ফরিদপুরে গত ২৫ দিনের বন্যায় জেলার ৯ উপজেলার ২ হাজার হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে পদ্মা, মধুমতি ও আড়িয়াল খাঁর অববাহিকার কৃষকরা এই ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এ অবস্থায় ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে আর্থিক প্রণোদনার দাবি জানিয়েছে কৃষকরা।
ফরিদপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বর্ষা মৌসুমে চলমান বন্যায় ২৫ দিনে ২ হাজারের অধিক হেক্টর জমির ফসল তলিয়েছে । এতে আউশ ধান ও রোপ আমন এক হাজার সাত হেক্টর, সবজি ৭৬ হেক্টোর, মরিচ ৫০ হেক্টর, কলা বাগান ২৭ হেক্টরসহ অন্যান্য ফসল রয়েছে।
আরও পড়ুন: বন্যা কুড়িগ্রামে ২৭ হাজার হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি
ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম সাহা জানিয়েছেন, গত ৪-৫ দিন যাবত পদ্মার পানি কমতে শুরু করেছে। তবে এখনও জেলার নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জেলার সদর উপজেলার তিন ইউনিয়ন, চরভদ্রাসন উপজেলার তিন ইউপি, সদরপুর উপজেলার দুই ইউপি, মধুখালী উপজেলার দুই ইউপি, ভাঙ্গা উপজেলার দুই ইউপি, আলফাডাঙ্গা উপজেলার তিন ইউপির কৃষকের ফসলের ক্ষেত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ফরিদপুর সদর উপজেলার নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তাকুজ্জামান বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের আউশ ধান ও সবজি ক্ষেতে বেশি ক্ষতি হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগকে জানানো হয়েছে, তারা ক্ষয়-ক্ষতি নিরূপণ করছেন।’
এদিকে আড়িয়াল খাঁ ও মধুমতি নদীর পানিতে সদরপুর, ভাঙ্গা এবং মধুখালী, আলফাডাঙ্গার উপজেলার নদীর নিকটবর্তি এলাকার কৃষি জমি তলি মরিচ, আউশ ধান, সবজি ও বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি, নিম্নাঞ্চলের মানুষের দুর্দশা বাড়ছে
মধুখালী উপজেলার চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম জানান, এ উপজেলাতে মরিচ ও সবজির আবাদ বেশি হয়, মধুমতির পানিতে ক্ষেতগুলো নষ্ট হয়ে গেছে।
তিনি কৃষকরা যাতে আর্থিক ক্ষতির মুখে না পড়ে সেদিকে নজর দেয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান।
চলমান বন্যায় জেলার ফসলের ক্ষয়-ক্ষতির বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. হযরত আলী জানান, বন্যায় ফসলের ক্ষতি হয় এটি যেমন সত্য, ঠিক তেমনি পানি নেমে গেলে ফসলের আবাদও ভালো হয়। তবে এবারের ২৫ দিনে বন্যায় জেলার ২ হাজার হেক্টরের বেশি জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত
তিনি বলেন, পানি নেমে যাওয়ার পরেই কৃষকদের মাসকলাই বীজ প্রণোদনা হিসাবে দেয়া হবে।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার কৃষকদের ক্ষতি প্রসঙ্গে বলেন, সরকার কৃষকদের স্বল্প সুদে কৃষি প্রণোদনা দিচ্ছে, তার পরে অধিক ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তাদেরকে আমরা আর্থিক সহায়তা করব।