বন্দর নগরী চট্টগ্রামে নির্মিত মেগা প্রকল্প ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের উদ্বোধন করা হবে।
যানজট নিরসনে মঙ্গলবার (১৩ নভেম্বর) লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত এই প্রকল্পের উদ্বোধন করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটি সহ চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) আরও দুটি প্রকল্প বাকলিয়া এক্সেস রোড ও ডিটি-বায়েজিদ সংযোগ সড়কের উদ্বোধন করবেন।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়েতে দুই বাসের সংঘর্ষ, আহত ৬
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় বসে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রকল্প তিনটি উদ্বোধন করবেন।
এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম মহানগরী থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত দুই ঘণ্টার সড়কপথ অতিক্রম করা যাবে মাত্র ৩০ মিনিটে।
নগরীর পতেঙ্গা প্রান্তে বঙ্গবন্ধু টানেলের পাশেই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে মূল শহর থেকে সেখানে গিয়ে সংযুক্ত হবে।
গত ২৮ অক্টোবর কর্ণফুলীর তলদেশ দিয়ে টানেল উদ্বোধনের পর ১১ নভেম্বর উদ্বোধন হয় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথ।
যাতায়াত ব্যবস্থায় দুই মেগা প্রকল্পের উদ্বোধনের পরই মঙ্গলবার আরেক মেগা প্রকল্প এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পটির কাজ ইতোমধ্যে ৯০ শতাংশ শেষ হয়েছে। এ ব্যাপারে গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে।
জাতীয় নির্বাচনের আগে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে খুলে দেওয়া চট্টগ্রামবাসীর জন্য সরকারের উপহার হিসেবে দেখছেন ক্ষমতাসীন দল। এটি চালু হলে মাত্র ২০ থেকে ৩০ মিনিটে চট্টগ্রাম শহর থেকে বিমানবন্দর পৌঁছানো যাবে।
তবে দিতে হবে নির্ধারিত হারে টোল। নগরীর আগ্রাবাদ বন্দর ইপিজেড এলাকার দীর্ঘ দিনের বঙ্গবন্ধু টানেল চালু হওয়ায় টানেলমুখী যানবাহনের চাপ সামলাতে এই এক্সপ্রেসওয়ে সহায়তা করবে বলে মনে করছে বাস্তবায়নকারী সংস্থা।
প্রকল্প পরিচালক চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘পতেঙ্গা টানেলের মুখ থেকে টাইগারপাস পর্যন্ত গাড়ি চলাচলের জন্য প্রস্তুত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। আপাতত এই অংশ খুলে দেওয়া হবে। তবে লালখান বাজার থেকে টাইগারপাস অংশের কাজ শেষ না হওয়ায় এটি এখনই খুলে দেওয়া হচ্ছে না। এক থেকে দুই মাসের মধ্যে বাকি সব কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে।’
আরও পড়ুন: রামপুরা-আমুলিয়া ডেমরা এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে ২৬১ মিলিয়ন ডলার দিচ্ছে এডিবি
চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র প্রয়াত এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর নামে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নামকরণের সিদ্ধান্ত নেয় চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)।
নগরীর যানজট নিরসনে ২০১৭ সালের জুলাই মাসে একনেক সভায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প অনুমোদন পায়। ব্যয় ধরা হয় ৩ হাজার ২৫০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ১৬ দশমিক ৫ মিটার চওড়া এই অবকাঠামোর প্রায় ৯০ শতাংশের বেশি কাজ শেষ হয়েছে।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) সূত্র জানায়, যৌথভাবে নির্মাণকাজ পায় বাংলাদেশি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ও চীনা প্রতিষ্ঠান রর্যঙ্কিন।
২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পিলার পাইলিং কাজ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।