রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের ডাকা এ কর্মসূচিতে খালিশপুর, আটরা ও নওয়াপাড়া শিল্প এলাকায় প্রায় অর্ধ লাখ শ্রমিক-কর্মচারী অংশ নিয়েছেন।
অনশনে অংশ নিয়ে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত ৮ শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদের মধ্যে প্লাটিনাম জুট মিলের তাঁত বিভাগের মো. আবু ও ফিনিসিং বিভাগের মো. শাহ আলমকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া, অনশন স্থলে অর্ধশতাধিক শ্রমিককে স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে।
এর আগে, পাট খাতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ, বকেয়া মজুরি-বেতন পরিশোধ, জাতীয় মজুরি ও উৎপাদনশীলতা কমিশনের রোয়েদাদ ২০১৫ কার্যকর, অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক-কর্মচারীদের পিএফ ও গ্রাচ্যুইটির অর্থ পরিশোধ এবং চাকরিচ্যুত শ্রমিক-কর্মচারীদের পুনর্বহালসহ ১১ দফা দাবিতে গত ১০ ডিসেম্বর থেকে অনশনে যান শ্রমিকরা।
এ কর্মসূচি চলাকালে ১৩ ডিসেম্বর রাতে খুলনা বিভাগী যুগ্ম শ্রম পরিচালকের অধিদপ্তরে আন্দোলনরত শ্রমিক নেতাদের সাথে জরুরি বৈঠকে বসেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান। দাবি পূরণে তার প্রতিশ্রুতিতে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত অনশন স্থগিত করা হয়। পরে ১৫ ডিসেম্বর বিজেএমসিতে এবং ২৬ ডিসেম্বর শ্রম মন্ত্রণালয়ে শ্রমিক নেতাদের সাথে বৈঠকে প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান আবারও প্রতিশ্রুতি দিয়ে এক মাস পর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করার কথা বলেন। কিন্তু রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের নেতারা প্রতিমন্ত্রীর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনে ফিরে আসেন এবং পুনরায় অনির্দিষ্টকালের অনশন কর্মসূচির ঘোষণা দেন।
খালিশপুরের ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, খালিশপুর ও দৌলতপুর এবং দিঘলিয়ার স্টার মিলের শ্রমিকরা বিআইডিসি রোডে এবং আটরা শিল্প এলাকার আলীম, ইস্টার্ন ও নওয়াপাড়া শিল্প এলাকার কার্পেটিং ও জেজেআই মিলের শ্রমিকরা নিজ মিল গেটে অবস্থান নিয়ে অনশন পালন করছেন। তীব্র শীতের মধ্যে অবস্থান করা অনাহারী শ্রমিকরা একের পর এক অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। শ্রমিকরা বিআইডিসি রোড ও খুলনা-যশোর মাহাসড়কে প্রায় ২ কিলোমিটার রাস্তায় অবস্থান নিয়েছেন।
আন্দোলনের ফলে ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, খালিশপুর, দৌলতপুর, স্টার, আলীম ও ইস্টার্ন জুট মিলের উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। তবে জেজেআই ও কার্পেটিং জুট মিলের শ্রমিকরা উৎপাদন অব্যাহত রেখে কর্মসূচি পালন করছেন। কর্মসূচি চলাকালে খালিশপুর, আটরা ও রাজঘাট এলাকায় দফায় দফায় শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।