আটক অন্যরা হচ্ছেন- টিপু সুলতান (২৮), লাল্টু মিয়া (৪০), আসাদ (৩৫) ও সুলতান মোড়ল (৫৫)। তারা প্রত্যেকেই কাস্টমসের বিভিন্ন দপ্তরে এনজিও কর্মী হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছেন। চুরি হওয়া স্বর্ণের বিষয়ে তাদের সিআইডি দপ্তরে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
কাস্টমস সূত্র জানায়, গত ৮ নভেম্বর পবিত্র ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী, সরকারি ছুটি এবং ঘূর্ণিঝড় বুলবুল চলাকালে বেনাপোল কাস্টম হাউসের শুল্ক গুদামের নিরাপদ ভোল্ট ভেঙে ১৭ কেজি স্বর্ণ চুরি করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় আট কোটি টাকা। কিন্তু দীর্ঘদিনেও লুট হওয়া স্বর্ণ উদ্ধারে সন্তোষজনক অগ্রগতি না হওয়ায় গোটা কাস্টমস বিভাগে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
কাস্টম হাউসের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. এমদাদুল হক বাদী হয়ে বেনাপোল পোর্ট থানায় গত ১১ নভেম্বর একটি মামলা দায়ের করেন।
চুরির ঘটনা জানার পরপরই ভোল্টের গোডাউনের দায়িত্বে থাকা সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা শাহিবুল সর্দারকে দায়িত্ব অবহেলার জন্য সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। চুরি হওয়া স্বর্ণ উদ্ধারে পুলিশ, পিবিআই, গোয়েন্দা, ডিবি, সিআইডি, এনএসআইসহ সকল সংস্থাকে তাৎক্ষণিকভাবে সম্পৃক্ত করা হয়। শেষ পর্যন্ত সিআইডিকে দায়িত্ব দেয়া হয়।
যুগ্ম কমিশনার শহীদুল ইসলামের নেতৃত্বে ৯ সদস্য বিশিষ্ট একটি বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে কাস্টম হাউস ও চেকপোস্টের সামগ্রিক নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। মূল্যবান গুদাম পাহারার জন্য পৃথক সিপাই ও আনসার পদস্থ করা হয়েছে। এ বিষয়ে অনুসন্ধানে জানা যায়, চুরি যাওয়া স্বর্ণের বেশির ভাগই ২০১৭ ও ২০১৮ সালে শুল্ক গুদামে জমা হয়। ওই সময়ে সাতজন সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা (এআরও) মূল্যবান গোডাউনের দায়িত্বে ছিলেন।
যশোর জেলা পুলিশের সিআইডির ওসি জাকির হোসেন জানান, কাস্টমসে লুট হওয়া স্বর্ণ উদ্ধারে এ পর্যন্ত পাঁচজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তদন্ত কাজ অব্যাহত আছে।
কাস্টমসের মধ্যে চার নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেদ করে কীভাবে ভোল্ট ভেঙে স্বর্ণ চুরি হলো তা নিয়ে রীতিমতো হৈচৈ পড়ে গেছে বেনাপোলে।
বেনাপোল কাস্টমস হাউসের যুগ্ম কমিশনার শহীদুল ইসলাম জানান, স্বর্ণ চুরির ঘটনায় সিআইডি মামলাটি তদন্ত করছে। তারা এ পর্যন্ত পাঁচজনকে আটক করেছে। তবে তদন্তে দীর্ঘসূত্রিতার কারণে কাস্টমসের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।