আন্দোলনের আয়োজক সংগঠন রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের নেতা সোহরাব হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন।
তারা শুক্রবার রাত ১টায় কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেন। এর আগে খুলনা বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের আহ্বানে সন্ধ্যায় শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের অংশগ্রহণে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে নয় পাটকলের সিবিএ-নন সিবিএ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
পাটকল শ্রমিকরা ১০ ডিসেম্বর বেলা ২টা থেকে থেকে অনশনে যান। এ কর্মসূচি চলাকালে আব্দুস সাত্তার নামে এক শ্রমিকের মৃত্যু এবং দুই শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েন।
ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান বলেন, শনিবার বিষয়টি নিয়ে তিনি বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর সাথে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যাবেন। এছাড়া শ্রমিকদের মজুরি কমিশন বিষয়ে পাট মন্ত্রণালয় আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক আহ্বান করেছে। সেখানে বিষয়টি সমাধান হবে। এ তথ্য জানিয়ে তিনি শ্রমিক নেতাদের অনশন কর্মসূচি আপাতত স্থগিত করার আহ্বান জানান।
শ্রমিক নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে এ পাটকল এবং শ্রমিকদের ব্যাপারে অত্যন্ত আন্তরিক। তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় খুলনায় বন্ধ হওয়া পাটকলগুলো চালু হয়েছে। এ সরকারের আমলে মজুরি কমিশন ২০১৫ পাশ হয়েছে এবং এ সরকারই তা বাস্তবায়ন করবে।’
অনশন কর্মসূচি স্থগিত থাকলেও এ জন্য বানানো প্যান্ডেল-স্টেজ সব ঠিক থাকবে বলে পাটকল শ্রমিক নেতারা জানিয়েছেন।
প্লাটিনাম জুট মিলের সিবিএ সভাপতি শাহানা শারমিন জানান, ১৫ ডিসেম্বরের বৈঠকে দাবি বাস্তবায়ন না হলে ১৭ ডিসেম্বর থেকে আবারও অনশন পালন করা হবে।
একই মিলের সিবিএ সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির বলেন, ‘শ্রম প্রতিমন্ত্রীর আশ্বাসের প্রেক্ষিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। খালিশপুরের বিআইডিসি সড়ক থেকে অনশনরত শ্রমিকরা ঘরে ফিরে গেছেন।’
এদিকে, আমরণ অনশন কর্মসূচি স্থগিত হওয়ায় চার দিন পর শনিবার সকাল থেকে পাটকল শ্রমিকরা কাজে যোগদান করতে থাকেন। সর্বশেষ ক্রিসেন্ট জুট মিলের শ্রমিকরা বেলা ২টার দিকে কাজে আসেন।
রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মুরাদ হাসোন বলেন, ‘রাতে অনশন স্থগিতের পর শনিবার সকাল থেকে শ্রমিকরা কাজে যোগ দিতে শুরু করেন। দুপুর ২টার দিকে ক্রিসেন্ট মিলের শ্রমিকরা কাজে যোগ দেন।’
প্লাটিনাম জুট মিলের সাবেক সিবিএ সভাপতি খলিলুর রহমান বলেন, ‘আমাদের মিলের শ্রমিকরা সকালে যোগদান এবং উৎপাদন শুরু করেছেন।’
মিলের প্রকল্প প্রধান মো. গোলাম রব্বানি জানান, এখন মিল এলাকা স্বাভাবিক রয়েছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের ডাকে গত মঙ্গলবার থেকে প্রায় ৫০ হাজার শ্রমিক অনশন কর্মসূচি শুরু করেন। শ্রমিকরা বলেছেন, তাদের নিয়মিত বেতন দেয়া হয়নি এবং এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের দাবিতে তারা রাস্তায় নামতে বাধ্য হন।
আন্দোলনে থাকা পাটকলগুলো হচ্ছে- ক্রিসেন্ট জুট মিল, খালিশপুর জুট মিল, দৌলতপুর জুট মিল, প্লাটিনাম জুবিলি জুট মিল, স্টার জুট মিল, আলিম জুট মিল, ইস্টার্ন জুট মিল, কার্পেটিং জুট মিল ও জেজেআই জুট মিল।