বোয়ালমারী জর্জ একাডেমি ও সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিভাবদের অভিযোগ, সেশন চার্জ ছাড়া সরকারি বিনামূল্যের বই দিচ্ছে না ওই বিদ্যালয় দুটি। মহামারির সময়ে টিউশন ফি ছাড়া অন্যান্য ফি আদায়ের ওপর মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না।
আরও পড়ুন: ঝিনাইদহে টাকা ছাড়া মিলছে না বিনামূল্যের সরকারি বই
মহামারিকালে অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত অভিভাবকদের এসব ফি দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। অনেক শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন থমকে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক ইলিয়াস মোল্যা জানান, ৭০০ টাকা ছাড়া নতুন বই দিচ্ছেন না স্যাররা। যেসব ছাত্রী টাকা দিচ্ছে না তাদের বই দেয়া হচ্ছে না। ৭০০ টাকা দিলে রসিদ এবং একটি স্লিপ দেয়া হচ্ছে। স্লিপ দেখিয়ে বই নিতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে ‘আমার জীবনের গল্প’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বোয়ালমারী জর্জ একাডেমির সপ্তম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক জানান, সেশন চার্জ বাবদ ৮০০ টাকা দিয়ে রসিদ দেখিয়ে নতুন বই নিতে হচ্ছে।
তবে অভিযোগের ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক আব্দুল আজিজ বলেন, সবাইকেই বই দেয়া হচ্ছে। বই দেয়ার সাথে টাকার কোনো সম্পর্ক নেই।
এ ব্যাপারে বোয়ালমারী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এটিএম চুন্নু মিয়া চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেন, ‘বই দিতে টাকা নিচ্ছি না।’
আরও পড়ুন: ‘রেণু থেকে বঙ্গমাতা’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করলেন প্রধানমন্ত্রী
কিন্তু প্রতিষ্ঠান দুটি থেকে গত তিন দিনে বিনামূল্যের নতুন বই নিয়ে ফেরা অন্তত ১০ শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, টাকা পরিশোধের রসিদ দেখিয়ে তাদের সরকার প্রদত্ত বিনামূল্যের বই নিতে হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুর রহিম বলেন, ‘আমি বিষয়টি জানি না। তবে কোনো শিক্ষার্থী টাকা না দিতে পারলে তার বই আটকে রাখা ঠিক হবে না।’
গত ১৮ নভেম্বর টিউশন ফি ছাড়া অন্যান্য ফি আদায়ে নিষেধাজ্ঞা দেয় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। অধিদপ্তর থেকে জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে টিউশন ফি ছাড়া আর কোনো ফি নেয়া যাবে না। যদি অ্যাসাইনমেন্ট, টিফিন, পুনঃভর্তি, গ্রন্থাগার, বিজ্ঞানাগার, ম্যাগাজিন ও উন্নয়ন বাবদ কোনো ফি গ্রহণ করা হয় তা ফেরত দেয়া অথবা টিউশন ফির সাথে সমন্বয় করার নির্দেশনা দেয়া হয়। কিন্তু সে নির্দেশা মানছে না স্কুল দুটি।
বই আটকে শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে সেশন চার্জ আদায় বন্ধে সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন অভিভাবকরা।