সরবরাহের অভাবে মাগুরা জেলায় করোনা টিকাদান কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।
সোমবার মাগুরা জেলা সিভিল সার্জন ডা. শহীদুল্লাহ দেয়ান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, করোনা টিকার মজুত শেষ হওয়ায় রবিবার জেলায় টিকাদান কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। টিকা নিতে এসে অনেকেই ফিরে যাচ্ছেন। দ্বিতীয় ডোজের টিকা না পেয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন অনেকেই। এ কারণে দ্বিতীয় দফায় টিকা পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন মানুষ।
আরও পড়ুন: চীন থেকে দেড় কোটি টিকা ক্রয় করবে সরকার
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলায় টিকা নিতে নিবন্ধন করেছেন ৭৯ হাজার ৯০৫ জন। গত ২৪ জানুয়ারি থেকে মাগুরা ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতাল, শ্রীপুর, মহম্মদপুর ও শালিখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ ৬টি বুথে একযোগে করোনার টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশকে আরও ৬ লাখ টিকা উপহার দেবে চীন
টিকার মজুত শেষ হয়ে যাওয়ায় ৩০ মে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনায় টিকাদান কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়। ওই সময় পর্যন্ত জেলায় প্রথম ডোজের টিকা নিয়েছেন ৪৮ হাজার ৪৪৫ জন। আর ২৮ হাজার ৫৯৬ জন নিয়েছেন দ্বিতীয় ডোজের টিকা। এরপরই টিকার মজুত শেষ হয়ে যায়। সেই হিসাবে নিবন্ধিত ১ হাজার ৬৫৫ জন দ্বিতীয় ডোজের টিকা নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন।
আরও পড়ুন: রাশিয়ার টিকা 'স্পুটনিক ভি’ ব্যবহারের অনুমোদন দিল বাংলাদেশ
সোমবার মাগুরা সদর হাসপাতালের করোনা টিকাদান বুথে গিয়ে দেখা যায়, ফটকে বিজ্ঞপ্তি ঝুলছে। তাতে লেখা আছে, ‘কোভিড-১৯ টিকাদান কার্যক্রম আপাতত সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে। ধন্যবাদান্তে সিভিল সার্জন, মাগুরা।’
টিকা নিতে আসা বেরইল গ্রামের তাপস বিশ্বাস (৫৪) বলেন, ‘রবিবার মোবাইলফোনে টিকা নেয়ার তারিখ জানিয়ে মেসেজ দিল। সেই বার্তা পেয়ে সোমবার হাসপাতালে এসে দেখি টিকা দেওয়া বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কবে টিকা পাব, তাও কেউ খুলে বলছে না।’
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান বলেন, গবেষণার জন্য সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) ৩৫০ জনের রক্ত নিয়েছে। তাদের জন্য টিকার ৩৫টি ভায়াল (শিশি) রাখা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে দুই বছর পর্যন্ত রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করা হবে।
সিভিল সার্জন শহীদুল্লাহ দেয়ান বলেন, জেলায় ৭৮ হাজার ২৫০ ভায়াল করোনা টিকা বরাদ্দ পাওয়া গিয়েছিল; তা শেষ হয়ে গেছে। এ কারণে রবিবার থেকে জেলায় করোনা টিকা দেয়ার কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই আবার টিকাদান কার্যক্রম শুরু করা হবে।
তবে, কবে নাগাদ তা আসবে তিনি জানাতে পারেননি।
এদিকে, মাগুরায় রবিবার পর্যন্ত ৭ হাজার ৮৮২ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। ১ হাজার ২৫৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ১৫.৯ শতাংশ। তাদের মধ্যে ১ হাজার ২৩০ জন সুস্থ হয়ে ছাড়পত্র পেয়েছেন। আর করোনায় সংক্রমিত হয়ে মারা গেছেন ২৪ জন। সংক্রমিত মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৯১।