লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় শশ্মানের মন্দিরে পূজা করতে বাধা দেওয়ায় দুই ইউপি চেয়ারম্যানকে তিন ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
পরে খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গিয়ে তাদের উদ্ধার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। শনিবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়নের বূড়া সাড়ডুবি এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় বাস-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে নিহত ৩
অবরুদ্ধ দুই ইউপি চেয়ারম্যান হলেন- ফকিরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলার রহমান খোকন ও গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৩৫ সালে ওই শশ্মান স্থাপন করা হয়। হঠাৎ করে গত কয়েক মাস ধরে শশ্মানের জমিটি নিজেদের দাবি করছেন রেজাউল হক, রেজাউনুল হক সুজন, মাইদুল হক মহল, মতিউর রহমান, সাজু ইসলাম, দুলালসহ আরও অনেকে।
এ নিয়ে মন্দির কমিটির সঙ্গে তাদের বিরোধ চলে আসছে। গত শুক্রবার সকালে অভিযুক্তরা ওই শশ্মানের ঘর ও মন্দিরের মূর্তি ভাঙচুর করে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে ২৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৩০/৪০ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন রতন চন্দ্র বর্মন।
এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। অভিযুক্তরা গড্ডিমারী ইউপি চেয়ারম্যান শ্যামলের আত্বীয় হওয়ায় হাতীবান্ধা থনার ওসি বিষয়টি তাকে জানান। ইউপি চেয়ারম্যান শ্যামল ফকির পাড়া ইউপি চেয়ারম্যান খোকনকে সঙ্গে নিয়ে শনিবার বিকালে ওই এলাকায় গিয়ে চাপ দিয়ে আপসের চেষ্টা করেন।
এ পর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে শ্যামল ও খোকন চেয়ারম্যান হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকে হুমকি-ধমকি ও গালাগালি করেন। পরে হিন্দু সম্প্রাদয়ের লোকজন তাদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গিয়ে তাদের উদ্ধার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।
আরও পড়ুন: নরসিংদীতে নৌকা ঘাটের ইজারা নিয়ে সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৩
এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা নিরু বালা বলেন, প্রথমে রেজাউল হক, রেজাউনুল হক সুজন, মাইদুল হক মহল, মতিউর রহমান, সাজু ইসলাম, দুলালসহ আরও অনেকে শ্মশানের মন্দির ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগ করেন। এরপর এবার শ্যামল ও খোকন চেয়ারম্যান আমাদের হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। আমাদের পূজা-অর্চনা করতে বাধা দেয়। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।
এ বিষয়ে বুড়া সাড়ডুবি সার্বজনীন মহাশ্মশানের মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক সবুজ বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান শ্যামল ও খোকন মন্দিরে এসে পূজারিকে হুমকি দেয়। আমাদের পূজা-অর্চনার সামগ্রী পা দিয়ে লাথি মেরে গুঁড়িয়ে দেয়। আমরা ভয়ে পূজা-অর্চনা করতে পারছি না। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।
এ বিষয়ে জানতে গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামলের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি কলটি রিসিভ করেননি।