নেত্রকোণায় ফুটবল খেলা দেখতে গিয়ে সংঘবদ্ধ হামলার শিকার হয়েছেন এক স্কুলশিক্ষার্থী। কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছে তাকে। ঘটনাটি ঘটেছে কেন্দুয়া উপজেলার মাসকা ইউনিয়নের পাচপীর কান্দাপাড়া গ্রামে।
আহত আরমান (১৫) কেন্দুয়ার সায়মা শাহজাহান একাডেমির সপ্তম শ্রেণির ছাত্র এবং স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল হকের ছেলে। এ ঘটনায় ওই শিক্ষার্থীর বাবা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) কেন্দুয়ার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এরআগে গত শুক্রবার(১ আগস্ট) বিকাল আনুমানিক ৫টার দিকে পাচপীর কান্দার ফুটবল মাঠে এ ঘটনা ঘটে। আহত শিক্ষার্থী আরমান বর্তমানে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কিছুদিন আগে একটি খুনের মামলায় জামিনে মুক্ত হয়ে বাড়ি ফেরেন আরমানের বাবা আব্দুল হক। সেই মামলাকে কেন্দ্র করে অভিযুক্তদের সঙ্গে বাদীর পারিবারিক বিরোধ চলছিল। ঘটনার দিন বিকালে আব্দুল হক, তার দুই ছেলে আরমান ও কবীর ফুটবল খেলা দেখতে যান। খেলায় কবীর অংশ নিলেও আরমান দর্শক সারিতে বসে খেলা দেখছিল।
অভিযোগে বলা হয়, গত শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে সানোয়ার হোসেন, আবুল মিয়া, রুমান, খোকা মিয়া, রইছ উদ্দিন ও রবিন মিয়াসহ আরও কয়েকজন সংঘবদ্ধভাবে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মাঠে হাজির হন। তারা প্রথমে আব্দুল হককে ঘেরাও করে হামলার চেষ্টা করে। তিনি দৌড়ে পালিয়ে বাড়িতে আশ্রয় নেন। পরে তার দুই ছেলেকে লক্ষ্য করে মাঠে ঢুকে পড়ে হামলাকারীরা।
আরও পড়ুন: খুলনায় ভ্যানচালককে কুপিয়ে হত্যা
সাক্ষীদের ভাষ্যমতে, হামলাকারীরা প্রথমে কবীরকে ঘিরে ধরলেও সে পালিয়ে যায়। পরে তারা আরমানকে ঘিরে ধরে। এসময় রইছ উদ্দিন ‘হক্যার পোলারে খুন কর’ বলে হুকুম দিলে সানোয়ার রামদা দিয়ে আরমানের মাথায় কোপ মারতে যায়। আরমান সামান্য কাত হয়ে পড়ায় কোপ তার ডান পায়ের হাঁটুর নিচে পড়ে এবং হাড়ভাঙা জখম হয়। এরপর রুমান বাম পায়ে কোপ দেন এবং খোকা মিয়া ও রবিন লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে দুই পায়ের হাঁটুর নিচে হাড়চূর্ণ করে দেয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। আত্মরক্ষায় হাত তুললে আরমানের আঙুলেও মারাত্মক জখম হয়।
স্থানীয়রা ও স্বজনরা রক্তাক্ত অবস্থায় আরমানকে উদ্ধার করে কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসক ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন এবং ইতোমধ্যে তার শরীরে দুই ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়েছে।