কাজের একঘেয়েমিতা কাটানোতে যে কোনও পানীয় -এর এক যোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী হচ্ছে কফি। পাশাপাশি পুষ্টিগুণেও পিছিয়ে নেই পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে চাষকৃত এই উদ্ভিজ্জ উপাদানটি। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে নিজের এক সমৃদ্ধ ইতিহাসকে লালন করে এই শক্তিবর্ধক পানীয় এখনও সকলের প্রিয়। শুধুমাত্র যে জীবনধারায় একটি স্বতন্ত্র সংযোজন তা নয়, সামাজিক মর্যাদারও এক অনন্য বৈশিষ্ট্য রয়েছে এই কফির। স্বভাবতই ধরন ভেদে বিভিন্ন কফিতে দামের বেশ তারতম্য থাকে। শুধু কি তাই, এগুলোর ভেতর কিছু কিছুর দাম একদম চোখ কপালে তুলে দেয়ার মতো! তেমনি কয়েকটি দামী কফির তথ্যসমগ্র এই নিবন্ধটি। চলুন, বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল ১০টি কফি সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।
পৃথিবীর সব থেকে দামি ১০টি কফি
ব্ল্যাক আইভরি
থাইল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলে বিশেষ করে সুরিন প্রদেশে এর উৎপত্তি। মূলত চিয়াং সেনের গোল্ডেন ট্রায়্যাঙ্গেল এশিয়ান এলিফ্যান্ট ফাউন্ডেশনে এটি প্রথম উৎপাদিত হয়েছিল।
ব্ল্যাক আইভরি তার অনন্য উৎপাদন প্রক্রিয়ার জন্য বিশ্ববিখ্যাত। অ্যারাবিকা কফি বীজগুলো প্রথমে হাতিদের খাওয়ানো হয়। অতঃপর সেগুলো সংগ্রহ করা হয় তাদের বর্জ্য থেকে। বীজগুলো হাতির পেটে বিভিন্ন এনজাইমের মাধ্যমে পরিপাক ক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে পরিচালিত হয়। হাতির পাচক এনজাইম বীজের প্রোটিন ভেঙ্গে ফেলে, যার ফলে কফি মসৃণ ও কম অম্লীয় হয়। এই অনন্য গাঁজন প্রক্রিয়াটি কফির ব্যতিক্রমী ঐতিহ্যবাহী স্বাদের জন্য দায়ী।
এই স্বাদের জন্য এটি বিশ্বের অন্যতম ব্যয়বহুল কফি হিসেবে পরিচিত, প্রতি কিলোগ্রামে যার মূল্য প্রায় ২ হাজার মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি টাকায় যা ২ লাখ ১৮ হাজার ৮৬১ টাকা। বিলাসবহুল হোটেলগুলোতে এই অসাধারণ কফির এক কাপ প্রায় ৫০ মার্কিন ডলারে পরিবেশন করা হয়।
আরও পড়ুন: খাদ্যতালিকায় ৫ খাবার নিয়ন্ত্রণে রাখবে ডায়াবেটিস
কপি লুওয়াক
ইন্দোনেশিয়া, সুমাত্রা, জাভা, বালি, সুলাওয়েসি এবং পূর্ব তিমুরে উৎপাদিত হয় এর বীজ। এর উৎপাদনের আরও একটি জায়গা ফিলিপাইন, যেখানে এর বিভিন্ন আঞ্চলিক নাম শোনা যায়। অবশ্য সরবরাহ কেন্দ্র হিসেবে ইন্দোনেশিয়া এবং ফিলিপাইনই বহুলাংশে প্রসিদ্ধ।
এই কফি তৈরি পদ্ধতির সঙ্গে এশিয়ান পাম সিভেট নামের বিড়ালের হজম প্রক্রিয়া ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আর এই কারণে এটি সিভেট কফি নামেও পরিচিত। সিভেট কফি চেরি খাওয়ার পর এদের মল থেকে সংগ্রহ করা পরিবর্তিত বীজগুলো। সিভেটের পরিপাক প্রণালীর ভেতর দিয়ে যাবার সময় গাঁজনের মাধ্যমে এগুলোর আভ্যন্তরীণ গঠন পরিবর্তন হয়। আর এই গাঁজনের ফলেই কফি এক স্বতন্ত্র স্বাদের অধিকারী হয়।
