বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে রবিবার চট্টগ্রামে গ্যালারি কসমস আয়োজিত চারদিন ব্যাপী ‘৫০ স্প্রিং অব ফ্রিডম’ আর্ট ক্যাম্প শেষ হয়েছে।
হিডেন হার ফাউন্ডেশনের আয়োজনে এবং কসমস ফাউন্ডেশনের সার্বিক সহায়তায় বাংলাদেশে’র গৌরবময় স্বাধীনতা অর্জনের সু্বর্ণজয়ন্তী উৎসব উপলক্ষে বিশেষ চিত্র-কর্মশালাটি আয়োজিত হয়েছে।
আয়োজনটি সম্পর্কে গ্যালারি কসমস এবং কসমস ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এনায়েতউল্লাহ খান বলেন, ‘স্বাধীনতার এই গৌরবময় সুবর্ণজয়ন্তী অর্জনের জন্য বাংলাদেশকে লম্বা পথ পাড়ি দিতে হয়েছে। আমাদের এই দেশ পৃথিবীর বুকে যেন এক টুকরো ভূ-স্বর্গ, যে দেশে রয়েছেন বিশ্বমানের সব প্রতিভাবান চিত্রশিল্পী। এই বিশেষ সময়ে আয়োজিত এই বিশেষ চিত্র-কর্মশালাটি আমাদের গ্যালারি কসমস এবং কসমস ফাউন্ডেশনের চলমান চিত্রকর্ম-সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম এবং উদ্যোগসমূহের মাঝে অন্যতম এবং আমাদের দেশের এই গুণী এবং প্রতিভাবান চিত্রশিল্পীদের নিয়ে আয়োজিত এই বিশেষ কর্মশালাটির সাথে জড়িত হতে পেরে আমরা খুবই গর্বিত।’
বসন্তের মনোরম পরিবেশে প্রকৃতি এবং জীবনের মাঝে বিদ্যমান সম্পর্ক এবং সংহতি শিল্পীদের রং তুলি এবং ক্যানভাসে ফুটিয়ে তোলার উদ্দেশ্য নিয়ে বন্দরনগরী চট্টগ্রাম শহরের ফিনলে হিলে দেশের আটজন বিশিষ্ট চিত্রশিল্পীকে সাথে নিয়ে চার দিনব্যাপী এই বিশেষ কর্মশালাটি আয়োজন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: এ বছর লালন স্মরণোৎসব স্থগিত
শনিবার চিত্র-কর্মশালাটিতে উপস্থিত হয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাবতী আমাদের বন্দরনগরী চট্টগ্রামে এমন মনোরম পরিবেশে গুণী এই চিত্রশিল্পীদের নিয়ে এমন ব্যতিক্রমী একটি আয়োজন সত্যিই ভীষণ প্রশংসার দাবিদার। আমি এই আয়োজনে আসতে পেরে ভীষণ আনন্দিত, একইসাথে আমাদের শহরে বসন্তের এই বর্ণিল আয়োজনে স্বাধীনতার ৫০তম বসন্ত উদযাপনের এই ব্যতিক্রমী আয়োজনের উদ্যোক্তা গ্যালারি কসমস, আয়োজক হিডেন হার ফাউন্ডেশন এবং সার্বিক তত্ত্বাবধানে থাকা কসমস ফাউন্ডেশনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’
এর আগে বিজিএমইএ সভাপতি ড. রুবানা হক এবং ডিবিএল গ্রপের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রহিম শুক্রবারে এই বিশেষ চিত্র-কর্মশালার উদ্বোধনী আয়োজনে উপস্থিত থেকে সার্বিক আয়োজনের প্রতি তাদের মুগ্ধতা প্রকাশ করেন।
রুবানা হক বলেন, ‘সাধারণত আমরা এ ধরনের পরিবেশে এরকম বিশেষ আয়োজন সচরাচর দেখতে পাই না। আমি এই চিত্র-কর্মশালায় বিশিষ্ট এই শিল্পীদের অংশগ্রহণ দেখে এবং এই আয়োজনে আসতে পেরে আনন্দিতবোধ করছি।’
চিত্র-কর্মশালাটির আয়োজনে থাকা হিডেন হার ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা এবং পরিচালক সুনেহরা ইসলাম বলেন, ‘আমরা আমাদের এই স্বাধীন দেশে প্রকৃতির বর্ণিল সব আয়োজন উপভোগ করতে পারতাম না, যদি আমরা বীরত্বের সাথে আমাদের কষ্টার্জিত স্বাধীনতা অর্জন করতে না পারতাম। বসন্তের এই স্নিগ্ধ প্রকৃতির রঙিন আয়োজনে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের প্রয়াসে এই কর্মশালা আয়োজন করতে পেরে আমরা গর্বিত।’
চার দিনব্যাপী এই কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী দেশের আটজন বিশিষ্ট এবং উদীয়মান চিত্রশিল্পীদের নবীন-প্রবীণ এই দলে ছিলেন শিল্পী সমরজিৎ রায় চৌধুরী, কনক চাঁপা চাকমা, আনিসুজ্জামান আনিস, অনুকূল চন্দ্র মজুমদার, আজমীর হোসেন, বিশ্বজিৎ গোস্বামী, আবদুল্লাহ আল বশির এবং মং মং শো।
অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে অন্যতম চিত্রশিল্পী এবং শিক্ষক বিশ্বজিৎ গোস্বামী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর সেই ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ যেমন ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব অর্জনের লড়াইয়ে আমাদের একতাবদ্ধ এবং উজ্জীবিত করেছিল, তেমনি একইসাথে প্রকৃতি এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যেরও এক প্রকার অন্তর্নিহিত শক্তি রয়েছে আমাদেরকে একীভূত করার। আমাদের এই কর্মশালাটির প্রধান উদ্দেশ্য আমাদের এই স্বাধীন দেশে ঋতুরাজ বসন্তের ৫০তম বর্ষ উদযাপন করা, যা কিনা একই সাথে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী-সব মিলিয়ে একসাথে আমাদেরকে প্রকৃতির মাঝে নিজেদের শিল্পসত্ত্বাকে নতুন করে আবিষ্কার করার সুযোগ এনে দেয়া। এই কর্মশালাটির অংশ হতে পেরে আমি আনন্দিত এবং সম্মানিত বোধ করছি।
বার্তা সংস্থা ইউনাইটেড নিউজ অব বাংলাদেশ (ইউএনবি) এই কর্মশালার মিডিয়া পার্টনার ছিল।
আরও পড়ুন: মাগুরায় ঐতিহ্যবাহী ঘৌড়দৌড় প্রতিযোগিতা