মন্দির
মন্দির তৈরির কথা বলে কৃষকের বাড়ি ভাঙচুর, মারধরে আহত ৮
মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার হুদা শ্রীপুর গ্রামে শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) মন্দির নির্মাণের কথা বলে বাটুল বিশ্বাস নামে এক কৃষকের বাড়ি ভাঙচুর, জবর দখল ও ৪ নারীসহ অন্তত ৮ জনকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ সময় হামলাকারীরা ওই কৃষকের জমিতে থাকা টিনশেড বাড়িটির দরজা-জানালা ভেঙে বাইরে ফেলে দেয়। এদিকে ভাঙচুরে বাধা দিতে গেলে হামলাকারীরা ৪ নারীসহ অন্তত ৮ জনকে লাঠি, হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে আহত করে।
আরও পড়ুন: নাটোরে আ’লীগের দু'গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ৭, যুবলীগ নেতার বাড়ি ভাঙচুর
আহত ৮ জন হলেন- বাটুল বিশ্বাসের স্ত্রী শেফালী বিশ্বাস ও তার ভাইয়ের স্ত্রী প্রেমা রানী বিশ্বাস, ছেলে বিপ্লব বিশ্বাসের স্ত্রী রূপা সেন, প্রহ্লাদ বিশ্বাসের স্ত্রী শিখা বিশ্বাস, ছেলে বিপ্লব বিশ্বাস, পলাশ বিশ্বাস, মহিদ বিশ্বাস ও শান্তনু বিশ্বাস।
ভুক্তভোগী কৃষক বাটুল বিশ্বাসের ছেলে বিপ্লব বিশ্বাস জানান, দুই মাস আগে তার বাবা প্রতিবেশী কাকাতো ভাই দিপংকর বিশ্বাসের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকার বিনিময়ে ১৩ শতক জমি কিনে নেন। কিন্তু শুক্রবার সকালে একই গ্রামের প্রদীপ কুমার বিশ্বাস, গৌতম বিশ্বাস, বিধান বিশ্বাস, গৌতম বিশ্বাস, সুব্রত বিশ্বাসসহ একটি গ্রুপ শাবল, কুড়ালসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের আধা পাকা ঘরে হামলা চালায়।
তিনি আরও জানান, এ সময় তারা এই ভাঙচুরের ছবি তুলতে গেলে তাদের উপর হামলা করে দুর্বৃত্তরা। পরে তারা ৯৯৯ এ কল দিলে স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ি থেকে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কিন্তু ততক্ষণে ওই বাড়িটির দরজা-জানালা ও গ্রিল ভেঙে ফেলে দুর্বৃত্তরা।
এর আগে ওই বাড়ির সামনের জমিতে একটি পাটকাঠির বেড়া ও উপরে টিন দিয়ে বাঁশের তৈরি একটি মন্দির নির্মাণ করে গ্রামবাসী।
তিনি জানান, গ্রামে মন্দির হোক সেটা আমরাও চাই। কিন্তু আমাদের জমি দখল করে কেন মন্দির তৈরি করতে হবে? মাথার ঘাম পায়ে ফেলে আমরা তিল তিল করে অর্থ সংগ্রহ করে হালের গরু বিক্রি করে জমিটি কিনেছি। এখন গ্রামের কিছু ক্ষমতাশালী মানুষ জোর করে আমাদের জমি দখল করে সেখানে মন্দির ও ক্লাবঘর তৈরি করতে চায়। আমরা বাধা দিতে গেলে তারা আমাদের বাড়ির মা-বোনসহ অন্তত ৮ জনকে পিটিয়ে আহত করেছে। আমরা এর বিচার চাই।
আরও পড়ুন: বসতবাড়ি ভাঙচুর মামলায় বিআরডিবির চেয়ারম্যান ও ইউপি মেম্বার গ্রেপ্তার
এ প্রসঙ্গে ওই জমিতে সদ্য প্রতিষ্ঠিত মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার বিশ্বাস জানান, আমরা এই জমিতে মন্দির প্রতিষ্ঠার জন্য গ্রামের প্রতিটি বাড়ি থেকে ৭ লাখ টাকা এবং মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর ও স্থানীয় নাকোল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমুয়ুনুর রশিদ মুহিতের অনুদান মিলিয়ে মোট ৯ লাখ টাকা সংগ্রহ করেছি।
মন্দিরে পূজা করতে বাধা: দুই ইউপি চেয়ারম্যানকে অবরুদ্ধ
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় শশ্মানের মন্দিরে পূজা করতে বাধা দেওয়ায় দুই ইউপি চেয়ারম্যানকে তিন ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
পরে খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গিয়ে তাদের উদ্ধার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। শনিবার (৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়নের বূড়া সাড়ডুবি এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় বাস-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে নিহত ৩
অবরুদ্ধ দুই ইউপি চেয়ারম্যান হলেন- ফকিরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলার রহমান খোকন ও গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৩৫ সালে ওই শশ্মান স্থাপন করা হয়। হঠাৎ করে গত কয়েক মাস ধরে শশ্মানের জমিটি নিজেদের দাবি করছেন রেজাউল হক, রেজাউনুল হক সুজন, মাইদুল হক মহল, মতিউর রহমান, সাজু ইসলাম, দুলালসহ আরও অনেকে।
এ নিয়ে মন্দির কমিটির সঙ্গে তাদের বিরোধ চলে আসছে। গত শুক্রবার সকালে অভিযুক্তরা ওই শশ্মানের ঘর ও মন্দিরের মূর্তি ভাঙচুর করে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে ২৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৩০/৪০ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন রতন চন্দ্র বর্মন।
এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। অভিযুক্তরা গড্ডিমারী ইউপি চেয়ারম্যান শ্যামলের আত্বীয় হওয়ায় হাতীবান্ধা থনার ওসি বিষয়টি তাকে জানান। ইউপি চেয়ারম্যান শ্যামল ফকির পাড়া ইউপি চেয়ারম্যান খোকনকে সঙ্গে নিয়ে শনিবার বিকালে ওই এলাকায় গিয়ে চাপ দিয়ে আপসের চেষ্টা করেন।
এ পর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে শ্যামল ও খোকন চেয়ারম্যান হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকে হুমকি-ধমকি ও গালাগালি করেন। পরে হিন্দু সম্প্রাদয়ের লোকজন তাদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গিয়ে তাদের উদ্ধার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।
আরও পড়ুন: নরসিংদীতে নৌকা ঘাটের ইজারা নিয়ে সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৩
এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা নিরু বালা বলেন, প্রথমে রেজাউল হক, রেজাউনুল হক সুজন, মাইদুল হক মহল, মতিউর রহমান, সাজু ইসলাম, দুলালসহ আরও অনেকে শ্মশানের মন্দির ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগ করেন। এরপর এবার শ্যামল ও খোকন চেয়ারম্যান আমাদের হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। আমাদের পূজা-অর্চনা করতে বাধা দেয়। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।
এ বিষয়ে বুড়া সাড়ডুবি সার্বজনীন মহাশ্মশানের মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক সবুজ বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান শ্যামল ও খোকন মন্দিরে এসে পূজারিকে হুমকি দেয়। আমাদের পূজা-অর্চনার সামগ্রী পা দিয়ে লাথি মেরে গুঁড়িয়ে দেয়। আমরা ভয়ে পূজা-অর্চনা করতে পারছি না। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।
এ বিষয়ে জানতে গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামলের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি কলটি রিসিভ করেননি।
দেশে গণতন্ত্র না থাকায় মন্দিরে হামলা হয়: বরকত উল্লাহ বুলু
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেছেন, দেশে গণতন্ত্র না থাকার কারণে মন্দিরে হামলা হয়।
শনিবার (২১ অক্টোবর) দুপুর ১২টারর দিকে কুমিল্লায় হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের বিক্ষোভ মিছিলে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের হামলায় আহতদের দেখতে এসে এসব কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: সামনে শেখ হাসিনার অনুমতি নিয়ে নামাজ পড়তে হবে: বরকত উল্লাহ বুলু
তিনি আরও বলেন, এ ছাড়া তারা বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়, ভোটের জন্য তাদের কারো কাছে যেতে হয় না। তাই ভুল লোক নির্বাচিত হয়।
বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, তাদের কোনো জবাবদিহি নেই। মন্দিরে হামলা করে তারা (আওয়ামী লীগ), আর মামলা হয় বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে।
নগরীর ঠাকুরপাড়া রামকৃষ্ণ আশ্রমে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় ও আহতদের দেখতে আসে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল।
প্রতিনিধিদলে আরও ছিলেন- বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য বিজন কান্তি সরকার, কেন্দ্রীয় বিএনপির ত্রাণ ও পুনর্বাসনবিষয়ক সম্পাদক এবং কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমিন উর রশিদ ইয়াছিন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস, কুমিল্লা বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, কুমিল্লা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক উদবাতুল বারী আবু, সদস্যসচিব ইউসুফ মোল্লা টিপু, জেলা বিএনপির সদস্যসচিব জসিম উদ্দিন।এ ছাড়া সেখানে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতারা ছিলেন।
আরও পড়ুন: এক দফা আন্দোলন: বিএনপির ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর ইউনিটের গণমিছিল
সর্বজনীন পেনশন প্রকল্প জনগণের টাকা চুরির আরেকটি কৌশল: ফখরুল
ভারতের শিমলায় ভূমিধসে ২১ জনের মৃত্যু: মুখ্যমন্ত্রী সুখু
ভারতের হিমাচল প্রদেশের শিমলায় ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট ভূমিধসে সোমবার (১৪ আগস্ট) সকাল পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে শিমলার সামার হিল এলাকায় শিবমন্দির ধসে পড়ে ৯ জন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া মন্দিরের ধ্বংসাবশেষের নিচে বেশ কয়েকজন আটকে পড়েছেন বলে ভারতীয় গণমাধ্যম এএনআইয়ের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হতাহতের ঘটনায় হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখু শোক প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেন, সামার হিল এলাকায় ধসে পড়া মন্দিরের ধ্বংসাবশেষের নিচে আটকে পড়া লোকদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
এক টুইটে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন এখনও আটকে পড়া ব্যক্তিদের উদ্ধারের চেষ্টা করছে।’
রাজ্যের মন্ত্রী বিক্রমাদিত্য সিং ও মুখ্যমন্ত্রী সুখু ধসে পড়া শিবমন্দির পরিদর্শন করেছেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এখনো ২০-২৫ জন মানুষ ধ্বংসাবশেষের নিচে আটকে আছে। ভারী বৃষ্টির কারণে রাজ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ২১ জন মারা গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি মানুষকে বাড়িতে থাকার জন্য এবং নদী ও ভূমিধসপ্রবণ এলাকার কাছাকাছি না যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছি। বৃষ্টি থামার সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধারাভিযান শুরু হবে।’
আরও পড়ুন: ভারতের উত্তরাখণ্ডে ভূমিধসে ৫ তীর্থযাত্রী নিহত
এর আগে শিমলার পুলিশ সুপার (এসপি) সঞ্জীব কুমার গান্ধী বলেন, ‘ধসে পড়া মাটি মন্দিরের ওপর পড়ে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। আশেপাশের ভবনগুলোও হুমকিতে রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বেশ কিছু মানুষ আটকে পড়েছে। আমরা বিস্তারিত তথ্যের জন্য অপেক্ষা করছি।’
এসডিআরএফ, এনডিআরএফ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধারে অভিযান চালাতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী সুখু বলেন, ‘আমি মান্ডিতে আমার পূর্বনির্ধারিত অনুষ্ঠান বাতিল করেছি। ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা দিবসের কর্মসূচি যথারীতি চলবে, তবে আমাদের অগ্রাধিকার হলো (দুর্ঘটনাকবলিতদের) জীবন বাঁচানো।’
রাজ্যের মন্ত্রী বিক্রমাদিত্য সিং জানান, সামার হিলে মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ থেকে কয়েকজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
সিং বলেন, ‘এখনও ১০-১৫ জন ধ্বংসাবশেষের নিচে চাপা পড়ে আছে। আটকে পড়া মানুষদের নিরাপদে উদ্ধারের জন্য প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে রাজ্যের মান্ডি জেলায় ১২-১৫ জন মারা গেছে।
এর আগে, সাব ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট (এসডিএম) কান্দাঘাট সিদ্ধার্থ আচার্য জানান, রাজ্যের সোলান জেলার কান্দাঘাট মহকুমার জাদন গ্রামে আকস্মিক ভারী বৃষ্টিতে সাতজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় দুটি ঘর ও একটি গোয়ালঘর ভেসে গেছে।
মুখ্যমন্ত্রী সুখু নিহতের ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন এবং কর্তৃপক্ষকে সমস্ত সম্ভাব্য সাহায্য- সহায়তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ভারতে সেতু নির্মাণে ব্যবহৃত ক্রেন ধসে ১৬ শ্রমিক নিহত
সুখু পৃথক টুইটে বলেন, ‘সোলান জেলার কান্দাঘাট মহকুমার জাদন গ্রামে আকস্মিক ভারী বৃষ্টিতে সাতটি মূল্যবান প্রাণ ঝড়ে যাওয়ায় গভীর মর্মাহত। আমি শোকাহত পরিবারগুলোর প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি। এই কঠিন সময়ে আমরা আপনাদের পাশে আছি।’
তিনি আরও লিখেছেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সব ধরনের সাহায্য-সহায়তা করতে কর্তৃপক্ষকে আমরা নির্দেশ দিয়েছি।’
হিমাচল প্রদেশে গত ২৪ ঘণ্টা ধরে অবিরাম বর্ষণের ফলে ভূমিধস হয়েছে।
শিমলা-চণ্ডিগড় সড়কসহ বেশ কয়েকটি সড়ক প্লাবিত হওয়ায় যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে শিক্ষাসচিব ১৪ আগস্ট সব সরকারি-বেসরকারি স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার প্রজ্ঞাপন জারি করেছেন।
মুখ্যসচিব ও স্বরাষ্ট্র সচিবের পাশাপাশি সমস্ত জেলা কালেক্টরকে দুর্যোগ পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, প্রশাসনিক কর্মীদের সতর্ক থাকতে হবে এবং রাস্তা, বিদ্যুৎ ও পানির সুষ্ঠু ব্যবস্থা বজায় রাখতে হবে।
আরও পড়ুন: ভারতে ভূমিধসে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৭
সামান্থার জন্য মন্দির বানালেন এক ভক্ত!
দক্ষিণী অভিনেত্রী সামান্থা রুথ প্রভুর জন্মদিন উপলক্ষে তার জন্য মন্দির বানালেন তার ভক্ত। ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের বাপাতলা জেলার আলাপাদু গ্রামের বাসিন্দা তেনালি সন্দীপ এই মন্দিরটি বানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের ওয়েবফিল্মে শ্রীলেখা মিত্র
সামান্থার রুথ প্রভুর জন্মদিন উপলক্ষে শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) মন্দিরে সামান্থার একটি মূর্তি উন্মোচন করেন তিনি। এছাড়া ৩৬ বছর বয়সী এই অভিনেত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে একটি কেকও কাটেন তিনি।
দেখা যায়, সামান্থার মূর্তিটিতে সবুজ ব্লাউজের সঙ্গে লাল রঙের শাড়ি পড়ানো হয়েছে।
ভারতে মন্দিরে কূপ ঢেকে রাখার কাঠামো ভেঙে নিহত ৩৫
দেবতা রামের জন্য একটি উৎসবে প্রার্থনা করার সময় একটি কূপের ওপর ঢেকে রাখার কাঠামো ভেঙে পড়ার পরে সেনাবাহিনীর সদস্য ও অন্যান্যরা ৩৫টি লাশ উদ্ধার করেছে।
শুক্রবার রাজ্য সরকারের এক আধিকারিক একথা জানিয়েছেন।
প্রায় ১৪০ জন উদ্ধারকর্মী দড়ি ও মই ব্যবহার করে কূপ থেকে পানি বের করে লাশগুলো উদ্ধার করে। কূপের সংকীর্ণ পথ ও ধ্বংসাবশেষ কাজটিকে কঠিন করে তুলেছিল।
পুলিশ কমিশনার মকরন্দ দেওস্কর জানান, মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের ইন্দোরে মন্দির কমপ্লেক্সের একটি কূপে বৃহস্পতিবার কাঠামো ধসে পড়ে এবং ধ্বংসস্তূপে ঢেকে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মন্দিরে আগুন আচার এবং হিন্দু উৎসব উদযাপনের জন্য ভক্তদের বড় আকারের ভিড় ছিল।
আরও পড়ুন: আদানি ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ ভারতের সুপ্রিম কোর্টের
রাজ্যের শীর্ষ নির্বাচিত কর্মকর্তা শিবরাজ সিং চৌহান বলেন, কাঠামোটি বিশাল জনতার ওজন সামলাতে না পেরে দৃশ্যত ধসে পড়ে। তিনি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
শুক্রবার জেলা প্রশাসক ইলিয়ারাজা টি. বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত ৩৫টি লাশ উদ্ধার করেছি এবং উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’ বৃহস্পতিবার রাতে সেনাবাহিনীর একটি উদ্ধারকারী দল অভিযানে যোগ দেয়।
চৌহান বলেন, ১৮ জনকে উদ্ধার করে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মন্দির কর্তৃপক্ষ কয়েক বছর আগে কূপটি ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছিল এবং এটি একটি কাঠামো দিয়ে ঢেকে দিয়েছিল।
আরও পড়ুন: ভারতে বিবিসি’র কার্যালয়ে তৃতীয় দিনের মতো অভিযান, কর ফাঁকির অভিযোগ
ঠাকুরগাঁওয়ে মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুর: সুষ্ঠু তদন্তের দাবি ফখরুলের
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার ১২টি হিন্দু মন্দিরে ১৪টি প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে অবিলম্বে দোষীদের খুঁজে বের করে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘এই ঘটনাটি শুধু আপত্তিকরই নয়, রহস্যজনক, পূর্বপরিকল্পিত এবং লজ্জাজনকও বটে। এর নিন্দা করার উপযুক্ত শব্দ নেই।’
বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে বিএনপি নেতা বলেন, যারা হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুর করে সাম্প্রদায়িক ও সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে চায় তারা নরকের পোকা।
তিনি বলেন, ‘বালিডাঙ্গীর ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করতে নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া উচিত। বালিয়াডাঙ্গীতে মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুরকারী অপরাধীদের নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে চিহ্নিত করে অবিলম্বে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।’
একই সঙ্গে এ ঘটনার সঙ্গে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি যাতে হয়রানির শিকার না হয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান ফখরুল।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে ১২ মন্দিরের ১৪টি প্রতিমা ভাঙচুরের অভিযোগ
ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের ১২টি হিন্দু মন্দিরের ১৪টি প্রতিমা ভাঙচুর করেছে অজ্ঞাতনামারা।
ফখরুল বলেন, সামাজিক সম্প্রীতির পরিপন্থী এই নৃশংস ঘটনার পর বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রাস্তার ধারের মন্দির ও প্রতিমা বেশি ভাঙচুর করা হয়েছে। পুলিশ সদস্যরা সাধারণত রাতে এই এলাকায় টহল দেয়। কিন্তু সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনুপস্থিতিও রহস্যজনক। সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করে যে দুর্বৃত্তরা তাদের (পুলিশের) অবহেলার কারণেই এত বড় মন্দির ও প্রতিমা সহজেই ভাঙচুর করতে পেরেছে। এক্ষেত্রে সরকার তার দায় এড়াতে পারে না।’
তিনি আরও বলেন, দেশে চলমান দুঃশাসন একটি অস্বাভাবিক ও নিরাপত্তাহীন পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে যেখানে প্রকৃত অপরাধীরা ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কারণে অপরাধ করে পালিয়ে যায়।
ফখরুল বলেন, ‘ফলে, অপরাধীরা দ্বিগুণ উদ্যমে নতুন অপরাধ করে চলেছে। দেশ এখন অপরাধীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হওয়ায় মানুষ এখন এখানে অত্যন্ত নিরাপত্তাহীন।
দেশে অনিরাপদ পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি সামাজিক ও ধর্মীয় কর্মকাণ্ড চালাতে হয় বলে দুঃখ প্রকাশ করেন ফখরুল।
তিনি বলেন, অতীতেও মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডাসহ উপাসনালয়ে হামলা হয়েছে, কিন্তু সরকার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ বিচারের মাধ্যমে দোষীদের বিচার করতে পারেনি।
বিএনপি নেতা অভিযোগ করেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুর এবং তাদের জমি-জমা, বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখলের আগের ঘটনায় ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, ‘বালিয়াডাঙ্গীতে ক্ষমতাসীন দলের সাংসদ, তার পরিবারের সদস্যরা এবং তার অনুগত লোকজন শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের জমিই দখল করেনি, হামলা ও ভয়ভীতিও দেখিয়েছে। তারপরও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।’
ফখরুল অবিলম্বে সরকারি খরচে ভাঙচুর করা মন্দিরের পুনর্নির্মাণ ও প্রয়োজনীয় সংস্কারের দাবি জানান।
আরও পড়ুন: তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা: ফখরুল
'ফ্যাসিস্ট' সরকার গণতন্ত্রের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনকে বানচাল করতে চাইছে: ফখরুল
মহাসমারোহে শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু
সারাদেশের সব মন্দিরে দেবীর বোধনের মধ্য দিয়ে শনিবার হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা শুরু হয়েছে।
আগামী ৫ অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে পাঁচ দিনব্যাপী এ উৎসব।
রবিবার (২ অক্টোবর) মহাসপ্তমী পূজা অনুষ্ঠিত হবে এবং সোমবার (৩ অক্টোবর) মহাষ্টমী পূজা, কুমারী পূজা ও সন্ধি পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) মহানবমী পূজা এবং বুধবার (৫ অক্টোবর) বিজয়া দশমী অনুষ্ঠিত হবে।
এর আগে গত ২৫ সেপ্টেম্বর দেবী দুর্গার আগমন উপলক্ষে মহালয়া উদযাপিত হয়।
ঢাকা মহানগরীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির, রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠ, কলাবাগান, বনানী, শাখারি বাজার ও রমনা কালী মন্দিরে প্রধান পূজা মণ্ডপ স্থাপন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: শনিবার মহা ষষ্ঠীর মধ্যদিয়ে শুরু হচ্ছে শারদীয় দুর্গাপূজা
এ বছর রাজধানীতে ২৪১টিসহ সারাদেশে ৩২ হাজার ১৬৮টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
পুলিশ জানায়, উৎসব নির্বিঘ্নে ও শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপনের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
পুজা মণ্ডপে পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ বাহিনী আনসার, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন এবং অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার অতিরিক্ত সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।
এ উপলক্ষে দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যদের শুভেচ্ছা জানিয়ে পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাণীতে রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, বাঙালি হিন্দুদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা।
তিনি বলেন, ‘প্রাচীনকাল থেকেই দেশের হিন্দু সম্প্রদায় বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পূজা উদযাপন করে আসছে। দুর্গাপূজা শুধু একটি ধর্মীয় উৎসবই নয়, এটি একটি সামাজিক উৎসবও।’
রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বাঙালির চিরন্তন ঐতিহ্য। আমাদের সামগ্রিক অগ্রগতিতে এই ঐতিহ্যকে একসঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, দুর্গাপূজা শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসব নয়, এটি এখন একটি সার্বজনীন উৎসব।
তিনি বলেন, ‘অশুভ শক্তির বিনাশ এবং সত্য ও সুন্দরের আরাধনা শারদীয়া দুর্গোৎসবের মূল উদ্দেশ্য। দুর্গাপূজা উপলক্ষে আমি দেশের হিন্দুসহ সকল নাগরিকের শান্তি, কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা করছি।’
আরও পড়ুন: দুর্গাপূজা: বাগেরহাটে ৬৪২টি মন্দিরে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি
দুর্গাপূজা: মৌলভীবাজারে মণ্ডপের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি
দুর্গাপূজা: বাগেরহাটে ৬৪২টি মন্দিরে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি
বাগেরহাটে শারদীয় দুর্গোৎসবের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে। জেলায় এবছর ৬৪২টি মন্দিরে দুর্গোৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। পূজামণ্ডপগুলোতে কারিগরদের নিপুণ হাতের ছোঁয়া, আর রং তুলিতে প্রতিমা সাজানো হচ্ছে। মাটির প্রতিমায় জীবন্ত রূপ দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা শিল্পীরা।
অন্যদিকে, এসব মণ্ডপে নিরাপত্তা ও শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা উদযাপনের জন্য প্রতিবছরের মতো এবারও পুলিশ, র্যাব ও আনসার সদস্যরা কাজ করবেন।
মঙ্গলবার দুপুরে বাগেরহাট জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা, নিরাত্তা ব্যবস্থা এবং পূজা চলাকালীন আযান ও নামাজের সময়সূচি নির্ধারণ সংক্রান্ত এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান। সভায় জেলার বিভিন্ন মসজিদের ইমাম,পূজা উদযাপন পরিষদের কর্মকর্তাসহ জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, পূজার এই পাঁচদিন জেলার সব মসজিদে একই সময়ে আযান ও নামাজ হবে।
আরও পড়ুন: দুর্গা পূজায় দুর্ভেদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে পুলিশ: আইজিপি
বাগেরহাট শ্রীশ্রী হরিসভা মন্দির দুর্গাপূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি লিটন সরকার জানান,এবারের শারদীয় দুর্গোৎসব ঘিরে এক ধরনের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এপর্যন্ত প্রশাসনের সবগুলো সভাতেই দুর্গোৎসবকে ঘিরে শঙ্কা প্রকাশ করেছে।
তিনি বলেন, দুর্গোৎসব শুধু হিন্দুদের নয়, বাঙালীর সংস্কৃতিরও অংশ।
আর তাই দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করার জন্য সরকারের কাছে সার্বিক সহযোগীতার দাবি জানান তিনি।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার কেএম আরিফুল হক জানান, শারদীয় দুর্গোৎসব শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর করতে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে দুই স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রতিটি পূজামণ্ডপে সিসি ক্যামেরার পাশাপাশি নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবে। স্টাটিক ডিউটির পাশাপাশি, পর্যাপ্ত মোবাইল টিম রাখা হবে।
তিনি জানান, দুর্গোৎসব শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে। এজন্য জেলা পুলিশ পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা রেখেছে। শঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
পুলিশ সুপার আরও জানান, এরইমধ্যে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
আর কদিন বাদে সনাতনধর্মালম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা শরৎকালের কাশফুলের সৌন্দর্য জানান দিচ্ছে দেবী দুর্গা স্বর্গ থেকে মর্ত্যলোকে আসছেন।
মহামারি করোনার কারণে গেল দুই বছর দুর্গাপূজায় উৎসবের কিছুটা কমতি ছিল। এবছর করোনার প্রভাব কমে আসায় আড়ম্বরসহকারে পূজার আয়োজন চলছে। দর্শনার্থী আর ভক্তদের ঢল নামবে এমন আশায় মণ্ডপগুলো সাজানো হচ্ছে নানা ভাবে। ভক্তরাও অপেক্ষায় রয়েছে দেবী দুর্গাকে বরণ করতে।
এই মুহূর্তে বিভিন্ন পূজামণ্ডপে দেবদেবীর প্রতিমায় রঙের কাজ চলছে। প্রতিমা শিল্পীরা অপরূপ সাজে প্রতিমা সাজাচ্ছেন। এই সঙ্গে পূজামণ্ডপগুলোতে সাজসজ্জা আর আলোক সজ্জার কাজ চলছে।
বাগেরহাট শহরের শালতলা শ্রীশ্রী হরিসভা মন্দিরে গিয়ে দেখা গেছে,শিল্পীরা রং তুলিতে দেবদেবীর প্রতিমা সাজাচ্ছেন। সেই সঙ্গে চলছে সাজসজ্জা আর লাইটিংয়ের কাজ। এই অঞ্চলের মধ্যে এই প্রথম শতবছরের প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী হরিসভা মন্দিরের থিমের ওপর ভিত্তি করে সাজসজ্জা করা হচ্ছে। ডেকরেশনে অনটাইম প্লেট ও বাটি ও বাঁশের তৈরি কুলার ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া নানা ধরণের উপকরণ ব্যবহার করে সাজসজ্জায় নানা বৈচিত্র আনা হয়েছে। এই পূজামন্দিরে দূর-দূরান্ত থেকে কয়েক হাজার দর্শনার্থী ও ভক্তদের ঢল নামবে বলে আয়োজকরা আশা করছেন।
উল্লেখ্য, ১ অক্টোবর মহাষষ্ঠী পূজার মধ্যে দিয়ে দেবী দুর্গা হাতিতে (গজে) চড়ে স্বর্গ থেকে মর্ত্যলোকে আসবেন। মহাসপ্তমী,মহাঅষ্টমী,মহানবমী এবং ৫ অক্টোবর দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে দুর্গাপূজা।
আরও পড়ুন: দুর্গা পূজায় দুর্ভেদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে পুলিশ: আইজিপি
দুর্গাপূজা: এমন উৎসব যা বাংলাদেশকে এক করে
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে মন্দির ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে রাতের অন্ধকারে মন্দির ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার সৈয়দা জান্নাত আরা। এছাড়াও ঘটনা তদন্তে ঘটনাস্থলে জনপ্রতিনিধিসহ পুলিশের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা সেখানে উপস্থিত রয়েছেন। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে ১টার দিকে উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের নাগডাঙ্গা গ্রামে স্থানীয় রতিকান্ত রায়ের বাড়ি সংলগ্ন মন্দিরে এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে জমি সংক্রান্ত বিরোধে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে এ ধরনের ঘটনা ঘটানো হতে পারে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রতিকান্ত রায়ের দাদা শিরিষ চন্দ্র রায় প্রায় ৩৫ বছর আগে লালমনিরহাট জেলার মোগলহাট এলাকার আব্দুস ছামাদ ঘাটিয়ালের কাছে তিন দাগে ৬০ শতক জমি বিক্রি করেন। সেই জমির মধ্যে দুই শতক জায়গায় মন্দিরটিও ছিল। ছামাদ ঘাটিয়ালের এক স্ত্রী ও তার দুই ছেলে দীর্ঘদিন ধরে সেখানেই বসবাস করে আসছিল। এরমধ্যে মন্দিরের দুই শতক জায়গার পরিবর্তে অন্য জায়গায় দুই শতক জমি রেওয়াজ বদল করে লিখে দেয়ার জন্য চাপ দিয়ে আসছিল ছামাদের দুই ছেলে। এনিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সালিশ বৈঠকে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। সর্বশেষ গত ৬ মে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, মেম্বার ও ইউপি চেয়ারম্যান দুই শতক জায়গা মন্দির ও সড়কের জন্য ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত সালিশ বৈঠককারীরা চাপিয়ে দেন ছামাদের দুই ছেলের ওপর।
এরপর সোমবার (৮আগস্ট) দুপুরে মন্দির সংলগ্ন জায়গায় অবস্থিত বাঁশ কাটতে যায় ছামাদের বড় ছেলে শহিদুল। সে একটি বাঁশ কাটার পর রতিকান্ত ও তার ভাই শিবচরণ বাঁশ কাটতে বাঁধা দেয়। এনিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে রাতেই মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় এলাকার উভয় সম্প্রদায়ের লোক হতবাক। যারাই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকুক না কেন ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনের দাবি স্থানীয়দের।
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর, আটক ৩
মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের সদস্য মহাদেব ওরফে পঁচা রায়ের ছেলে রতিকান্ত রায় জানান, পারিবারিকভাবে আমার বাপ-দাদারা মন্দিরে পূজা-অর্চনা করে আসছে। মাঝরাতের দিকে প্রতিবেশীদের ডাকে ঘুম থেকে উঠে দেখি মন্দিরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। নেভানোর আগে মন্দিরের ৪০ভাগ আগুনে পুড়ে গেছে। কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে আমি দেখতে পাইনি। আমি এর বিচার চাই।
এদিকে অভিযোগের তীর যাদের দিকে তাদের মধ্যে ছামাদ ঘাটিয়ালের ছোট ছেলে দিনমজুর আজিমুল জানান, ১৯৮৮ সালে তার বাবা ছামাদ ঘাটিয়াল তার মাসহ দুই ভাইকে তিন দাগে ৬০শতক জমি কিনে এখানে বাড়ি করে দেন। ছামাদ ঘাটিয়াল আরেক স্ত্রীসহ লালমনিরহাট জেলার মোগলহাটে বসবাস করেন। এখানে তিন দাগে প্রাপ্ত ৩৫ শতক, ১১শতক ও ১৪ শতক দাগের মধ্যে ১৪ শতক জমির মধ্যে মন্দিরটি পড়ে যায়। এনিয়ে রতিকান্ত ও তার ভাই শিবচরণের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে এই পরিবারের দ্বন্ধ চলে আসছিল। এর আগে ২০০৭ সালে তাকে, তার মা ও স্থানীয় চার হিন্দু পরিবারের সদস্যদের নামে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছিল। গত সোমবার (৮আগস্ট) তার বড় ভাই শহিদুল মন্দিরের পিছন থেকে একটি বাঁশ কাটতে যায়। এনিয়ে শহিদুলের সঙ্গে রতিকান্ত ও শিবচরণের মধ্যে ঝগড়া হয়। তারপর রাতেই মন্দিরে আগুনের ঘটনা ঘটে। মন্দিরে আগুন দিলে আমাদের কি লাভ। আমাদেরকে ফাঁসানোর জন্য এটা করা হয়েছে। আমরা এখানে প্রায় ৩০টি হিন্দু পরিবারের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে মিলেমিশে বসবাস করে আসছি। আমরা এই কাজ কেন করতে যাবো।
ফুলবাড়ী নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রতন রায় বলেন, প্রতিমা ভাংচুর ও মন্দিরে আগুন ধরিয়ে দেয়ার ঘটনা তাদের জন্য হুমকি। দুর্বৃত্তরা হিন্দুদের মাঝে আতংক সৃষ্টি করতে এ ঘটনা ঘটাতে পারে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে। সুষ্ঠু বিচার না পেলে প্রয়োজনে আন্দোলনের পথ বেচে নেয়া হবে।
বিষয়টি নিয়ে ফুলবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, আমরা ১০টার দিকে খবর পেয়ে সকাল সাড়ে ১০টায় ঘটনাস্থলে পৌঁছাই। এখানে সকলের সঙ্গে কথা বলে অনুমান করা হচ্ছে রাত ১২টা থেকে ১টার মধ্যে দুর্বৃত্তরা মন্দিরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়েছে। এখানে এসে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের বিষয়টিও উঠে এসেছে। আমরা উভয়পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। এ ঘটনায় থানায় মামলা দেয়ার জন্য ক্ষতিগ্রস্তদেরকে জানিয়েছি। তারা নিজেদের মধ্যে বুঝে পরবর্তীতে মামলা করবে বলে জানিয়েছে। মামলা হলে তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা জেনে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে এখন পর্যন্ত তা জানা যায়নি।
পুলিশ সুপার সৈয়দা জান্নাত আরা জানান, আমি দুপুরে ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেছি। সকল পক্ষের সঙ্গে কথাও বলেছি। এ ব্যাপারে মামলা করার নির্দেশ দিয়েছি। মামলা হলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন: পটুয়াখালীতে মন্দিরে কোরআন রাখার অভিযোগে গ্রেপ্তার ১
নোয়াখালীতে মন্দিরে হামলা ও লুঠপাটের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৪