এই ব্যতিক্রমী স্বাদ কফি লুওয়াককে দিয়েছে আকাশচুম্বী দাম। প্রাথমিক অবস্থায় সংগৃহীত এর বীজের জন্য খরচের অঙ্ক প্রতি কেজিতে ১ হাজার ৩০০ মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। যা বাংলাদেশি টাকায় রূপান্তর করলে দাড়ায় ১ লাখ ৪২ হাজার ২৬০ টাকা। অবশ্য বীজের উৎপত্তিস্থল এবং গুণাগুণের ওপর ভিত্তি করে খুচরা মূল্য ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হতে পারে।
আরও পড়ুন:
ওসপিনা গ্র্যান ক্যাফে
কলম্বিয়ার আন্দিজের আগ্নেয়গিরির উচ্চভূমি বিশেষ করে ফ্রেডোনিয়া ও অ্যান্টিওকিয়া অঞ্চল এই কফি বীজের উৎপাদনস্থল।
কলম্বিয়ান সংস্কৃতিতে ওসপিনা কফি অপরিসীম তাৎপর্য বহন করে। ১৮৩৫ সালে ডন মারিয়ানো ওসপিনা রদ্রিগেজের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত এই কফি বিশ্বব্যাপী কফির জনপ্রিয়তায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শিক্ষা, উদ্ভাবন এবং শিল্পের অগ্রগতির প্রতি ওসপিনা পরিবারের নিবেদন এখনও প্রভাবিত করে চলেছে কলম্বিয়ান কফি সংস্কৃতিকে। তাই শুধু তার ব্যতিক্রমী স্বাদের জন্যই নয়, এর ঐতিহাসিক গুরুত্বের জন্যও ওসপিনা কফি বিশ্ব জুড়ে সুপরিচিত।
এই কফির রেসিপিতে ব্যবহৃত নির্দিষ্ট উপাদান, কফির উৎপত্তিস্থল এবং প্রক্রিয়াকরণ পদ্ধতির কারণের উপর ভিত্তি করে পরিবর্তিত হয় এর দাম। এর কিছু সাধারণ জাত প্রতি পাউন্ড ১২০ মার্কিন ডলারে(১৩ হাজার ১৩২ বাংলাদেশি টাকা) বিক্রি হয়। কিন্তু একচেটিয়া ওসপিনা গ্র্যান্ড শ্রেণীর লোকেরা এর প্রতি পাউন্ডের জন্য ১ হাজার ৪০০ মার্কিন ডলার(১ লাখ ৫৩ হাজার ২০৩ বাংলাদেশি টাকা) ব্যয় করে।
আরও পড়ুন: বিশ্বের সবচেয়ে দামি ১০টি খাবার
এল ইঞ্জেরতো পিবেরি
এই কফির উৎপত্তি উচ্চ-মানের কফি উৎপাদনের জন্য স্বনামধন্য মধ্য আমেরিকার গুয়াতেমালায়। এগুলো প্রকৃতপক্ষে সিয়েরা দে লস কুচুমাটানেসের নিকটবর্তী হুয়েহুতেনাঙ্গোর উচ্চভূমিতে জন্মে। খামারের উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে দেড় হাজার থেকে ১ হাজার ৯২০ মিটার পর্যন্ত।
আগুইরে পরিবার কয়েক প্রজন্ম ধরে গুণমান এবং স্থায়িত্বের প্রতিশ্রুতি দিয়ে খামার পরিচালনা করে আসছে। খনিজ উপাদান সমৃদ্ধ এল ইঞ্জেরতো লাভাবিহীন মাটি, প্রচুর বৃষ্টিপাত এবং সর্বোত্তম তাপমাত্রা দ্বারা প্রভাবিত অঞ্চলের সুবিধা পায়।
কফির বিশেষত্ব বাড়ানোর জন্য এটি এক সুক্ষ্মতিসুক্ষ্ম প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যায়। খামারে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ পৃথকীকরণ পদ্ধতিতে পিবেরি বীজগুলো আলাদা করা হয়। অতঃপর এগুলোকে একক-চ্যানেল ওয়াশিং প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে পরিচালিত করা হয়। এখানে দুই রাউন্ডে বীজ ভাঙ্গন চলতে থাকে। এই প্রক্রিয়াগুলো সামগ্রিকভাবে কফিতে একটি দারুণ ঘ্রাণ যুক্ত করে।
এর প্রিমিয়াম মূল্য সঠিক যত্ন ও দক্ষতা সহ ব্যতিক্রমী বীজ উৎপাদনের উপর নির্ভরশীল। বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল কফিগুলোর সারিতে শামিলকৃত এল ইঞ্জেরতোর মূল্য পাউন্ড প্রতি প্রায় ৫০০ মার্কিন ডলার(৫৪ হাজার ৭১৫ বাংলাদেশি টাকা)।
আরও পড়ুন: প্যাকেটজাত আলুর চিপস কেন শরীরের জন্য ক্ষতিকর?
এস্মারেল্ডা গেইশা
একে সংক্ষেপে গেইশা কফি নামেই সবাই চেনে। কফির দেশ ইথিওপিয়ার গোরি গেশা বনে এর উৎপত্তি। সর্বপ্রথম ইথিওপিয়াতে উদ্ভূত হলেও, এটি এখন আফ্রিকা, এশিয়া এবং আমেরিকার বিভিন্ন দেশে উৎপাদিত হয়। পানামানিয়ান গেইশা জাতটি বিশেষভাবে তার অদ্বিতীয় জেনেটিক ফিঙ্গারপ্রিন্টের জন্য বিখ্যাত।
এস্মারেল্ডার গেইশার মুখে লেগে থাকা স্বাদের নেপথ্যে রয়েছে জুঁই ফুলের নির্যাস, চকোলেট, মধু এবং কালো চা। যথাযথ যত্নের মধ্যে নির্দিষ্ট ধরনের চাষ এবং প্রক্রিয়াকরণ পদ্ধতির ফলাফল এই অস্থিরতা দূর করা পানীয়টি। এর ব্যতিক্রমী স্বাদ সৃষ্টির জন্য বীজগুলো সাবধানে হাতে বাছাই করা হয়, যেন ক্ষেত থেকে কেবল পরিণতগুলোই উঠে আসে। উপরন্তু ভেজা অথবা শুকনো প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে কফির চূড়ান্ত স্বাদের বৈশিষ্ট্যকে অক্ষুন্ন রাখা হয়।
এর আন্তর্জাতিক খ্যাতির সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত গতিতে বেরে চলেছে এর দাম। কয়েক বছর ধরেই পৃথিবীর সব থেকে ব্যয়বহুল কফিগুলোর একটি হিসেবে এর নাম উঠছে। এস্মারেল্ডা গেইশার রেকর্ড মূল্য পাউন্ড প্রতি ৬০১ মার্কিন ডলার (৬৫ হাজার ৭৬৮ বাংলাদেশি টাকা)।
আরও পড়ুন: মাশরুমের পাঁচ পদের সহজ রেসিপি
সেন্ট হেলেনা
নামকে অনুসরণ করে সঙ্গত কারণে এই কফি জন্মে ব্রিটিশদের বিদেশি অঞ্চল আটলান্টিক দ্বীপ সেন্ট হেলেনাতে। এখানকার আগ্নেয়গিরির মাটি এবং হালকা জলবায়ুতে একচেটিয়াভাবে চলে এই কফির চাষ।
এই কফির নেপথ্যে রয়েছে ১৮ শতকে দ্বীপে আগত ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ইতিহাস। তাদের মাধ্যমেই দ্বীপবাসীদের মধ্যে কফির আগ্রহ স্থাপন হয়। এখনও এটি কফি উৎসাহীদের শক্তি বর্ধক তৃষ্ণা মেটানোর পাশাপাশি দ্বীপের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
এই কফি তৈরির প্রক্রিয়ার জন্য সেন্ট হেলেনা দ্বীপের অনূকুল পরিবেশ প্রধান প্রভাবক। দ্বীপের আগ্নেয়গিরির মাটি এবং হালকা জলবায়ু সাহায্য করে এর বেড়ে ওঠাতে। সেই সঙ্গে যত্নশীল চাষাবাদ এবং প্রক্রিয়াকরণ পদ্ধতি এতে দান করে জগদ্বিখ্যাত স্বাদ। এসব কিছু একত্রে অবদান রাখে আমুল বৈচিত্র্যে, যার জন্য এর একটি আলাদা জায়গা তৈরি হয়েছে কফি শিল্পে।
সেন্ট হেলেনা কফির সীমিত যোগান এবং ব্যতিক্রমী স্বাদ নির্ধারণ করে এর প্রিমিয়াম মূল্য। নিয়মিত জাতগুলো প্রতি পাউন্ডে প্রায় ৮০ মার্কিন ডলারে(৮ হাজার ৭৫৪ বাংলাদেশি টাকা) বিক্রি হয়। এই ধরনের কফির সমকক্ষ না থাকায় কখনো এর দামের পরিধি বিস্তৃত হয় পাউন্ড প্রতি ১৪৫ মার্কিন ডলার(১৫ হাজার ৮৬৭ বাংলাদেশি টাকা) পর্যন্ত।
