ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকার বস্তিতে বসবাসকারী শিক্ষার্থীদের জন্য ১ কোটি টাকা বৃত্তি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
মেয়র বলেন, ‘বস্তিতে বসবাসকারী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখার জন্য প্রতি বছর ডিএনসিসির পক্ষ থেকে ১ কোটি টাকা শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া হবে।’
বুধবার (২৯ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর গুলশানে ডিএনসিসির প্রধান কার্যালয় নগর ভবনের ষষ্ঠ তলায় সম্মেলনকক্ষে ইউএনডিপির সহযোগিতায় ডিএনসিসি ‘জলবায়ু উদ্বাস্তু নিয়ে ঢাকা উত্তরের চ্যালেঞ্জ ও সমাধান’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে মেয়র এ ঘোষণা দেন।
আরও পড়ুন: শহর গড়তে তরুণদের এগিয়ে আসার আহ্বান ডিএনসিসি মেয়রের
তিনি আরও বলেন, ‘আমি কয়েকদিন আগে কড়াইল বস্তি ও ভাসানটেক বস্তি পরিদর্শন করেছি। এই শহরের মেয়র হিসেবে আমি বলতে চাই পুনর্বাসন ব্যতীত কোনো বস্তি উচ্ছেদ হবে না। এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে।’
মেয়র বলেন, ‘আজকের এই অনুষ্ঠানে জলবায়ু উদ্বাস্তু অনেকে যেসব বিষয় তুলে ধরেছেন সেগুলোকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরতেই এই পলিসি ডায়ালগের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
মেয়র আরও বলেন, ‘বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকায় আসা জলবায়ু উদ্বাস্তুদের সমস্যার কথা জলবায়ু সম্মেলনে তুলে ধরব। আপনাদের বক্তব্য জলবায়ু সম্মেলনে বিশ্ব নেতা ও বিশ্বের মেয়রদের কাছে তুলে ধরব।’
তিনি বলেন, ‘বিশ্বনেতাদের কাছে যে বার্তা দিতে চাই, তা হলো আমাদের থাকার ব্যবস্থা, আমাদের শিক্ষার ব্যবস্থা, শুদ্ধ বায়ুর ব্যবস্থা, সামাজিক নিরাপত্তা নিয়ে স্বাস্থ্যকর পরিবেশের ব্যবস্থা করা।’
মেয়র বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জীবনমান নিশ্চিত করতে আমাদের সরকার চেষ্টা করছে, বিভিন্ন এনজিও আমাদের সঙ্গে কাজ করছে। কিন্তু আমাদেরও সীমাবদ্ধতা আছে।’
তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়েকে আহ্বান করব তারা যেন এগিয়ে আসে। যাদের জন্য আজকের লবনাক্ত পানির উচ্চতা বেড়ে গিয়ে উপকূলীয় এলাকার মানুষের জনজীবন বিপন্ন, যাদের জন্য উত্তরবঙ্গে পানির স্তর নিচে নেমে গিয়েছে সেখানে জনজীবন বিপন্ন তাদের দ্বায়িত্ব নিতে হবে।’
দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকায় আগত জলবায়ু উদ্বাস্তুদের দুর্দশার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক ফোরামের কাছে প্রশ্ন রাখব, ঘূর্ণিঝড়ে, জলোচ্ছাসে, বন্যায়, খরায় কিংবা নদীভাঙনে যারা ক্ষতিগ্রস্ত তাদের দ্বায়িত্ব কে নেবে? জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ক্ষয়ক্ষতি কীভাবে মোকাবিলা করা হবে সেই দায়িত্ব উন্নত বিশ্বকে নিতে হবে।’
মেয়র আরও বলেন, ‘আমরা দ্রুতই ঢাকায় আগত জলবায়ু উদ্বাস্তুদের একটি ডাটাবেজ তৈরি করব। আমি ইউএনডিপিকে (জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি) অনুরোধ করব এই বিষয়ে আমাদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করার জন্য। এখন আমাদের তথ্য দরকার কতজন লবণাক্ততার জন্য আসছে, কতজন নদীভাঙনের জন্য এসেছে, কতজন বন্যা ও খরার জন্য এসেছে। তাদের এই তথ্যগুলো উন্নত বিশ্বের কাছে তুলে ধরব।’
তিনি বলেন, ‘এখন সময় এসেছে কীভাবে কড়াইল বস্তি, ভাসানটেক বস্তি, সাততলা বস্তির উন্নয়ন করা যায়। এখানে এই বস্তিবাসীরাও কিন্তু কেউ জায়গা নিয়ে আবার কেউ ভাড়া নিয়ে আছে, তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী উন্নয়ন করতে হবে। যেখানে মাঠ থাকতে হবে, পার্ক থাকতে হবে, বিদ্যালয় থাকতে হবে।’
এসময় তিনি বলেন, ‘আমরা সম্প্রতি সাততলা বস্তিতে ফেয়ার হাইড্রেন্ট বসিয়েছি। যাতে আগুন লাগলে তারার নিজেরা আগুন নিভাতে পারে। এইরকম ফেয়ার হাইড্রেন্ট সাততলা বস্তিতে আরও পাঁচটি দরকার, কড়াইল বস্তিতে ১০টি দরকার, ভাসানটেক বস্তিতে ১০টি দরকার। পর্যায়ক্রমে সেগুলো করা হবে।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে বর্জ্য সম্পদে পরিণত হবে: ডিএনসিসি মেয়র
অনুমতি ছাড়া ডিএনসিসি এলাকায় কেউ গাছ কাটতে পারবে না: ডিএনসিসি মেয়র