পার্বত্য চট্টগ্রামের সামাজিক উৎসব বৈসাবি উপলক্ষে খাগড়াছড়ি বেড়াতে আসা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ শিক্ষার্থীসহ ছয় জনকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের ঘটনায় পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক সশস্ত্র সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ প্রসীত) গ্রুপকে দায়ী করা হয়েছে।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) খাগড়াছড়ি সদরের গিরিফুল এলাকা থেকে টমটম চালকসহ তাদের অপহরণ করা হয়।
অপহৃত শিক্ষার্থীরা হলেন- চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী অলড্রিন ত্রিপুরা, একই বিভাগ ও একই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মৈত্রীময় চাকমা, নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী দিব্যি চাকমা, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী রিশন চাকমা এবং প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী লংঙি ম্রো। এরা সবাই ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, অপহরণের শিকার শিক্ষার্থীরা বিজু উৎসব উপলক্ষে বন্ধুদের সঙ্গে রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িতে বেড়াতে যায়। বিজু উৎসব শেষে গতকাল ১৫ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ফেরার উদ্দেশে বাঘাইছড়ি থেকে দিঘীনালা হয়ে খাগড়াছড়ি সদরে চলে আসে। ঐদিন চট্টগ্রামগামী বাসের টিকিট না পাওয়ার কারণে তারা পাঁচজন খাগড়াছড়ি শহর থেকে কিছু দূরে কুকিছড়া নামক জায়গায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে রাত্রি যাপন করে। সেখান থেকে আজ সকালে টমটম গাড়ি যোগে খাগড়াছড়ি সদরে আসার পথে গিরিফুল এলাকায় একদল অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী তাদের গাড়ি আটকায় এবং টমটম গাড়ির ড্রাইভারসহ ৫ জন শিক্ষার্থীকে সেখান থেকে অজ্ঞাত স্থানে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: ‘অপহরণের’ কায়দায় তুর্কি শিক্ষার্থীকে তুলে নিল মার্কিন পুলিশ
পিসিপি'র চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার তথ্য, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক রিবেক চাকমা অপহরণ ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বিরোধী সশস্ত্র সংগঠন ইউপিডিএফ (প্রসীত) অপহরণের ঘটনা ঘটিয়েছে জানিয়েছেন তিনি।
রিবেক চাকমা সংবাদমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে অপহৃত পাঁচজন শিক্ষার্থীর মধ্যে রিশন চাকমা পিসিপির (জেএসএস) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য বলে জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে অবিলম্বে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অপহৃত পাঁচজন শিক্ষার্থী ও ড্রাইভারকে সুস্থ শরীরে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছেন।
একইসাথে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে অতিদ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট( ইউপিডিএফ) প্রসীত গ্রুপের খাগড়াছড়ি জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা বলেন, আমরা সব সময় ভ্রাত্রিঘাতি সংঘাত, হানাহানি বন্ধের কথা বলে আসছি। সেখানে এমন ঘটনায় জড়িত থাকার প্রশ্নই ওঠে না। এই ঘটনায় ইউপিডিএফকে জড়ানোর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে দেখছেন বলেও জানান তিনি।
খাগড়াছড়ি সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল বাতেন মৃধা জানান, বিভিন্ন মাধ্যম থেকে অপহরণের ঘটনার কথা শুনেছেন। তবে থানায় এখনো পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি বলে জানান তিনি।