চটগ্রামে বর্তমানে ৯৩ শতাংশ করোনা রোগীই উচ্চ সংক্রমণশীল ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত। নগরী ও গ্রামে ডেল্টার সংক্রমণ সমানভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। সংক্রমিত রোগীর মধ্যে আছেন তরুণ, যুবক, মধ্যবয়সী ও বৃদ্ধ।
করোনা রোগীর জিনোম সিকোয়েন্স উন্মোচনের পর শুক্রবার গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান গবেষণা প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু)।
আরও পড়ুনঃ দেশে করোনা আক্রান্তদের ৯৮ শতাংশ ডেল্টায় সংক্রমিত: বিএসএমএমইউ
সম্প্রতি সিভাসু এবং ঢাকা বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ যৌথভাবে এ গবেষণাটি সম্পন্ন করেছে। গবেষণায় দেখা যায়, ডেলটা ভ্যারিয়েন্ট শহর ও গ্রামে সমানভাবে ছড়িয়েছে। ৩০ জনের মধ্যে ২৮ জনই করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হয়েছেন। অবশিষ্ট দুজন রোগীর একজন যুক্তরাজ্য ভ্যারিয়েন্ট এবং অপরজন চীনের উহানের একটি ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হয়েছেন।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকা থেকে ১৫ জন ও উপজেলা থেকে ১৫ জন করোনা রোগীর নমুনা পরীক্ষা করে এমন তথ্য দেন তারা। দ্রুত ছড়াতে পারে একজন থেকে অন্যজনে।
আক্রান্ত ৩০ জনের মধ্যে নগরীর ১৪ জন ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ও নগরীর বাইরে ১৪ জন ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়।
আরও পড়ুনঃ চট্টগ্রামে করোনা আক্রান্ত শতভাগ শিশুর দেহে ডেল্টা ধরন
সিভাসুর উপাচার্য অধ্যাপক ড. গৌতম বুদ্ধ দাশের তত্ত্বাবধানে ‘কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি মূল্যায়ন’ শীর্ষক এই গবেষণায় পোলট্রি রিসার্চ ও ট্রেনিং সেন্টার (পিআরটিসি) সহযোগিতা করে।
ড. গৌতম বুদ্ধ বলেন, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট অত্যন্ত সংক্রামক। এটি এখন দেশজুড়ে করোনাভাইরাসের প্রভাবশালী স্ট্রেইন। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট যখন কাউকে আক্রান্ত করে তখন তার শরীরে সেই ভাইরাসটি সংখ্যায় অনেক বেশি থাকে। অর্থাৎ, ভাইরাসটি খুব দ্রুত তাদের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে পারে। যার ফলে আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশি থেকে অধিক সংখ্যক ভাইরাস বেরিয়ে আসে, যা সহজেই অন্যকে আক্রান্ত করতে পারে।
আরও পড়ুনঃ চট্টগ্রামে করোনায় প্রাণ গেল আরও ১৭ জনের
তিনি আরও বলেন, ১ জুলাই থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ১৫ জন রোগী ও আক্রান্ত ১৫ জন যারা হাসপাতালে আসেননি এমন রোগীর নমুনা সংগ্রহ করেছি। এদের মধ্যে ১৮ জন পুরুষ, ১২ জন নারী আছেন। ডেলটা ভ্যারিয়েন্টের আক্রমণ প্রথমে সীমান্তবর্তী জেলায় ও পরে ঢাকায় শুরু হয়েছিল। চট্টগ্রামে দু-একজন রোগী পাওয়া গেলেও বর্তমান ঢেউয়ের জন্য কোন ভ্যারিয়েন্ট দায়ী তা জানা যাচ্ছিল না। আমরা মূলত গবেষণা করে সেটিই বের করেছি। এটি চিকিৎসক ও করোনা চিকিৎসার ক্ষেত্রে অনেক সহায়ক হবে বলে আমার বিশ্বাস।‘
গবেষণায় ড. গৌতম বুদ্ধ দাশের নেতৃত্বে সাত জন শিক্ষক অংশ নেন।