ফরিদপুরের নগরকান্দায় শতবর্ষী এক বৃদ্ধা মাকে পরিত্যক্ত গোয়াল ঘরে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে ওই বৃদ্ধার একমাত্র ছেলের বিরুদ্ধে।
স্থানীয় প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের হস্তক্ষেপে অবশেষে ওই বৃদ্ধাকে উদ্ধার করা হয়েছে।
জানা যায়, নগরকান্দা পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের করপাড়া এলাকার রমেন মন্ডল তার শতবর্ষী মা রাজেশ্বরী মন্ডলকে একটি পরিত্যক্ত ঘরে তালাবদ্ধ অবস্থায় আটকে রাখছেন দীর্ঘদিন যাবত। রমেন মন্ডল উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা হিসেবে চাকরি শেষে সম্প্রতি অবসরে গেছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, একটি পরিত্যক্ত তালাবদ্ধ ঘরে জরাজীর্ণ অবস্থায় ওই বৃদ্ধাকে রাখা হয়েছে। তালা খুলে দেখা গেছে ওই শতবর্ষী বৃদ্ধা ময়লা আবর্জনার ভিতর তীব্র গরমে কাতরাচ্ছে। ঘরের মধ্যে কোন পাখা নেই, না পাচ্ছে ঠিকমতো খাবার, না পাচ্ছে একটু পানি। একমাত্র ছেলে ও ছেলের বউ আরাম আয়েসে আলিশান ঘরে থাকলেও সেই ঘরে জায়গা হয়নি বৃদ্ধা মায়ের।
দরজার তালা খোলা মাত্রই এই প্রতিবেদককে দেখে হাউমাও করে কেঁদে উঠেন ওই বৃদ্ধা। পরে তাকে উদ্ধার করে ছেলের ঘরে নিয়ে পাখার নিচে বসালে তিনি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন।
নগরকান্দা প্রেসক্লাবের সভাপতি বোরহান আনিস বলেন, ‘পৌরসভার করপাড়ায় এক বৃদ্ধাকে আটকে রাখা হয়েছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে ওই বাড়িতে আমি সহ প্রেসক্লাবের সাংবাদিকরা যাই। সেখানে গিয়ে দেখতে পাই ওই বৃদ্ধাকে একটি পরিত্যাক্ত গোয়ালঘরে আটকে রাখা হয়েছে। আমরা সেখান থেকে ওই বৃদ্ধাকে বের করে নিয়ে আসি।’
তিনি বলেন, ‘ওই বৃদ্ধা খুব ক্ষুধার্ত ছিল, তাকে তাৎক্ষনিক আম খেতে দেয়া হয়। পরে তার ছেলেকে এ বিষয়ে চাপ প্রয়োগ করলে তিনি তার ভুল স্বীকার করে মাকে আর কষ্ট দিবেন না বলে আমাদের আশ্বস্ত করেন।’
ওই বৃদ্ধার ছেলে রমেন মন্ডল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘দরজা খোলা থাকলে বিভিন্ন দিকে চলে যায় মা। তাই আমি তাকে আটকিয়ে রাখি। আমার ভুল হয়েছে। আমি না বুঝে অনেক বড় ভুল করেছি। এখন থেকে মায়ের যত্ম নেব।’