আরও পড়ুন: মধু দিয়ে মজাদার পাঁচ পদ
মোলোকাই প্রাইম
অসাধারণ হাওয়াইয়ান এই ঐশ্বর্য্য স্থানীয় আগ্নেয়গিরির মাটিসহ পুরো মোলোকাই দ্বীপের সমৃদ্ধ ঐতিহ্যের কেন্দ্রবিন্দু। এই কফির জাতটি প্রাথমিকভাবে লাল কাতুয়াই বীজের সমন্বয়ে গঠিত, যা দুই শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে চাষ করা হয়ে আসছে। তবে বাণিজ্যিকভাবে এর যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৮০-এর দশকে। মোলোকাই দ্বীপের অনন্য ভৌগলিক অবস্থান এবং খনিজ সমৃদ্ধ মাটি এই গাছের বিকাশের জন্য একটি আদর্শ ভিত্তি প্রদান করে।
এই কফির মূল বৈশিষ্ট্য হলো এর শক্তিশালী, সতেজ ও মজবুত গঠন। এর বীজ অধিক তাপে রোস্ট করার জন্য বেশ উপযুক্ত। এই গভীর শক্ত মেটে ভাবটা এসেছে আগ্নেয়গিরির মাটিতে বেড়ে ওঠার কারণে। ফলশ্রুতিতে, এর প্রক্রিয়াকরণটিও সম্ভব হয় বেশ ঝক্কি-ঝামেলামুক্তভাবে।
ব্যতিক্রমী মানের মোলোকাই প্রাইম কফির দামের তারতম্য ঘটে এর চাষ এবং প্রক্রিয়াকরণের সময় গৃহীত যত্নের উপর ভিত্তি করে। সাধারণত এর প্রতি পাউন্ডের মূল্য ৬০ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় ৬ হাজার ৫৬৬ টাকা।
আরও পড়ুন: গরমে শরীর ঠাণ্ডা রাখতে ৬ খাবার
কোনা এক্সট্রা ফ্যান্সি
এই কফি এসেছে হাওয়াইয়ের বিগ আইল্যান্ডের বিখ্যাত কোনা অঞ্চল থেকে। কফি চাষের সর্বোত্তম পরিবেশের জন্য বেশ সুপরিচিত এই জায়গা। হুয়ালালাই এবং মাউনা লোয়া ঢাল সহ কোনা জেলাগুলো এক সুবিধাজনক পরিবেশ প্রদান করে। এই পরিবেশে অন্তর্ভুক্ত রৌদ্রোজ্জ্বল সকাল ও বিকালের মেঘ-বৃষ্টি, শীতল রাত এবং খনিজ সমৃদ্ধ আগ্নেয়গিরির মাটি। পরিবেশের অসাধারণ এই সমন্বয় সাধনটিই নামের মত কফিটির স্বাদেও দিয়েছে ফ্যান্সি ফ্লেভার।
এর বিশেষত্ব হচ্ছে- এর স্বাদের ভারসাম্য এবং পানীয়ের রঙের উজ্জ্বলতা। দামের তাৎপর্যটি মূলত কোনা অঞ্চলের নামের সঙ্গে সংযুক্ত। এর সঙ্গে অবদান রাখে যত্ন সহকারে প্রক্রিয়াকরণটিও। পাউন্ড প্রতি ৭৫ মার্কিন ডলার (৮ হাজার ২০৭ বাংলাদেশি টাকা) খরচ করা হয় এই কফির পেছনে।
আরও পড়ুন: চিপসের পরিবর্তে কিছু স্বাস্থ্যকর বিকল্প খাবার
ফ্যাজেন্ডা স্যান্তা ইনেস
এই ব্রাজিলিয়ান রত্নের উৎপত্তিস্থল দক্ষিণ মিনাস গেরাইসের কারমো দে মিনাস অঞ্চলে। মান্টিকেইরা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থান এই খামারের, যেটি কয়েক যুগ ধরে গুণমান নিশ্চিত করে কফি চাষ করে আসছে।
