বেনাপোল কাস্টমস হাউসে রাজস্ব ফাঁকি রোধে ও সংস্কারমূলক আইন প্রণয়নের কারণে রাজস্ব আয় বেড়েছে।
এছাড়া নতুন আইন প্রণয়ন করায় চলতি অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৭৫ কোটি টাকার রাজস্ব আয় বেড়েছে।
গত অর্থবছরের তুলনায় রাজস্ব আদায়ের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ৮৮ শতাংশে।
আরও পড়ুন: যশোর-বেনাপোল মহাসড়কে দুই মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ, নিহত ১
কাস্টমস সূত্র জানায়, চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ হাজার ১৪৩ কোটি টাকা। রাজস্ব আদায় হয়েছে ৪ হাজার ২১৮ দশমিক ৭৪ কোটি টাকা এবং ৭৫ কোটি টাকার রাজস্ব আয় বেড়েছে।
কাস্টমস সূত্র আরও জানায়, এ পর্যন্ত মোট ১০টি আইটেমের পণ্য চালান থেকে ১ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি ধরা পড়েছে। রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগে ২ কোটি ২৫ লাখ টাকার জরিমানা আদায় করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
বেনাপোল বন্দর দিয়ে দুই দেশের মধ্যে আমদানি ও রপ্তানি বাণিজ্যে গতিশীলতা, দ্রুত পণ্য খালাস ও রাজস্ব ফাঁকি রোধে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার আব্দুল হাকিম।
বেনাপোল বন্দর ব্যবহারকারী সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস ও কাস্টমস কর্মকর্তাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করে রাজস্ব ফাঁকি রোধে কঠোর অবস্থানের কথা জানান বেনাপোল কাস্টমস হাউসের কমিশনার। তিনি বলেন, জিরো টলারেন্স নীতিতে চলছে বেনাপোল কাস্টমস হাউসের রাজস্ব আদায়ের কার্যক্রম।
কাস্টমস হাউসের যুগ্ম কমিশনার-১ মো. হাফিজুল ইসলাম বলেন, গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে শুধু ১০টি আইটেমের পণ্য চালান থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রাজস্ব আয় হয়েছিল ১ হাজার ২৫২ দশমিক ২১ কোটি টাকা। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১০টি আইটেমের পণ্য চালান থেকে রাজস্ব আয় হয়েছে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১ হাজার ৬৬৭ দশমিক ২৫ কোটি টাকা। ৪১৫ দশমিক ১৪ কোটি টাকার রাজস্ব আয় বেড়েছে।
হাফিজুল ইসলাম আরও বলেন, রাজস্ব ফাঁকির সঙ্গে জড়িত আমদানিকারক ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের কালো তালিকাভুক্ত করে তাদের পণ্য চালান শতভাগ কায়িক পরীক্ষা করা হচ্ছে। আর যাদের বিরুদ্ধে রাজস্ব ফাঁকির কোনো অভিযোগ নেই, তাদের পণ্য চালান কম্পিউটারের সিলেকশনে হলুদ হয়ে কোনো পরীক্ষা ছাড়াই খালাস দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, কেমিক্যাল জাতীয় পণ্য চালান কেমিক্যাল ল্যাবে পরীক্ষা করার পর ফলাফলের ভিত্তিতে শুল্কায়ন করে খালাস দেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বেনাপোলে ৬টি স্বর্ণের বার জব্দ, যুবক গ্রেপ্তার
বন্দরে ওয়েইং স্কেলের ওজনের ভিওিতে পণ্যের শুল্কায়নের বিষয়ে বলা হয়, বন্দরে স্কেলগুলোতে বর্তমানে তেমন কোনো জটিলতা নেই।
কঠোরভাবে তদারকি করা হচ্ছে ওয়েইং স্কেল এটিকে পুঁজি করে স্বার্থ হাসিলের কোনো সুযোগ নেই।
বেনাপোল কাস্টমস সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শামছুর রহমান বলেন, অতীতের তুলনায় ব্যাপক কড়াকড়ি করায় সুবিধাভোগী আমদানিকারকরা বেনাপোল বন্দর ছেড়ে চলে গেছেন অন্য বন্দরে। বেনাপোলের ন্যায় অন্যান্য বন্দরেও কড়াকড়ি করতে হবে।
বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার আব্দুল হাকিম বলেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্দেশে বেনাপেল বন্দর দিয়ে ট্রেনযোগে কন্টেইনার কার্গো চালু হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বেনাপোল দিয়ে প্রতিদিন যেখানে ৫০০-৬০০ ট্রাক পণ্য আমদানি হতো, বর্তমানে ডলার সংকটে আমদানি কমে প্রতিদিন ৩৫০ ট্রাকে গিয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, বেনাপোল বন্দর দিয়ে বছরে ৩০ হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য সম্পন্ন হয় ভারতের সঙ্গে। বেনাপোল বন্দরে রাজস্ব ফাঁকি রোধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে।
আব্দুল হাকিম বলেন, ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি অনিয়ম ধরা পড়েছে। তাদের রাজস্ব পরিশোধ করে ২০০ শতাংশ জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকবে ২ দিন