বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ (ভারপ্রাপ্রাপ্ত) আদালতের বিচারকের খাস কমরায় এ অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার পর জেলা আইনজীবী সমিতির এক জরুরি সভায় জেলা ও দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক বজলুর রহমানের প্রত্যাহার দাবি করেন আইনজীবীরা। একই সাথে আদালতের দুই নাজির জহুরুল ইসলাম ও মাসুদুর রহমানসহ হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। এ দুটি দাবিতে আইনজীবীরা অনির্দিষ্টকালের জন্য আদালত বর্জনের ঘোষণা দেন।
আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন: সভাপতি খসরু, সম্পাদক কাজল নির্বাচিত
জানা গেছে, আদালতের এক কর্মচারীর (নাজির) বদলির বিষয় নিয়ে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (ভারপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ) বজলুর রহমানের খাস কামরায় যান আইনজীবী সমতিরি সভাপতি সাধারণ সম্পাদকসহ নির্বাহী কমিটির ১৫ জন সদস্য। এসময় আইনজীবীদের সাথে বিচারকের মতপার্থক্য তৈরি হলে সেখানে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এ অবস্থায় আদালতের অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিচারকের কার্যালয়ে গেলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়। সেখানে আইনজীবীদের ওপর হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ করেন বার সদস্যরা। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনার কিছুক্ষণ পরই এক আইনজীবীর সহকারীকে আটকের খবরে আবারও উত্তপ্ত হয় আদালত প্রাঙ্গণ। আইনজীবীরাও বাঁশ লাঠি নিয়ে পুলিশের ওপর চড়াও হলে আদালত প্রাঙ্গণে আতঙ্ক ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
আরও পড়ুন: সিলেটে রায়হান হত্যা: আইনজীবী পাননি এসআই আকবর
জরুরি সভায় জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আলগীর হোসেন বলেন, সাবেক জেলা ও দায়রা জজ মো. রেজা আলমগীর হাসান গত ১৫ মার্চ আদালতের নাজির মাসুদুর রহমানকে প্রত্যাহার করে ওই পদে নুরুল ইসলামকে নিয়োগ দেন। কিন্তু তার নিয়োগের পরও মাসুদুর রহমানসহ তার সহযোগীরা নুরুল ইসলামকে যোগদানে নানাভাবে বাধা প্রদান করছেন। বিষয়টি সুষ্ঠু সমাধানের জন্য বিচারকের কাছে গেলে সেখানে আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায়। এতে দুই আইনজীবী আহত হন।
এদিকে, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নাজির ওসমান গণি বলেন, কর্মচারীর বদলির বিষয় নিয়ে আইনজীবীরা বিচারকের কার্যালয়ে গিয়ে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন। এসময় তারা বিচারকের টেবিলেও ভাঙচুর চালায়। আমরা প্রতিবাদ করায় আামাদের ওপরও হামলা করেন তারা।
আরও পড়ুন: প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে প্রোবোনো অ্যাওয়ার্ড পেলেন আইনজীবী ইশরাত
বিষয়টি উচ্চ আদালতে জানানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি জানান, হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান জানান, আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে আইনজীবীদের একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। উভয় পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ কাজ করছে।