জেলার নারীদের সেবা দিতে সোমবার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব উইমেন্স কর্নার এবং একই নামে অ্যাপ চালু করে নেত্রকোণা জেলা প্রশাসন।
সেই অ্যাপে আবেদন করে প্রথম দিনই জেলা প্রশাসনের গাড়িচালক পদে নিয়োগ পেয়েছেন শহরের সাতপাই এলাকার নাজনীন আরা শাওন, সুজেদা আক্তার এবং পূর্বধলা উপজেলার ইরফামা জাহান লিয়া।
জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব উইমেন্স কর্নার ও অ্যাপ উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক কাজী মো. আব্দুর রহমানের স্ত্রী জেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থা ও লেডিস ক্লাবের সভাপতি কাজী সুমান্না আখতার।
জেলা প্রশাসক জানান, আন্তর্জাতিক নারী দিবসে একই মঞ্চে জেলার নারীদের সব ধরনের সেবা নিশ্চিতে কর্নারটির পাশাপাশি একই নামে অ্যাপটি চালু করা হয়। উদ্বোধনের পরই অ্যাপটির মাধ্যমে আবেদন করা তিন নারীকে জেলা প্রশাসনের গাড়িচালক পদে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ দেয় জেলা প্রশাসন। এদের মধ্যে একজনের শরীরের বিভিন্ন অংশ আগুনে দগ্ধ হয়েছিল পাঁচ বছর আগে।
আরও পড়ুন: ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির শিকার নারীর ছবি ও পরিচয় প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা
নারী উদ্যোক্তা উন্নয়নে এক সপ্তাহের প্রশিক্ষণ দেবে বিসিক
অ্যাপের মাধ্যমে আবেদন করা ছয় শিক্ষার্থীকে শিক্ষাবৃত্তি এবং পাঁচ উদ্যোক্তা নারীকে ঋণ সহায়তা দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
কাজী মো. আব্দুর রহমান জানান, কর্নারটি পরিচালনায় এক লাখ টাকা দিয়ে তহবিল শুরু করা হয়েছে। সময়ে সময়ে তহবিল বাড়িয়ে কর্নারটি অ্যাপের মাধ্যমে জেলার সব নারীদেরকে সেবা দেয়া সম্ভব হবে।
এই অ্যাপটির মাধ্যমে ঋণ পাওয়া শহরের পুলিশ লাইন এলাকার জান্নাতু ন্নাহার বেগম জানান, আবেদন করেই ১৫ হাজার টাকা ঋণ পেয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমি এই টাকায় একটি সেলাই মেশিন কিনে টেইলারিংয়ের কাজ করব। অনেক দিনের ইচ্ছে ছিল, প্রশিক্ষণও ছিল। কিন্তু টাকার জন্য মেশিন কিনতে পারছিলাম না। আজ খুবই খুশি লাগছে। জেলা প্রশাসন কর্তৃক পরিচালিত এই অ্যাপটি আমাকে আলোর পথ দেখিয়েছে।’
নেত্রকোণা জেলা প্রশাসনে চাকরি পেয়ে দারুণ খুশি শাওন, সুজেদা ও লিয়া। এ জন্য তারা জেলা প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: নারীদেরকে আয় রোজগারের কাজে নিযুক্ত হওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
শাওন বলেন, ‘নেত্রকোণা জেলা প্রশাসনে আমরা তিনজনই প্রথম নারী হিসেবে গাড়িচালকের চাকরি পেয়েছি। আমরা টেকনিক্যাল ট্রেনিং কলেজ থেকে ড্রাইভিংয়ের প্রশিক্ষণ নিয়েছি। আমাদের ভাগ্য খুলে গেছে। আমাদের জন্য এর চেয়ে বেশি খুশির আর কিছুই নেই।’
লিয়া বলেন, ‘নারীরা সবই পারছে। পাইলট হচ্ছে। ভাবলাম গাড়ি চালাব। প্রশিক্ষণ নিলাম। আজ সহজে চাকরিও পেয়ে গেলাম। দারুণ ভালো লাগছে।’