শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শতাধিক শিক্ষার্থী কলেজের সামনে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।
অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কলেজ ও ছাত্রাবাসে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে কলেজ বন্ধ থাকার পরেও ছাত্রাবাস কেন খোলা রাখা হয়েছিল সেটি বড় প্রশ্ন। বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ অবগত থাকার পরও ছাত্রাবাস বন্ধ না করায় ঐতিহ্যবাহী এই বিদ্যাপিঠে কলংকের দাগ লেগেছে।
এসময় শিক্ষার্থীরা ধর্ষণের ঘটনার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করার হুশিয়ারি দেন।
এদিকে গণধর্ষণের এ ঘটনার পর সকল শিক্ষার্থীকে ছাত্রাবাস ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। আজ দুপুর ১২টার মধ্যে তাদের ছাত্রাবাস ছাড়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে হোস্টেল সুপার জামাল উদ্দিন জানান, এমসি কলেজের অধ্যক্ষ আজ জরুরি বৈঠক ডেকেছেন। বৈঠকে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।
এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে গণধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মী সাইফুরের কক্ষ থেকে দেশি-বিদেশি অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। শনিবার সকালে পুলিশ বাদী হয়ে সাইফুরকে আসামি করে অস্ত্র আইনে এ মামলা দায়ের করে।
সিলেট মহানগর পুলিশের শাহ পরাণ (রহ.) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহপরান আব্দুল কাইয়ুম মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, সিলেট সরকারি এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে ধরে নিয়ে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে (১৯) গণধর্ষণের অভিযোগ ওঠে ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটলেও খবর পেয়ে রাত সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে নিয়ে আসে।
গণধর্ষণের এ ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতা সাইফুর রহমানসহ ৯ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের হয়েছে।
শনিবার ভোরে শাহপরান থানায় এ মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী ওই নারীর স্বামী। মামলায় ৬ জনের নাম উল্লেখ ছাড়াও অজ্ঞাতনামা ৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে স্ত্রীকে ‘গণধর্ষণ’, ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা
জানা যায়, শুক্রবার বিকালে ভুক্তভোগী নারী তার স্বামীকে নিয়ে এমসি কলেজে বেড়াতে যান। এসময় কয়েকজন যুবক তার স্ত্রীকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যেতে চাইলে চান। এতে স্বামী প্রতিবাদ করলে তাকে মারধোর শুরু করেন ছাত্রলীগের কর্মীরা। এক পর্যায়ে স্ত্রী ও তার স্বামীকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে নিয়ে যান। সেখানে স্বামীকে বেঁধে ছাত্রলীগের ৮/৯ জন নেতাকর্মী ওই তরুণীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন।
ভুক্তভোগী ওই তরুণী সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে অভিযুক্ত ৬ জনকে শনাক্ত করেছে পুলিশ, তারা হলেন- এমসি কলেজ ছাত্রলীগের নেতা ও কলেজটিতে ইংরেজিতে মাস্টার্সে অধ্যয়রত শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, একই শ্রেণিতে অধ্যয়নরত ছাত্রলীগ নেতা মাহফুজুর রহমান মাছুম, এমসি কলেজ ছাত্রলীগ নেতা এম সাইফুর রহমান, কলেজ ছাত্রলীগ নেতা অর্জুন এবং বহিরাগত ছাত্রলীগ নেতা রবিউল ও তারেক।