দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান জানান, প্রবল ঘূর্ণিঝড় হামুনের কারণে ১০টি জেলাকে ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করছেন তারা।
তিনি বলেন, এসব অঞ্চলের লোকজনকে মঙ্গলবার রাত ৮টার মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে ব্রিফকালে তিনি এসব তথ্য জানান।
কোন ১০টি জেলা বেশি ঝুঁকিপূর্ণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও চাঁদপুর।
তিনি বলেন, এসব জেলায় আশ্রয় কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে মেডিকেল টিমও গঠন করা হয়েছে। পর্যাপ্ত জরুরি ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রি নিয়েও তারাও প্রস্তুত রয়েছে। আর গবাদিপশু সরিয়ে আনতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: দুর্যোগ উত্তর পুনর্গঠনে প্যারাডাইম শিফটে কাজ করছে সরকার: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
মন্ত্রী বলেন, গতকাল সোমবার নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় হামুনে পরিণত হয়েছে। এটি চট্টগ্রাম এবং বরিশালের দিকে উত্তরপূর্ব অভিমুখে বাংলাদেশের উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে। বর্তমানে এটি পায়রা বন্দর থেকে ৩১০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থান করছে। এর বাতাসের গতিবেগ ৮৯ কিলোমিটার থেকে ১১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত রেকর্ড করা হয়েছে।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার রাত ১০টা থেকে আগামীকাল সকাল ১০টার মধ্যে উপকূলে আঘাত হানতে পারে। গতিপথটি অর্থাৎ ঘূর্ণিঝড়ের আওতা একদিকে চট্টগ্রাম, অন্যদিকে বরিশালকে স্পর্শ করবে। ঘূর্ণিঝড়ের চোখটি বরগুনা, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও চট্টগ্রামের মধ্য দিয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, এ অবস্থায় আবহাওয়া অধিদপ্তর ৭ নম্বর বিপৎসংকেত দিয়েছে। দুটি পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে উপকূলীয় এলাকাগুলোতে। ৭ নম্বর বিপৎসংকেত দিলে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষদের আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া আছে। সে অনুযায়ী, এই মুহূর্ত থেকে আমাদের মাঠপ্রশাসনের ও স্বেচ্ছাসেবকরা দুর্গত লোকদের আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া শুরু করবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করেছি। আমাদের মাঠপ্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবীরা সেখানে কাজ করছেন। সেখানে রান্না করা খাবার ও সুপেয় পানি, শিশুদের খাবার ও গোখাদ্য দেওয়ার জন্য আমরা এরইমধ্যে অর্থ বরাদ্দ করেছি। প্রতি জেলায় ২০ লাখ টাকা, ৫০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এক কোটি টাকা গোখাদ্য ও সমপরিমাণ টাকা শিশুখাদ্যের জন্য দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের আজকের সরকারি ছুটি বাতিল করা হয়েছে। উপকূলীয় অঞ্চলের মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর ও মাঠপর্যায়ের কর্মাকর্তারা কাজ করছেন। গতবছরের সিত্রাং ঘূর্ণিঝড় থেকে হামুনের গতিপথ একই ধরনের, যদিও একটু উত্তরপশ্চিমের দিকে আছে। কিন্তু গতিপথ ও গতি অনেক একই রকম। যে কারণে একটু অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: শৈশবেই শেখ রাসেল ছিলেন মানবিক: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী