চট্টগ্রামে লাগেজ ভর্তি খণ্ডিত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় নিহত হাসানের মাথার সন্ধানে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এলাকায় তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
সোমবার (২ অক্টোবর) হাসানের পুত্রবধূ আনারকলিকে নিয়ে দ্বিতীয় দিনের মতো তল্লাশি চালায় পিবিআই টিম। তবে আনারকলির দেখানো মতে সাগর পাড়ে বড় বড় পাথরের ফাঁকে তন্নতন্ন করে খুঁজেও ভুক্তভোগীর কাটা মাথার সন্ধান পাওয়া যায়নি।
মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা ও পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটের পরিদর্শক মো. ইলিয়াস খান জানান, আনারকলিকে কক্সবাজারের মহেশখালী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন শনিবার আদালতে হাজির করলে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ৮ টুকরো লাশের রহস্য উদঘাটন
তিনি বলেন, আনারকলি হাসান হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত নয়। তবে তিনি হত্যার আলামত গোপনে সহযোগী। প্রথমে তাকে নিয়ে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো দা উদ্ধার করা হয়। এরপর রবিবার ও সোমবার তাকে নিয়ে ভুক্তভোগী হাসানের কাটা মাথা উদ্ধারে অভিযানে যাই। কিন্তু এখনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
মো. ইলিয়াস খান জানান, পতেঙ্গায় টানেলের প্রবেশমুখে একটি পুলিশ বক্স আছে। এর পেছনে পাথরের ব্লকের ভেতরে খণ্ডিত মাথাটি আছে বলে আনারকলি আমাদের দেখিয়ে দেন। আমরা কয়েকঘণ্টা তল্লাশি চালিয়েছি। সেখানে লাশ পচা দুর্গন্ধও পেয়েছি, কিন্তু জোয়ার চলে আসার কারণে মাথাটি পাওয়া যায়নি। আমাদের ধারণা, ব্লকের ভেতরে মাথাটি এখনও আটকে আছে। আগামীকাল (মঙ্গলবার) ভোরে ভাটার সময় আবারও তল্লাশি চালানো হবে।
খুনের শিকার মো. হাসান চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার কাথারিয়া ইউনিয়নের বড়ইতলী গ্রামের সাহাব মিয়ার ছেলে। সম্পত্তির ভাগভাটোয়ারা নিয়ে বিরোধের জেরে মা ছেনোয়ারা বেগমের সহযোগিতায় বড় ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান বাবাকে হত্যা করেছে বলে পুলিশ জানায়।
গত ২১ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় নগরীর পতেঙ্গা বোট ক্লাবের অদূরে ১২ নম্বর গেইটে একটি ট্রলিব্যাগ পাওয়া যায়। কফি রঙের ট্রলিব্যাগে ছিল মানব শরীরের দুই হাত, দুই পা, কনুই থেকে কাঁধ এবং হাঁটু থেকে উরু পর্যন্ত অংশ। এ ঘটনায় পতেঙ্গা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল কাদির বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ইতোমধ্যে ভুক্তভোগী হাসানের স্ত্রী ছেনোয়ারা বেগম (৫০) ও তাদের বড় ছেলে মোস্তাফিজুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। গত ২৭ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর রহমান চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাদ্দাম হোসেনের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এতে তিনি বাবাকে হত্যার কারণ, কীভাবে হত্যা করা হয় এবং কীভাবে মরদেহ ফেলে দেওয়া হয় তার বর্ণনা দেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