বীজগুলো সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক প্রক্রিয়াকরণ পদ্ধতির মধ্য দিয়ে যায়। আবাদের সময় বীজের ত্বক শুকানোর কারণে ফলের স্বাদগুলো বীজের মধ্যে ঢুকতে পারে।
ফ্যাজেন্ডা স্যান্তা ইনেসের বিশেষ দিকগুলো হলো এর পানীয় এর মিষ্টি, উজ্জ্বল অম্লতা এবং লেবু-লবঙ্গ ফ্লেভার। এর চকোলাটি বডি এবং ক্রিমি মাউথফিল প্রতিটি চুমুককে স্বাদ এবং একই সঙ্গে সুগন্ধের আমেজ দেয়।
কফির বৈচিত্র্যময় প্রকৃতি, ঐতিহ্য এবং উদ্ভাবনের জন্য এর দামেও বেশ তারতম্য আসে। পাউন্ড প্রতি এই কফির মূল্য ৫০ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি টাকায় ৫ হাজার ৪৭১ টাকা।
আরও পড়ুন: জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছে নাটোরের কাঁচাগোল্লা
জ্যামাইকান ব্লু মাউন্টেন কফি
জ্যামাইকার বিখ্যাত নীল পাহাড়ে জন্মানো কফির জাতগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ঐশ্বর্য্যমন্ডিত কফি হচ্ছে এই ব্লু মাউন্টেন। এই অঞ্চলের উচ্চতা, জলবায়ু এবং মাটির সমন্বয় কফির ব্যতিক্রমী এবং পৃথিবী বিখ্যাত স্বাদে অবদান রাখে। প্রায় ৫ হাজার ফুট উপরে জন্মানো কফি চেরিগুলো সাবধানে হাতে বাছাই করা হয়। অন্যান্য কফি বীজের মত এগুলোতে হালকা তীক্ত স্বাদ নেই। আর এই ভিন্নতা বহুগুনে বাড়িয়ে দিয়েছে এদের প্রসিদ্ধি।
এই কফিটি টিয়া মারিয়া কফি লিকার তৈরিতেও ব্যবহৃত হয়। এটি কফিটিকে শুধুমাত্র এক কাপ পানীয় থেকে নিয়ে গেছে অনেকটা দূরে, যা এর বহুমুখিতার পরিচায়ক।
জ্যামাইকান ব্লু মাউন্টেন কফি বিশ্বের সবচেয়ে বিলাসবহুল এবং সব থেকে কাঙ্ক্ষিত কফিগুলোর মধ্যে একটি। এর দাম প্রতি পাউন্ডে ১৪০ মার্কিন ডলার (১৫ হাজার ৩২০ বাংলাদেশি টাকা)।
আরও পড়ুন: গরমে শরীর সতেজ রাখতে আইস-টি
পরিশিষ্ট
বিশ্বের সবচেয়ে দামি এই ১০টি কফি প্রমাণ করে যে, এই পানীয় এর যে কোনও প্রজন্মকে জয় করার শক্তি আছে। হোক সেটা অন্ধ কোনও গলি-ঘুপচির টঙের দোকানে বা চোখ ধাঁধানো আলোয় ভরা কোন পাঁচ-তারকা রেস্তোরাঁয়। কফি উৎসাহী হলেই প্রত্যেকে অকপটে আবিষ্কার করবে নিজেকে কফি কাপ হাতে। প্রতি চুমুকে স্বাদের আহ্বান ছাড়াও হাজারও আড্ডা ও সঞ্জীবনী শক্তির এক অনন্য রহস্যময়তার ধারক এই পানীয়। সেখানে এই কফিগুলোর সীমা ছাড়ানো দামের পরিধিতে বিচরণ করে অসংখ্য মানুষের জীবিকা। আর সেই অগণিত প্রথম চুমুকের শব্দ লুটায় যেন খেত থেকে লাখো লাখো কফি বীজ নিঙড়ানোর ইতিহাসের প্রতিধ্বনিতে।
আরও পড়ুন: কিডনি পরিশোধনকারী ১০টি ভেষজ চা