মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে বেনাপোল স্থলবন্দরে শুল্কফাঁকির উদ্দেশ্যে ‘আতা ফল’ আমদানির ঘোষণা দিয়ে ‘পার্সিমন’ ফলের চালান আটক করেছেন কাস্টমস কর্মকর্তারা।
বৃহস্পতিবার রাতে চালানটি ভারত থেকে আমদানি হয়ে বন্দরের ট্রান্সশিপমেন্ট ইয়ার্ডে রাখা হলে শুক্রবার বেনাপোল কাস্টমস হাউসের সদস্যরা বন্দরের ৩১ নম্বর ইয়ার্ড থেকে পণ্যের চালানটি জব্দ করে। পরে অভিযুক্ত আমদানিকারক ও সিঅ্যান্ডএফের বিরুদ্ধে কাস্টমস আইনে মামলা ও জরিমানা করা হয়।
আরও পড়ুন: বেনাপোল থেকে ২১টি ককটেল উদ্ধার
কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, প্রভা এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রতিষ্ঠান দুই হাজার ৭০০ কেজি ‘আতা ফল’ আমদানির ঘোষণা দিয়ে চালানের মধ্যে মূল্যবান ‘পার্সিমন’ ফল নিয়ে আসে। এতে ৮ লাখ টাকার শুল্ক ফাঁকির অপচেষ্টা করা হয়। মিথ্যা ঘোষণায় আমদানি পণ্যের চালানটি খালাসের দায়িত্বে ছিল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট আমেনা এন্টারপ্রাইজ।
বেনাপোল কাস্টমস হাউসের ডেপুটি কমিশনার রবিন্দ্র সিংহ জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কাস্টমসের ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে অভিযান চালিয়ে চালানটি জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত চলছে এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কাস্টমস আইনে মামলা করে রাজস্ব ও জরিমানার টাকা আদায় করা হয়।
অভিযুক্ত সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট আমেনা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী বলেন, লাইসেন্সটি ভাড়া নিয়ে বেনাপোলের এক ব্যক্তি কাজ করেন। এসব বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।
বন্দর সূত্রে জানা যায়, বাণিজ্যিক নিরাপত্তায় বন্দরে স্ক্যানিং মেশিন রয়েছে। কিন্তু সেটি প্রায় এক মাস ধরে অচল হয়ে পড়ে থাকায় বৈধ বাণিজ্যের ভেতর দিয়েই অনিয়মের সুযোগ পাচ্ছে অসাধু আমদানিকারকরা।
বন্দর সূত্রে আরও জানা যায়, এতে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে। আগেও বন্দরে বৈধ আমদানি পণ্যের সঙ্গে মিথ্যা ঘোষণায় শাড়ি, থ্রিপিস, ফেন্সিডিল ও গাঁজাসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য আটকের ঘটনা ঘটেছে।
বিশেষ করে, ফলের ট্রাক ইচ্ছা করেই রাতে দেশে ঢোকায় আমদানিকারকরা। এতে কাস্টমস ও বন্দরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুপস্থিতিতে গভীর রাত পর্যন্ত বন্দরে খালাসের সুযোগ পান।
জানা গেছে, বিগত চার মাসে কাস্টমস হাউসের রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা, সেখানে আদায় হয়েছে ১ হাজার ৭৫১ কোটি টাকা। রাজস্ব ঘাটতি রয়েছে ২৪০ কোটি টাকা।
প্রসঙ্গত, ‘পার্সিমন’ ফল জাপানের জাতীয় ফল হিসেবে স্বীকৃত হলেও এটি ভারতের মধ্যপ্রদেশ ও উত্তরপ্রদেশে উৎপাদন হয়। এটি হিন্দিতে তেন্ডু ফল নামে পরিচিত। অনেকটা টমেটো আকারের বৃত্তাকার বীজশূন্য ফলটি উচ্চ পুষ্টি সমৃদ্ধ। ফলটি মূল্যবান ও আমদানি শুল্ক ‘আতা ফলের’ চেয়ে চার গুণ বেশি।
আরও পড়ুন: বেনাপোল দিয়ে ভারত থেকে ফিরলেন আরও ৪২ বাংলাদেশি নারী-শিশু