সংস্থার বিভাগীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ২০০৪ সালে তৈরি এসব গাড়ির স্ক্র্যাপ কার্যক্রম সম্পন্ন করে নতুন চার হাজার অটোরিকশা নামানো হচ্ছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ভারতীয় জুয়াড়ি সন্দেহে গ্রেপ্তার তিনজন রিমান্ডে
কোনো ধরনের ঝামেলা ছাড়াই অটোরিকশাগুলো স্ক্র্যাপ করতে পেরে খুশি মালিক ও চালকরা। এখন এসব মালিকের অনুকূলে নতুন কেনা গাড়ির নিবন্ধন দিচ্ছে চট্টগ্রাম বিআরটিএ।
এদিকে, অটোরিকশা সংশ্লিষ্ট গুটিকয়েক ব্যক্তিবিশেষ সরকারের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিআরটিএ কর্মকর্তারা। তাদের দাবি, যাত্রী কল্যাণ সমিতির নেতারা সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে জানতে চাইলে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমরা সিএনজি অটোরিকশা রিপ্লেসমেন্ট কার্যক্রমে অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদ করছি। সরকারি সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছি না।’
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার ৩
চট্টগ্রাম বিআরটিএ কর্মকর্তারা জানান, ২০০১ সাল থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে ১৩ হাজার করে ২৬ হাজার সিএনজিচালিত অটোরিকশার নিবন্ধন দিয়েছিল বিআরটিএ। এসব গাড়ি নিবন্ধনের সময় মেয়াদ বা আয়ুষ্কাল নির্ধারণ করা হয়েছিল নয় বছর।
মালিক ও চালকদের দাবির মুখে পরে তিন দফায় অটোরিকশাগুলোর মেয়াদ বাড়িয়ে ১৫ বছর করা হয়। ওই মেয়াদ শেষে পরিবেশগত ক্ষতির প্রভাবমুক্ত হতে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ইতোমধ্যে ঢাকায় নিবন্ধিত ১৩ হাজার অটোরিকশা স্ক্র্যাপ করে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। চট্টগ্রামে ২০০১, ০২ ও ০৩ মডেলে তৈরিকৃত এমন সাড়ে পাঁচ হাজার অটোরিকশাও ২০১৮ ও ১৯ সালে প্রতিস্থাপন সম্পন্ন হয়।
আরও পড়ুন: জুয়াড়ি সন্দেহে চট্টগ্রাম স্টেডিয়াম এলাকা থেকে ৩ ভারতীয় আটক
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে মেয়াদোত্তীর্ণ ২০০৪ মডেলের অটোরিকশার স্ক্র্যাপকরণ প্রায় ১০ মাস বন্ধ ছিল। গত ১৬ নভেম্বর থেকে পুনরায় এ কাজ শুরু করে চট্টগ্রাম বিআরটিএ। গত ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে তিন হাজার ৬১৯টি পুরোনো অটোরিকশা স্ক্র্যাপ করা হয়েছে।
বিআরটিএ কার্যালয় ঘুরে দেখা যায়, অটোরিকশা মালিকরা সরকারের নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে নতুন রিপ্লেসমেন্ট নম্বর নিচ্ছেন। বিআরটিএ কর্মচারীরা যাতে কোনো ধরনের অনিয়ম করতে না পারেন যে জন্য বেসরকারি কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে ডাটা এন্ট্রি করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ইমাম ডেন্টিং, জাফর অ্যান্ড কোম্পানি, রাজামিয়া অ্যান্ড সন্স, এসবি করপোরেশন, গাউসিয়া ট্রেডার্স, মেসার্স দিলু মিয়া, বিসমিল্লাহ এন্টারপ্রাইজ, মঞ্জুর অ্যান্ড কোম্পানি ও শাহজালাল এন্টারপ্রাইজ। বেসরকারি খাতে ডাটা এন্ট্রি করার কারণে কাউকে অতিরিক্ত টাকা দিতে হচ্ছে না।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম টেস্ট: জয়ের জন্য উইন্ডিজের প্রয়োজন ২৮৫ রান, টাইগারদের ৭ উইকেট
নুরুল ইসলাম নামে একজন অটোরিকশা মালিক বলেন, ‘আমি চট্টগ্রাম বিআরটিএ কার্যালয় থেকে চারটি সিএনজি স্ক্র্যাপ করিয়েছি। এ জন্য দালালরা আমার কাছে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা চেয়েছিল। আমি কাউকে টাকা প্রদান করিনি।’
বিআরটিএ চট্ট মেট্রো সার্কেলের সহকারী পরিচালক তৌহিদুল হোসেন জানান, স্ক্র্যাপকরণের জন্য তারিখ ভিত্তিতে গাড়ির নম্বর উল্লেখ করে চট্টগ্রামের বহুল প্রচারিত পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়া হয়েছিল। কোনো সমস্যা ছাড়াই সিএনজিগুলো স্ক্র্যাপ করা হয়েছে। এখন এগুলোর রিপ্লেসমেন্ট নম্বর দেয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামের ১৪ উপজেলায় পৌঁছেছে করোনার টিকা
চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিআরটিএ উপপরিচালক (প্রকৌশল) মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, ‘নিয়ম মেনেই চট্টগ্রামের অটোরিকশাগুলো পর্যায়ক্রমে স্ক্র্যাপ করা হয়েছে। কেউ যাতে ভোগান্তির মধ্যে না পড়েন সে জন্য পরিবেশ ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিআরটিএ কার্যালয়ের সামনে ম্যাজিস্ট্রেট ও বিভিন্ন গোয়েন্দার সংস্থার উপস্থিতিতে স্ক্র্যাপ করা হয়েছে। এতে কোনো অনিয়মের সুযোগ ছিল না। এখন নতুন রিপ্লেসমেন্ট নম্বর দেয়া হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম-দোহাজারী রেললাইনে যুক্ত হচ্ছে ডেমু ট্রেন