অনেক সময় দেখা যায়, আলমারি থেকে বই নামানোর সময় পাতাগুলো কালচে বা হলদেটে হয়ে মচমচে হয়ে গিয়েছে। কখনও পোকায় কেটে দেয় বই। কখনও বা পুরনো পাতা একটু তাড়াহুড়ো করে ওল্টাতে গেলেই ভেঙে যায় পাতা। আসলে বই রাখার স্থান সংকুলান কম হলেই এই ধরনের সমস্যা মাথাচাড়া দেয়।
বই মলাট দিয়ে পড়া বা বই পড়ার পর তা তুলে রাখলেই কিন্তু বইয়ের যত্ন শেষ হয়ে যায় না। দামি দুষ্প্রাপ্য বইও অযত্নে অনেক সময় নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু কিছু কৌশল মেনে চললে বইকে চিরসবুজ রাখা যায় সহজেই।
- ড্যাম্প ধরা দেয়ালে বইয়ের তাক তৈরি করবেন না। তাহলে বইয়ের পাতা নষ্ট হয়ে যায়। এ ছাড়া দেয়ালে উই পোকা বাসা বাঁধলেও সতর্ক হোন। তারাও বইকে ছাড় দেবে না। তাই দেয়ালের সংস্পর্শে বই না রেখে একটা পাটাতন দিয়ে তা আলাদা করুন। র্যাক কাঠের হলে সেই কাঠ অবশ্যই সিজন করিয়ে নিন।
- বইয়ের পাতা ওল্টানোর সময় থুতু লাগানোর অভ্যাস থাকলে আজই তা ছাড়ুন। এ অভ্যাস যেমন নিন্দনীয়, তেমনই বইয়ের পাতার অনেক ক্ষতি করে।
- ধীরে সুস্থে বইয়ের পাতা ওল্টান। খুব অধৈর্যভাবে তাড়াহুড়ো করে পাতা ওল্টাতে গেলেও অনেক সময় পাতা ছিঁড়ে যায়।
- সম্ভব হলে মলাট দিয়ে বই পড়ুন। বই মুড়ে পড়বেন না। যত চওড়া বই-ই হোক না কেন, পড়ার সুবিধার জন্য তা মুড়ে পড়বেন না। নইলে এক সময় মাঝের সলাই থেকে খুলে যাবে বই।
- প্রতি মাসে অন্তত এক বার বই নামিয়ে নরম কাপড়ে তার ধুলো ঝেড়ে কোনও মাদুর বা শতরঞ্চিতে ছড়িয়ে নরম রোদে দিন।
- বুক মার্ক ব্যবহারের সময় হালকা কোনও উপাদান ব্যবহার করুন। কাগজের টুকরো, পালক, রেশমি ফিতে ভাল বিকল্প হতে পারে।
- আলমারি বা বুক শেলফে বই রাখার সময় দুটো বইয়ের মধ্যে একটু ফাঁক রাখুন। কম ভারি বই শেলফের ওপরের দিকে রাখবেন। আলমারিতে কিছু ন্যাপথালিন রেখে দিন। মোটা বইগুলোর ভেতর কোনও কোনও পাতায় অল্প করে কালো জিরে ছড়িয়ে রাখুন। পোকামাকড়ের উৎপাত এতে অনেকটা কমবে। বইয়ের পাতার ভেতর নিমপাতা শুকিয়ে রাখলেও তা কাজে আসবে।
- উঁচু তাক থেকে বই নামানোর সময় ছুঁড়ে নিচে ফেলবেন না। এতে বইয়ের বাঁধাইয়ে চাপ পড়ে তা খুলে যেতে পারে।
কথায় বলে, বইয়ের চেয়ে বড় বন্ধু আর হয় না। সুতরাং প্রত্যেকের সেই প্রকৃত বন্ধুর প্রতি যত্ন নেয়া উচিত। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা