কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠান শেষদিন শুক্রবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর আগে বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। খাগড়াছড়ি সদরের কল্যাণপুর মৈত্রী বৌদ্ধ বিহারে দায়ক দায়িকা ও উপাসক উপাসিকাদের আয়োজনে ২৯তম দানরাজা দানোত্তম কঠিন চীবর দানোৎসব হয়েছে।
আরও পড়ুন: ২০০ কেজি সোনায় কারুকার্যমণ্ডিত হতে যাচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় পবিত্র কোরআন
প্রসঙ্গত, আজ থেকে আড়াই হাজার বছর আগে মহামতি গৌতম বুদ্ধের জীবদ্দশায় তার প্রধান সেবিকা মহা পূণ্যবর্তী বিশাখা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তুলা থেকে সুতা তৈরি করে সুতাগুলো রং করে বয়ন করে সেলাই শেষে চীবর বিশেষ পরিধেয় বস্ত্র দান কার্য সম্পাদন করেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মহা যঙ্গ সম্পাদন করার কারণে বৌদ্ধরা এই ধর্মীয় উৎসবকে কঠিন চীবর দান বলে থাকে।