চাঁদপুর শহরে বৃদ্ধ বাবাকে মেয়ের মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনায় ফাতেমা আক্তার শিল্পী নামের ওই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।
রবিবার (৮ অক্টোবর) দুপুর পর্যন্ত ফাতেমা আক্তার চাঁদপুর সদর মডেল থানা হেফাজতে বলে জানায় পুলিশ। এর আগে শনিবার (৭ অক্টোবর) দিনগত রাতে শহরের নিউ ট্রাক রোডের কলমতর খান বাড়ি থেকে তাকে আটক করেন।
আরও পড়ুন: দক্ষিণ বনশ্রী থেকে অপহৃত শিক্ষক উদ্ধার, আটক ৫
ফাতেমা আক্তার শিল্পী চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজের মাস্টার রোলের একজন কর্মচারী। ভুক্তভোগীর নাম মনির হোসেন খান। তার কোনো ছেলে নেই। ফাতেমাসহ তার তিন মেয়ে রয়েছে।
বৃদ্ধ মনির খানের প্রতিবেশী শাহজাহান খান ও তার স্ত্রী গুলশান আরা বেগম বলেন, ঘর থেকে প্রায় সময় বাবা মনির খান ও মেয়ে ফাতেমার উচ্চস্বরে আওয়াজ শোনা যায়। অনেক সময় মনির খানের কান্নাও শোনা যায়। সম্প্রতি মেয়ের সঙ্গে পারিবারিক বিষয় নিয়ে বিবাদ হওয়ায় মনির হোসেনকে বিভিন্ন স্থানে বসে বিড় বিড় করতে দেখা যায়।
তারা আরও বলেন, বিছানায় প্রস্রাব করায় শুক্রবার (৬ অক্টোবর) সকালে গোসল করানোর সময় তাকে মারধর করেন মেয়ে ফাতেমা। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে তিনি নিরুপায়। তার স্ত্রীও বৃদ্ধ। তিনিও অসুস্থ ও বিছানায় শয্যাশায়ী।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিওতে দেখা গেল বাবাকে মারধর করছে মেয়ে। অসহায় বাবা প্রতিবাদের ভাষা হারিয়ে মেয়ের দিকে তাকিয়ে আছেন।
শনিবার (৭ অক্টোবর) রাতে কয়েকটি অনলাইন প্লাটফরমে বাবাকে মারধরের ঘটনার একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়। তারও আগে শুক্রবার (৬ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ফাতেমা আক্তার তার বাবা মনির খানকে গোসলা করাতে নিয়ে মারধর করেন। পাশ্ববর্তী কোনো ব্যক্তি ওই ভিডিও ধারণ করলে পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মো. মাসুদুর রহমান ইউএনবিকে জানান, ভাইরাল ভিডিওটিতে দেখা যায় ফাতেমা আক্তার শিল্পীকে অনেকেই অত্র কলেজের শিক্ষক হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। মূলত তিনি মাস্টার রোলের একজন কর্মচারী এবং ল্যাব সহকারী পদে কর্মরত। তিনি কলেজের শিক্ষাসংক্রান্ত কোনো কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়।
ভিডিওটিতে প্রচারিত ঘটনাটি একান্তই তার ব্যক্তিগত ও পারিবারিক বিষয়। এ বিষয়টি বর্তমানে আইনি প্রক্রিয়াধীন। এমতাবস্থায় কলেজ প্রশাসন তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে। তারপরও কলেজ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অধিকতর অবগতির জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটির তদন্তের ভিত্তিতে কলেজ কর্তৃপক্ষ পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শেখ মুসহীন আলম ইউএনবিকে জানান, ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পরে পুলিশ সুপারের নির্দেশে আমরা ফাতেমা আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছি। সকালে তার বাবা থানায় এসেছেন। তিনি এখনো কোনো অভিযোগ করেননি।
তিনি বলছেন- মেয়েকে জেলে দিলে তাকে কে দেখবে?
চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, এই ঘটনার পর পুলিশ ওই মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সদর মডেল থানা হেফাজতে রেখেছে। পরিবার থেকে অভিযোগ দেওয়া হলে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তদন্ত আ. রাজ্জাক জানান, এখনো কোনো মামলা হয়নি।
আরও পড়ুন: মধুমতি নদীতে আটকে পড়া ১৮ নাবিক উদ্ধার
বিমানের ফ্লাইটে কারিগরি সমস্যা: দুবাই বিমানবন্দরে ১০ ঘণ্টার বেশি সময় আটকা ২৬৮ যাত্রী