মঙ্গলবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (ডেন্টাল শিক্ষা) ডা. মো. মোশাররফ হোসেন খন্দকারের নেতৃত্বে উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল সরেজমিন পরিদর্শন করেন। অত্যাধুনিক পূর্ণাঙ্গ ডেন্টাল কলেজটি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের দ্বোরগোড়ায় পৌঁছে যাবে ওরাল অ্যান্ড ডেন্টাল চিকিৎসা সেবা।
সূত্রমতে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর যশোরে এক অনুষ্ঠানে খুলনায় ডেন্টাল কলেজ প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেন। তার ঘোষণার প্রেক্ষিতে তৎকালীন স্বাস্থ্য সচিব বর্তমানে জনপ্রশাসন সচিব ইউসুফ হারুন, বিভাগীয় কমিশনার ড. মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন এবং জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন ও দন্ত বিশেষজ্ঞ ডা. শহিদুজ্জামান বাবলু সম্ভাব্য জায়গা অনুসন্ধান শুরু করেন। শুরু হয় খুলনা ডেন্টাল কলেজ প্রতিষ্ঠার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের চিকিৎসা শিক্ষা-১ অধিশাখার উপসচিব মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বাকউল স্বাক্ষরিত এক স্মারকে একই বিভাগের অতিরিক্ত সচিবকে (উন্নয়ন) খুলনা বিভাগের খুলনা জেলায় একটি ডেন্টাল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপনের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর নীতিগত সম্মতি প্রদানের বিষয়টি অবহিত করেন। নবসৃষ্ট কলেজটির স্থায়ী ক্যাম্পাস স্থাপনের লক্ষ্যে ভৌত অবকাঠামো সৃষ্টির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল ওই স্মারকে।
এরই মধ্যে, গত ১২ মার্চ খুলনা ডেন্টাল কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ডা. অসীম কুমার সাহাকে। তিনি ওএসডি হিসাবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চাকরিরত এবং কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজে সংযুক্ত ছিলেন।
জমি অধিগ্রহণ ও একাডেমিক কার্যক্রম চালুর বিষয়ে কার্যক্রম এগিয়ে নেয়ার দায়িত্ব দেয়া হয় নবনিযুক্ত অধ্যক্ষকে। কলেজটি পূর্ণাঙ্গরূপে প্রতিষ্ঠিত হলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের দাঁতের চিকিৎসায় নতুন যুগের সূচনা বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, মাথাভাঙ্গা মৌজার ২০ একর জমিতে খুলনা ডেন্টাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল নির্মাণ হবে। তার পাশেই প্রস্তাবিত শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা-মাওয়া হাইওয়ে বাইপাস, অন্যপাশে খুলনা-মংলা রেল লাইন, পাশে প্রস্তাবিত একটি অত্যাধুনিক কিডনি হাসপাতাল, শেখ কামাল আইটি পার্কসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনা গড়ে উঠবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. মো. মোশাররফ হোসেন খন্দকারের নেতৃত্বে সরেজমিন পরিদর্শন টীমে ছিলেন খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. জিয়াউর রহমান, স্বাচিপ’র কেন্দ্রীয় নেতা ও বিএমএ খুলনার সাধারণ সম্পাদক খুমেক উপাধ্যক্ষ ডা. মেহেদী নেওয়াজ, ডেন্টাল বিশেষজ্ঞ ডা. শাহীদুজ্জামান বাবলু ও ডা.আসমা জামান প্রমুখ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (ডেন্টাল শিক্ষা) ডা. মো. মোশাররফ হোসেন খন্দকার বলেন, ‘জায়গাটি ডেন্টাল কলেজের জন্য উপযুক্ত মনে হয়েছে। বিভাগীয় শহর খুলনায় ডেন্টাল কলেজের অসীম প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। সেভাবেই দ্রুততার সাথে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন বলেন, ‘নগরীর লবনচরা থানার পাশেই হবে খুলনা ডেন্টাল কলেজ। তার পাশেই প্রস্তাবিত শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, নির্মাণাধীন খুলনা-মংলা রেল লাইন এবং পদ্মাসেতু। এসব নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে খুলনার চিত্র পাল্টে যাবে। ’