নীলফামারীতে ঝড়ে তিনটি ইউনিয়নের দুই শতাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সেমাবার (১৫ মে) রাত ৯টার দিকে জেলা সদরের লক্ষ্মীচাপ, টুপামারী ও জলঢাকা উপজেলার শিমুলবাড়ি ইউনিয়নের ওপর দিয়ে এই ঝড় বয়ে যায়।
এ সময় উপড়ে ও ভেঙে পড়ে অসংখ্য গাছপালা। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মাঠে থাকা পাকা ধান, ভুট্টা ও কলা খেত।
এলাকাবাসী জানায়, সোমবার রাত ৯টার দিকে আকস্মিকভাবে উত্তর-পূর্ব দিক থেকে প্রবল বেগে ঝড় বয়ে আসে। প্রায় ১৫ মিনিট স্থায়ী ওই ঝড়ের সঙ্গে শিলাবৃষ্টিও ঝড়েছে।
এ সময় জেলা সদরের লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়নের আকাশকুড়ি, টুপামারী ইউনিয়নের নিত্যানন্দী এবং জলঢাকা উপজেলার শিমুলবাড়ি ইউনিয়নের উত্তর বেরুবন্দ গ্রামের দুই শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়।
এছাড়া ভেঙে ও উপড়ে পড়ে অসংখ্য গাছপালা। ক্ষতিগ্রস্ত হয় এলাকার কলা খেত। এদিকে শিলাবৃষ্টিতে ঝড়ে পড়ে মাঠে থাকা পাকা বোরো ধান।
মঙ্গলবার দুপুরে জেলা সদরের লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান জানান, ঝড়ে তার ইউনিয়নের আকাশকুড়ি গ্রামের প্রায় দেড় শতাধিক কাচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে।
উপড়ে ও ভেঙে পড়েছে বড়-ছোট গাছপালা। প্রবল বাতাসে এলাকার কলা ও ভুট্টা ক্ষেতের গাছ ভেঙে পড়েছে। পাশাশি শিলাবৃষ্টিতে বিচ্ছিন্নভাবে ঝড়ে পড়েছে মাঠের পাকা বোরো ধান।
আরও পড়ুন: ঘুর্ণিঝড়ের সময় জন্ম, নবজাতকের নাম রাখা হলো 'মোখা'
অপরদিকে জলঢাকা উপজেলার শিমুলবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হামিদুল ইসলাম জানান, সোমবার রাতের ঝড়ে তার ইউনিয়নের উত্তর বেরুবন্দ গ্রামে প্রায় ২৫টি কাচা ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিছিন্নভাবে ছোট-বড় গাছপালা ভেঙে ও উপড়ে পড়েছে।
এদিকে ঝড়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে ওই এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা। বিভিন্ন স্থাতে সঞ্চালন লাইনের তার ছিড়ে পড়লে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকে মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত।
বিদ্যুতের নেসকো নীলফামারী কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আলিমুল ইসলাম বলেন, ঝড়ে জেলা সদরের টুপামারী ইউনিয়নের রামগঞ্জ বাজার এলাকায় কয়েকটি স্থানে গাছ পড়ে বিদ্যুতের সরবরাহ লাইনের তার ছিঁড়ে গেছে। সেগুলো মেরামত কাজ চলছে। সন্ধ্যার মধ্যে শতভাগ মেরামত কাজ সম্পন্ন হবে।
সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রিয়াজুল ইসলাম বলেন, জেলা সদরের লক্ষ্মীচাপ ও টুপামারী ইউনিয়নের দুটি গ্রামের ওপর দিয়ে ওই ঝড় বয়ে যায়। এতে সামান্য কিছু ক্ষতি হয়েছে, ক্ষয়ক্ষতি নিরূপনের কাজ চলছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তরের উপপরিচালক ড. এসএম আবু বকর সাইফুল ইসলাম বলেন, ঝড়ে জেলা সদরের একটি গ্রামে দুই থেকে আড়াই বিঘা করে ধান ও কলা ক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে।
এ ছাড়া মাঠে থাকা অন্যান্য ফসলের তেমন কোন ক্ষতি হয়নি।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় মোখা: কক্সবাজারে ১০ হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত